টিকটিকি
আকাশটা নীল। আমার খুব জ্বর । রাধাচূড়া গাছটা ফুলে ফুলে ভরে গেছে। বাতসে ফুলগুলি ঝরছে। রাস্তাটা বাঁ-দিকে ঘুরে গেছে। ঝরা ফুলে রাস্তাটা হলুদ হয়ে উঠেছে। একজন ফেরিঅলা তা মাড়িয়ে চলে গেলে, ফুল চাই ফুল চাই হেঁকে। রাস্তার ঝরা ফুলগুলো কেঁদে উঠল। ফেরীঅলা তা শুনতে পেল না।
তুমি জানলায় দাঁড়িয়ে। পাখিটা শিশ দিয়ে উড়ে গেল। আমি শিশ দিই না কতদিন।
ধূসর সন্ধ্যা নামছে ধীরে। এরপর আকাশে তারাদের মেলা বসবে। সেখানে আমার যেতে হবে। কালপুরুষ আমার বন্ধু। সে আমন্ত্রণ করেছে। না গেলে খুব দুঃখ পাবে।
কী মিষ্টি একটা গন্ধ আসছে। তুমি কি গান জান? একদিন আমায় শোনাবে? তার আগে তোমাকে আমি পার্কে নিয়ে যাব। তুমি পাশে বসে গান গাইবে আর আমি বিভোর হয়ে ছবি আঁকব। তারপর ছবিটা তোমাকে উপহার দেব,গান শোনাবার জন্য।
তোমার মুখটা কী মিষ্টি। ফুলের চেয়েও সুন্দর।
অন্ধকার গুড়ি মেরে নেমে আসছে। একটা রাতপাখি ডাকতে ডাকতে কোথায় উড়ে গেল। জোনাকিগুলো ঘরে এসে এবার আমায় গল্প শোনাবে, অমাবস্যা রাতের। একটা টিকটিকি তা শুনতে দেওয়াল বেয়ে নেমে আসছে ধীরে ধীরে।
জানলার থেকে সরে গেছে তোমার মুখটা।
যেদিন জ্বরটা কমবে, আমি সেদিন একটা টিকটিকি হয়ে ঘুরে বেড়াব তোমার ঘরে। দেখব, তুমি সারাদিন কি কি কর।
অন্ধকার আমার ভাল লাগে। সব কালোয় ডুবে যায়। তুমি একরাশ কালো চুল মেলে দিয়ে, সামনে এসে দাঁড়াও।
কালো ক্যানভাসে মনের রঙ মিলিয়ে আমি আলোর ছবি আঁকি।
এবার আমার ওষুধ খাবার পালা।
তারপর ঘুম নেমে আসবে চোখে। আমার চেতনা লোপ পাবে। আমি ঘুমের মধ্যে ডুবতে ডুবতে হাস্নুহানার গন্ধ পাই, প্রায় দিনই। তারপর কখন ঘুমিয়ে পড়ি, টেরও পাই না।
ঘুম ভাঙলে, সকালে উঠে দেখি, আমি সত্যি সত্যিই একটা টিকটিকি হয়ে গেছি। এবার শুরু হবে তবে আমার, তোমার ঘরের দেওয়ালে, ছাদে ঘোরা ফেরা করার পালা। কী মজা, কী মজা