Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মিটারগেজ || Uday Kumar Ghosh

মিটারগেজ || Uday Kumar Ghosh

সেবার গরমের ছুটিতে আমাদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হলো ভূত নিয়ে। আমি বলছি ভূত বলে কিছু হয় না কিন্তু সৌভিক নিজের কথায় অনড়। ঠিক হলো ভূত আছে কিনা দেখার জন্য রাতে একটা অভিযান করা হবে।
রাত তখন এগারোটা পঁয়তাল্লিশ। আমি আস্তে করে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম। কাক পক্ষিও টের না পায় এমন ভাবে নিজের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে সিড়ির সামনে পৌঁছে গিয়ে সবে নামতে যাচ্ছি অমনি একটা পায়ের শব্দে আমার পিলেটা কেপে উঠলো। পিছনে ফিরে দেখি, টুন টুন! টুন টুন আমাদের পোষা কালো বেড়াল।
“উফ্ বাবা বাঁচলাম।” মনে মনে বলে উঠলাম আমি। সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেট এর সামনে পৌছালাম। মেইন গেটটা ‘ক্যার ক্যার’ শব্দ করে খুলে গেলো।
বাইরে নিশ্ছিদ্র অন্ধকার যেনো সারা পৃথিবীকে মুরে ফেলতে চাইছে কিন্তু জোছনার খিন আলো তাকে বাধা দিচ্ছে। আলো-অন্ধকারের এই মনমুগ্ধকর খেলা চারিদিকের পৃথিবীকে ধূসর চাদরে মুড়ে ফেলছে। হাঁটতে হাঁটতে যখন লোকালয়ের শেষ প্রান্ত টাও পার করে দিলাম। তখন বারোটা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি। এরপর ঘন বন তারপর স্টেশন। ব্রিটিশ আমলে যখন মিটারগেজ রেলওয়ে লাইনের প্রচলন ছিল তখন ঐ স্টেশন চলত এখন ব্রডগেজ লাইন আসার পর আর ব্যাবহার হয়না। স্টেশনের সামনে পৌঁছে দেখি সৌভিক সেখানে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে আছে। দুজন স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করলাম, হাতে দুটো টর্চ। কিছু দূর যেতেই সিড়িতে হোচট খেয়ে পড়ে যেতে বুঝলাম প্ল্যাটফর্ম আর কাছে পৌঁছে গেছি। মাঝরাতে এই ভুতুড়ে স্টেশন এ আমরা একা দুটো বাচ্চা ছেলে, ভেবে একটু ভয়ই লাগছিল। একসময় সর্বক্ষণ শশব্যস্ত থাকা এই স্টেশন আজ কংক্রিট আর ইস্পাতের ভগ্ন স্তূপে পরিণত হয়েছে। হটাৎ একটা অত্যন্ত ঠান্ডা, প্রাণহীন স্পর্শে আমি চিৎকার করে পিছনে তাকালাম। দেখি একটা নরঙ্ককাল আমার কাঁধে হাত দিয়ে আছে, সৌভিক মাটিতে পড়ে! আমি কোনো ক্রমে নিজেকে ছড়িয়ে, সৌভিককে তুলে নিয়ে একছুট দিলাম। “সামনে একটা ঘরে আলো জ্বলছে না?” আমি সেদিকে ঢুকতে যাচ্ছি অমনি একটা অদৃশ্য হাতের ধাক্কায় আমি রেললাইন এর ওপর ছিটকে পরে গেলাম। দেহ টা ক্রমশ হালকা হয়ে যেতে লাগলো, দৃষ্টি ক্রমশ ঝাপসা হয়ে যেতে লাগলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress