Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 70

রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

লক্ষ্মণে মারিয়া শেল ভাবিছে রাবণ।
ডাক দিয়া আনিল যতেক দেবগণ।।
আপনি আইলা ব্রহ্মা চড়ি রাজহংসে।
আইলেন বিশ্বনাথ চড়ি বৃদ্ধ বৃষে।।
ইন্দ্র যম কুবেরাদি আইল পবন।
চন্দ্র সূর্য্য দুজনে আইল ততক্ষণ।।
রাবণ বলে, শুন বলি যত দেবগণ।
ময়দানবের শেলে পড়েছে লক্ষ্মণ।।
আমার বচন শুন বলি হে ভাস্কর।
উদয় করহ গিয়া গিরির উপর।।
তোমার উদয় হলে মরিবে লক্ষ্মণ।
লক্ষ্মণ মরিলে রাম ত্যজিবে জীবন।।
তুমি উদয় হও চন্দ্র থাক এক ঠাঁই।
তোমার উদয়ে লক্ষ্মণ বাঁচিলেক নাই।।
এ কথা শুনিয়া তবে বলে দিবাকর।
আমার বচন শুন লঙ্কার ঈশ্বর।।
দ্বিতীয় প্রহর রাত্রি হইল গগনে।
এখন উদয় বল হইল কেমনে।।
রাবণ বলে হল রাত্রি কি ক্ষতি তোমার।
মনে বুঝি অকুশল চিন্তহ আমার।।
রাবণের কথা শুনি দিবাকরের ত্রাস।
ভয়েতে চলিল সূর্য্য হইতে প্রকাশ।।
সপ্ত ঘোড়া যোগান সূর্য্যের রথ বহে।
কনক-রচিত রথ ত্রিভুবন মোহে।।
নানা রত্ন শোভা করে রথের উপর।
উদয় হইতে যান দেব দিবাকর।।
দিবাকর পূর্ব্বদিক প্রকাশ করিল।
তাহা দেখি হনুমান তরাস পাইল।।
নেউটি উদয়গিরি করিল গমন।
দিবাকর সন্নিকটে দিল দরশন।।
রথ আগুলিয়া বীর দাণ্ডায় সত্বর।
অচল হইল রথ সারথি ফাঁফর।।
পূর্ব্বদিক আগুলিল হনুমান বীরে।
পশ্চিমে চালায় রথ সারথি সত্বরে।।
ঘোড়ারে প্রবোধ-বাড়ি মারয়ে সঘনে।
পশ্চিমে চলিল রথ পবন-গমনে।।
কুপিল যে হনুমান অতি ভয়ঙ্কর।
লাফ দিয়ে অশ্বগণে ধরিল সত্বর।।
রথ ধরে হনুমান ঘন দেয় পাক।
বায়ুভরে ঘোরে যেন কুমারের চাক।।
ছাড় ছাড় বলি সূর্য্য ঘন ডাক ছাড়ে।
সূর্য্য যদি কোপ করে ত্রিভুবন পোড়ে।।
বুঝিয়া রামের কার্য্য সূর্য্য কৃপাময়।
সারথিরে জিজ্ঞাসিল কেবা এই হয়।।
সারথি কহিছে তবে সূর্য্যের গোচর।
রথ ঘুরাইয়া রাখে একটা বানর।।
পর্ব্বত-প্রমাণ অঙ্গ বিকৃত আকার।
অচল হইল রথ নাহি চলে আর।।
সূর্য্য বলে রাখ রথ গগন-মণ্ডলে।
পোড়াইয়া বানরে পাড়িব ভূমিতলে।।
এত শুনি দাণ্ডাইল পবন-নন্দন।
বিনয় করিয়া বলে মধুর বচন।।
কোন্ মহাশয় তুমি কোন্ মায়াধর।
স্বরূপ করিয়া কহ আমার গোচর।।
সূর্য্য কহে আমি সূর্য্য ছেড়ে দেহ পথ।
উদয় হইতে যাব উদয় পর্ব্বত।।
যত দেবগণ রাবণের দ্বারে খাটি।
পুরাণ পড়েন ব্রহ্মা আর মুনি কোটি।।
বড় যুদ্ধ হইয়াছে আজিকার রণে।
পড়েছে লক্ষ্মণ বীর শক্তিশেল-বাণে।।
রজনী প্রভাত হলে মরিবে লক্ষ্মণ।
উদয় হইতে মোরে পাঠায় রাবণ।।
রাবণের উপদ্রব সহিতে না পারি।
উদয় হইতে যাই থাকিতে শর্ব্বরী।।
আমার উদয় হৈলে মরিবে লক্ষ্মণ।
লক্ষ্মণের শোকে রাম ত্যজিবে জীবন।।
ঔষধ আনিতে গেছে পবন-কুমারে।
লক্ষ্মণে মারিব বীর না আসিতে ফিরে।।
হনুমান বলে দেব কর অবধান।
পবনের পুত্র আমি নাম হনুমান।।
ঔষধ আনিতে আমি আইনু শিখরে।
এই নিবেদন করি তোমার গোচরে।।
প্রাণদান লক্ষ্মণ না পান যতক্ষণ।
তাবৎ উদয়গিরি না কর গমন।।
সূর্য্য বলে কেবা শুনে তোমার বচন।
না পারি রাবণ-আজ্ঞা করিতে লঙ্ঘন।।
হনুমান বলে তুমি দেবের প্রধান।
সদয় হইয়া রাখ লক্ষ্মনের প্রাণ।।
রাবণের অনুরোধে যাবে তুমি বলে।
রথ সহ ডুবাইব সাগরের জলে।।
হাসিয়া বলেন সূর্য্য শুন হনুমান।
যত দেবগণ করি রামের কল্যাণ।।
সাধে কি উদয়গিরি যাই উদয়েতে।
দেবের নিস্তার নাই রাবণের হাতে।।
কি জানি কি করে রাবণ ভাবি এই ভয়।
ভয়েতে নিশিতে এলাম হইতে উদয়।।
রাবণের আজ্ঞা যদি না করি পালন।
কোপেতে বিষম শাস্তি দিবেক রাবণ।।
শ্রীরামের অনুরোধে ফিরে যদি যাই।
রাবণের কোপে বল কিসে রক্ষা পাই।।
হনুমান বলে আছে উপায় ইহার।
নিকটেতে এস বলি কর্ণেতে তোমার।।
তব নাম ভানু, মম নাম হনুমান।
নামে নামে মিলিয়াছে দুজনে সমান।।
খণ্ডিবে তোমার দোষ রাবণের কাছে।
সাধিব রামের কার্য্য যুক্তি হেন আছে।।
দুই দিক রক্ষা পাবে সুমন্ত্রণা বলি।
হনু ভানু দুইজনে করিব মিতালি।।
এত শুনি দিবাকর হরষিত মন।
হনুর নিকটে আসি করে সম্ভাষণ।।
সূর্য্যেরে ধরিয়া হনু করে কোলাকুলি।
সাপটিয়া সুর্য্যেরে পূরিল কক্ষতলি।।
মহাতেজোময় সূর্য্য রাখিতে কে পারে।
আপনি হইলা বন্দী লক্ষ্মণের তরে।।
হনু ভানু ভঙ্গি দেখি দেবগণ হাসে।
লঙ্কাকাণ্ড গাহিল পণ্ডিত কৃত্তিবাসে।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress