Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সুশীলের মা || Saswati Das

সুশীলের মা || Saswati Das

সুশীলের মা

সুশীল বিয়ে করার পর বউ নিয়ে কলকাতায়
ফ্লাটে চলে এলো। বৃদ্ধা মা শ্যামনগরের বাড়িতে একাই থাকে। খুব একটা মায়ের খোঁজ খবর ও নেয় না। বৃদ্ধার কোনোক্রমে দিন কাটে প্রতিবেশীদের দয়া দাক্ষিণ্যে, কোনো দিন খেয়ে কোনো দিন না খেয়ে।
কয়েক বছর পর সুশীল এসে মা’কে কলকাতার ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে চাওয়ায় মা প্রথমে রাজি হয় না। কিন্তু ছেলে ছেলের বউয়ের অনেক অনুরোধে রাজি না হয়ে উপায় থাকে না। ছেলে বলে, “এই গ্রামে একা একা পড়ে থেকে কি লাভ? আমরাতো রোজ তোমার খবর নিতে আসতে পারি না,তুমি চলো আমাদের সঙ্গে। ও হ্যাঁ মা এই কাগজটায় একটা সই করে দাও।”
“এটা কিসের কাগজ বাবু?”
“এটা ? ওই, তোমার নামে একটা মেডিক্লেম করবো তার কাগজ।তোমার তো বয়স হয়েছে কখন কি চিকিৎসা লাগে, তাই একটা মেডিক্লেম করে রাখছি।
সুশীলের মা ছেলেকে অবিশ্বাস করতে পারেন নি।মা হয়ে ছেলেকে অবিশ্বাস করতে পারেন নি এটাই তার সবচেয়ে বড়ো অপরাধ। না,অপরাধ নয় বোকামি। সুশীল কয়েকদিন ঘন ঘন যাতায়াত করে শেষকালে একদিন ছেলে মা কে নিয়ে
কলকাতার উদ্যেশ্যে রওনা হয়। স্টেশনে এসে সুশীল মা’কে বলে আমি টিকিট কেটে না ফেরা পর্যন্ত তুমি এখানেই বসে থাকো। এখান থেকে কিন্তু উঠবেনা।
সুশীলের মা স্টেশনে বসে সুশীলের প্রতীক্ষা করতে লাগলো। টিকিট কেটে ছেলে আর আসে না। সময় গড়িয়ে যায় কত ট্রেন কলকাতা চলে গেল, সুশীল এলোনা। রাত হয়ে আসে। সুশীলের মা বাড়ি ফিরে দেখে ছেলে তাকে ঠকিয়ে বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছে। ছেলের এই ব্যবহারে চোখ থেকে অবিরাম নোনা জলের স্রোত বয়ে চলে। প্রতিবেশীরা সবাই বলল, “তুমি ওই ছেলেকে বিশ্বাস করে কাগজে সই করে দিলে, আর ও তোমার সর্বস্ব নিয়ে তোমাকে পথে নামিয়ে দিলো!”
সুশীলের মা প্রতিবেশীদের বলল, ” তোমরা ওকে বৃথাই দোষ দিচ্ছ, আমার অদৃষ্টে ছিল গৃহ-হারা হওয়া ও তো নিমিত্ত মাত্র। ওর কোনো দোষ নেই।”
সুশীলের মা আবার ফিরে এলো স্টেশনে। ওর বিশ্বাস, ছেলে একদিন ঠিক ফিরে আসবে। এসে যদি ছেলে তাকে দেখতে না পায়! বসে রইল ছেলের প্রতীক্ষায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress