Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 72

রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

পর্ব্বত দেখিয়া সবে হইল বিস্ময়।
প্রণাম করিয়া বীর রঘুনাথে কয়।।
ঔষধ চিনিতে নাহি পারি কোনমতে।
এ কারণে আনিলাম পর্ব্বত সমেতে।।
শ্রীরাম বলেন বাপু পবন-কুমার।
ত্রিভুবনে কোন্ কার্য্য অসাধ্য তোমার।।
রাম বলে হনু দিল পর্ব্বত আনিয়া।
আপনি সুষেণ লহ ঔষধ চিনিয়া।।
শ্রীরামের আজ্ঞাতে সুষেণ বৈদ্য যায়।
সকল পর্ব্বতময় খুঁজিয়া বেড়ায়।।
ছয় ‍শৃঙ্গ পর্ব্বত সে অদ্ভুত নির্ম্মাণ।
প্রথম শৃঙ্গেতে দেখে শঙ্করের স্থান।।
দ্বিতীয় শৃঙ্গেতে দেখে দিব্য সরোবর।
তৃতীয় শৃঙ্গেতে পশু চরিছে বিস্তর।।
চতুর্থ শৃঙ্গেতে দেখে খরতরা নদী।
নদীর দুকূলে দেখে ব্স্তির ঔষধি।।
দেবগণ আদি কেলি করেন আনন্দে।
মৃতদেহে প্রাণ পায় ঔষধের গন্ধে।।
ঔষধের গন্ধে প্রাণ পায় মড়া কত।
এই জন্য নাম গন্ধমাদন পর্ব্বত।।
আনন্দে সুষেণ হনুমানের বাখানি।
চিনিয়া ঔষধ আনে বিশল্যকরণী।।
ঔষধ লইয়া বুড়া নামে ভূমিতলে।
তখনি ঔষধ বাটে রত্নময়-শিলে।।
স্মরণ করিল মনে পিতা ধন্বন্তরি।
শ্রীরাম লক্ষ্মণ-পদে নমস্কার করি।।
ঔষধ আনিয়া দিল লক্ষ্মণের নাকে।
আনন্দে বানরগণ রামজয় ডাকে।।
ঔষধের ঘ্রাণ যায় লক্ষ্মণ-উদরে।
ক্রমে ক্রমে সর্ব্ব অঙ্গে ঔষধ সঞ্চারে।।
ভগ্ন ছিল পাঁজর সে লাগিলেক যোড়া।
ক্রমে ক্রমে লক্ষ্মণের জানা গেল সাড়া।।
অন্তরে অন্তরে বিঁধে ঔষধের ঘ্রাণ।
সজ্ঞান হইল বীর সঞ্চারিল প্রাণ।।
চক্ষু মেলি লক্ষ্মণ শ্রীরাম স্থির হৈল প্রাণ।।
বিভীষণ সুগ্রীবেতে করে কোলাকুলি।
চারিদিকে পড়ে বানরের হুলাহুলি।।
ভাই ভাই বলি রাম হন উতরোল।
পুলকেতে শ্রীরাম লক্ষ্মণে দেন কোল।।
লক্ষ্মণে লইয়া কোলে তিলেক না এড়ে।
শ্রীরামের চক্ষে জল মুক্তাধারা পড়ে।।
শক্তিশেল রামায়ণ শুনে যেই জন।
অপার দুর্গতি তার খণ্ডে সেইক্ষণ।।
লক্ষ্মণ পাইল প্রাণ কপিগণ দেখে।
পর্ব্বতে বানরগণ উঠে লাখে লাখে।।
লম্ফে ঝম্পে পর্ব্বতের বৃক্ষ শাখা ভাঙ্গে।
ফল ফুল খাইছে বানরগণ রঙ্গে।।
বহুদিন উপবাস যুঝিয়ে বিকল।
উদর পূরিয়া খায় যত ফুল ফল।।
ফুল ফল খাইয়া ছিঁড়িল যত লতা।
আনন্দে ছিঁড়িয়া খায় নব নব পাতা।।
ফুল ফল খাইয়া বৃহৎ হৈল পেট।
নড়িতে চড়িতে নারে মাথা করে হেঁট।।
জাম্ববান কহিছে শ্রীরাম বিদ্যমান।
কার্য্যসিদ্ধি হইল লক্ষ্মণ পাইল প্রাণ।।
পর্ব্বত রাখিতে যাক বীর হনুমানে।
আজ্ঞা দেন রাম জাম্ববানের বচনে।।
রাম সুগ্রীবের কাছে মাগিয়া মেলানি।
পর্ব্বত লইয়া বীর করিল উঠানি।।
পর্ব্বত লইয়া বীর যায় অন্তরীক্ষে।
লঙ্কার ভিতরে বসি দশানন দেখে।।
সাতটা রাক্ষস ছিল কটকে প্রধান।
রাবণ করিল আজ্ঞা দিয়া গুয়া পান।।
মস্তকে পর্ব্বত হনু পড়িল বিপাকে।
এই বেলা গিয়া ঘেরি মার চারিদিকে।।
বাঁকামুখ ওষ্ঠবক্র প্রচণ্ড-লোচন।
তালভঙ্গ সিংহমুখ ঘোর-দরশন।।
উল্কামুখ প্রভৃতি দেখিতে ভয়ঙ্কর।
আজ্ঞা পেয়ে সাত বীর চলিল সত্বর।।
মেরু জিনি এক এক জনের শরীর।
শূন্য-পথে হনুরে বলিছে সাত বীর।।
দেবতা গন্ধর্ব্ব নাহি মান কোনজনা।
আজি বেটা বানরা বুঝিব বীরপণা।।
ফিরিয়া যাইবে বুঝি বাঞ্ছা কর মনে।
যমালয়ে পাঠাইব আজিকার রণে।।
হনু বলে তোদের মত লক্ষ যদি আসে।
রামের প্রসাদে মারি চক্ষুর নিমিষে।।
চারিদিকে ঘেরে সবে যুঝে একেবারে।
মাথায় পর্ব্বত বীর চাহে ক্রোধভরে।।
হাত নাহি ছাড়ে বীর পর্ব্বত নাহি ছাড়ে।
পাক দিয়া সাতজনে জড়ায় লাঙ্গুলে।।
লাঙ্গুলে জড়ায়ে বীর মারিল আছাড়।
ভাঙ্গিল মাথার খুলি চূর্ণ হৈল হাড়।।
তালভঙ্গ নিশাচর বড়ই সেয়ান।
দুই হাতে লেজ ধরে হেঁটে দিল টান।।
মাথা গলাইয়া বেটা পড়ে গেল সরে।
পলাইয়া যায় রড়ে নাহি চায় ফিরে।।
লঙ্কার ভিতরে গেল পলাইয়া ত্রাসে।
রাবণেরে বার্ত্তা কহে ঘন বহে শ্বাসে।।
অবধান শুন রাজা লঙ্কা অধিপতি।
ঘরপোড়ার হাতে কারো নাহি অব্যাহতি।।
মারিবারে দাঁড়ালাম সাতজন বলে।
মস্তকে পর্ব্বত হনু জড়ালে লাঙ্গুলে।।
আমি মাথা গলাইয়া বাঁচিলাম প্রাণে।
লেজে বেঁধে আছাড় মারিল ছয় জনে।।
আছাড়েতে চূর্ণ হলো ছজনার হাড়।
আমি বেঁচে আছি কিন্তু ভাঙ্গিয়াছে ঘাড়।।
লাঙ্গুল ছাড়াব বলে ঘন দিনু টান।
লেজের ঘর্ষণে ছিঁড়ে গেছে নাক কাণ।।
পড়েছিনু যে সঙ্কটে শঙ্কর তা জানে।
তব পিতৃ-পুণ্যে বেঁচে আইলাম প্রাণে।।
রাক্ষস-বচনে রাবণের উড়ে প্রাণ।
শমন সমান বৈরী বীর হনুমান।।
যক্ষ রক্ষ দানব গন্ধর্ব্ব বিদ্যাধর।
একে একে হনুমানে বাখানে বিস্তর।।
অন্তরীক্ষ-পথে চলে বীর হনুমান।
যথাস্থানে রাখিলেন সে গন্ধমাদন।।
হনুমান বলে আমি পবন-নন্দন।
অনেক গন্ধর্ব্বগণে করেছি নিধন।।
যে ঔষধে লক্ষ্মণ পেলেন প্রাণদান।
সে ঔষধে সবাকার বাঁচাইব প্রাণ।।
দুই হাতে কচালে ঔষধ করে গুঁড়া।
জলে গুলে গন্ধর্ব্ব উপরে দেয় ছড়া।।
উঠিয়া গন্ধর্ব্ব সব চারিদিকে চায়।
খেদাড়িয়া হনুমানে মারিবারে যায়।।
লাফ দিয়া হনুমান উঠিল আকাশে।
লঙ্কাকাণ্ড গাহিল পণ্ডিত কৃত্তিবাসে।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress