Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবস || Sankar Brahma

ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবস || Sankar Brahma

ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবস (ভারতের জাতীয় দিবস)

ভারতবর্ষের সম্পূর্ণ নাম হল সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র ভারত।
বহু কারণে প্রজাতন্ত্র দিবস ভারতের ইতিহাসে এত তাৎপর্যপূর্ণ।
প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি দিনটি ভারতে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ইংরেজ শাসনের থেকে স্বাধীনতা পায় ভারত। কিন্তু সে সময় ভারতের নিজস্ব কোনও স্থায়ী সংবিধান না থাকায় ব্রিটিশ সরকারের ১৯৩৫ সালের ‘গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া অ্যাক্ট’-এর সংশোধিত সংস্করণ অনুযায়ী স্বাধীন ভারত শাসিত হত।
ক্রমশই ভারতের নিজস্ব সংবিধানের প্রয়োজন দেখা দিতে শুরু করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে সংবিধান সভার ঘোষণা করা হয়। সংবিধান সভার সদস্যদের নির্বাচন করা হয়। ড. বিআর আম্বেদকর, জওহরলাল নেহরু, ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল, মৌলানা আবুল কালাম আজাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের নিয়ে সংবিধান সভা তৈরি করা হয়। ১৯৪৭ সালের ২৯ আগস্ট আম্বেদকরের নেতৃত্বে ভারতে স্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে একটি খসড়া কমিটি গড়ে তোলা হয়। এই বছরের ৪ঠা নভেম্বর খসড়া কমিটি সংবিধান সভায় ভারতীয় সংবিধানের খসড়া জমা দেয়।

এর পরে দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে জনগণের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ও নানা চিন্তাভাবনার পরে প্রস্তাবিত সংবিধানে কিছু সংশোধন, সংযোজন ও পরিবর্তন আনা হয়। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর সংবিধান সভায় শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সংবিধানের খসড়া গৃহীত হয়।

সভার ৩০৮ জন সদস্য ১৯৫০ সালের ২৪শে জানুয়ারি সংবিধানের দু’টি হস্তলিখিত কপিতে সই করেন। এর একটি ছিল ইংরেজিতে ও অন্যটি হিন্দিতে। এর দু’দিন পর ২৬শে জানুয়ারি ভারতীয় সংবিধান কার্যকর হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভারত। ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ হয়েছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি।
এটি যেমন একটি কারণ, তেমনই ২৬শে জানুয়ারিকে গণতন্ত্র দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি ইতিহাস রয়েছে। ১৯২৯ সালের ডিসেম্বর মাসে লাহোরে জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেস অধিবেশনের ডাক দেওয়া হয়। এই অধিবেশনে একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়। সেখানে ঘোষণা করা হয়— ১৯৩০ সালের ২৬শে জানুয়ারির মধ্যে ব্রিটিশ সরকার যদি ভারতকে ডোমিনিয়নের মর্যাদা না দেয়, তাহলে ভারতের পূর্ণ স্বরাজ ঘোষণা করা হবে। সেই সময়সীমার মধ্যে ব্রিটিশ সরকার ভারতকে ডোমিনিয়নের মর্যাদা দেয়নি। ফলে কংগ্রেস ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা লাভের ঘোষণা করে সক্রিয় আন্দোলন শুরু করে। ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারির গুরুত্ব বজায় রাখতে, তাই ১৯৫০ সালে এ দিনই ভারতের সংবিধান গৃহীত হয় ও এই দিনটি গণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে।

২৬শে জানুয়ারি সকাল ১০টা ১৮ মিনিটে ভারতের সংবিধান কার্যকরী হয়।
এদিন দিল্লিতে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। আট কিলোমিটারের কুচকাওয়াজ শুরু হয় রাইসিনা হিল থেকে। এর পরে রাজপথ, ইন্ডিয়া গেট হয়ে লালকেল্লায় এর শেষ হয়।
১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি কুচকাওয়াজ রাজপথের পরিবর্তে তৎকালীন ইর্ভিন স্টেডিয়াম (বর্তমানে ন্যাশনাল স্টেডিয়াম)-এ আয়োজিত হয়েছিল। তখন ইর্ভিন স্টেডিয়ামের চারদিকে দেওয়াল ছিল না ও সেখান থেকে লালকেল্লা পরিষ্কার দেখা যেত।
জাতীয় সংগীতের সময়ে ২১টি তোপের সেলামি দেওয়া হয়। জাতীয় সংগীতের শুরু থেকেই এই সেলামি দেওয়া শুরু হয় ও ৫২ সেকেন্ডে জাতীয় সঙ্গীত শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এরও সমাপ্তি ঘটে।
প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে বিভিন্ন রাজ্যের ট্যাবলো অংশগ্রহণ করে। প্যারেডে অংশগ্রহণ করে ভারতীয় সেনা, নৌ ও বায়ুসেনা।

ভারতে সাধারণতন্ত্র দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয় ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি তারিখে ভারত শাসনের জন্য ১৯৩৫ সালের ভারত সরকার আইনের পরিবর্তে ভারতীয় সংবিধান কার্যকরী হওয়ার ঘটনাকে স্মরণ করে। এটি ভারতের একটি জাতীয় দিবস। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় গণপরিষদ সংবিধান কার্যকরী হলে ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
কার্যকরী হওয়ার ঠিক দুই মাস আগে, ১৯৪৯ সালের ২৬শে নভেম্বর গণপরিষদ কর্তৃক ভারতের সংবিধান অনুমোদিত হয়। ২৬শে জানুয়ারি দিনটিকে সংবিধান কার্যকর করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ ১৯৩০ সালে ঐ একই দিনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক পূর্ণ স্বরাজের সংকল্প ঘোষিত ও গৃহীত হয়েছিল।

এই দিনটি ভারতের তিনটি জাতীয় দিবসের অন্যতম। অন্য দু’টি জাতীয় দিবস যথাক্রমে স্বাধীনতা দিবস ও গান্ধী জয়ন্তি। এই দিন সারা ভারতেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানটি হয় নতুন দিল্লির রাজপথে। ভারতের রাষ্ট্রপতি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন।

রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ (ঘোড়ায়-টানা গাড়িতে) নয়াদিল্লীর রাজপথে প্রথম সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন, ১৯৫০ সালে।
১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ এ দীর্ঘ স্বাধীনতা আন্দোলনের ফলে ভারত ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পায়। এই স্বাধীনতা আন্দোলনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে পরিচালিত, প্রায় সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ অহিংস অসহযোগ আন্দোলন ও আইন অমান্য আন্দোলন। স্বাধীনতা লাভের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হয় যুক্তরাজ্যের সংসদে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাশ হওয়ার মাধ্যমে। এর ফলে ব্রিটিশ ভারত ভেঙে গিয়ে কমনওয়েলথ অফ নেশনস-এর অন্তর্গত অধিরাজ্য হিসেবে দু’টি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের জন্ম হয়। ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হলেও দেশের প্রধান হিসেবে তখনও বহাল ছিলেন ষষ্ঠ জর্জ এবং লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন ছিলেন এর গভর্ণর জেনারেল। তখনও দেশে কোনো স্থায়ী সংবিধান ছিল না। ঔপনিবেশিক ভারত শাসন আইনে কিছু রদবদল ঘটিয়েই দেশ শাসনের কাজ চলছিল। ১৯৪৭ সালে ২৮শে আগস্ট একটি স্থায়ী সংবিধান রচনার জন্য ড্রাফটিং কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ভীমরাও রামজি আম্বেডকর। ৪ঠা নভেম্বর ১৯৪৭ তারিখে কমিটি একটি খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে গণপরিষদে জমা দেয়। চূড়ান্তভাবে সংবিধান গৃহীত হওয়ার আগে ২ বছর, ১১ মাস, ১৮ দিন ব্যাপী সময়ে গণপরিষদ এই খসড়া সংবিধান আলোচনার জন্য ১৬৬ বার অধিবেশন ডাকে। এই সমস্ত অধিবেশনে জনসাধারণের প্রবেশের অধিকার ছিল। ১৯৪৯ সালের ২৬শে নভেম্বর স্বাধীন ভারতের সংবিধান গৃহীত হবার পর ঠিক করা হয় ১৯৩০ সালের ২৬শে জানুয়ারি প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালনের সেই দিনটিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি থেকে ভারতের সংবিধান কার্যকর হবে এবং সেদিন থেকে প্রজাতান্ত্রিক ভারতবর্ষ বা Republic of India হিসেবে পরিচিত হবে। বহু বিতর্ক ও কিছু সংশোধনের পর ২৪ শে জানুয়ারি ১৯৫০ এ গণপরিষদের ৩০৮ জন সদস্য চূড়ান্ত সংবিধানের হাতে-লেখা দু’টি নথিতে (একটি ইংরেজি ও অপরটি হিন্দি) স্বাক্ষর করেন। এর দু’দিন পর সারা দেশব্যাপী এই সংবিধান কার্যকর হয়।

সাধারণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনের প্রধান কর্মসূচী পালিত হয় ভারতের রাষ্ট্রপতির সামনে, জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লীতে। এই দিন রাজপথে আড়ম্বরপূর্ণ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় যা ভারত রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়।

২০১৪ খ্রিঃ ৬৫ তম সাধারণতন্ত্র দিবসে মহারাষ্ট্র সরকার প্রথম বার দিল্লী সাধারণতন্ত্র দিবস কুচকাওয়াজের অনুকরণে মেরিন ড্রাইভ বরাবর তাদের নিজস্ব কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছিল।
সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে জাতীয় রাজধানী নতুন দিল্লীতে কুচকাওয়াজ হয় রাষ্ট্রপতির আবাসস্থল রাষ্ট্রপতি ভবনের নিকটবর্তী রাইসিনা হিল থেকে রাজপথ বরাবর ইন্ডিয়া গেট ছাড়িয়ে।কুচকাওয়াজ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে রাষ্ট্রপতি রাজপথের একপ্রান্তে অবস্থিত ইন্ডিয়া গেটে শহিদ সৈন্যদের উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মারক অমর জওয়ান জ্যোতি-তে একটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পর ঐ সৈন্যদের উদ্দেশ্যে ২ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। স্বাধীনতা আন্দোলন ও তার পরবর্তী যুদ্ধগুলিতে ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শহিদ সৈন্যদের প্রতি এইভাবে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। এর পর রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মিলিত হন এবং প্রধান অতিথির সাথে রাজপথে অবস্থিত অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে আসেন। রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষকরা ঘোড়ার পিঠে করে তাদের পথপ্রদর্শন করেন।

বীটিং রিট্রীট দ্বারা সাধারণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি সূচিত হয়। সাধারণতন্ত্র দিবসের ৩ দিন পর, ২৯শে জানুয়ারি সন্ধ্যেবেলা বীটিং রিট্রীট অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের সামরিক বাহিনীর তিন প্রধান শাখা ভারতীয় স্থলসেনা, ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ভারতীয় বায়ুসেনা এই রিট্রীটে অংশ নেয়। রাজপথের প্রান্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সচিবালয় ও রাষ্ট্রপতি ভবনের নর্থ ব্লক ও সাউথ ব্লক ভবন দু’টির মধ্যবর্তী রাইসিনা হিল ও বিজয় চকে এই অনুষ্ঠানটি হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি, যিনি অশ্বারোহী ‘পিবিজি’ (প্রেসিডেন্টস বডিগার্ডস / রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষক) কর্তৃক পথপ্রদর্শিত হয়ে আসেন। তিনি উপস্থিত হলে পিবিজির অধিনায়ক তার বাহিনীকে জাতীয় অভিবাদনের (স্যালুট) নির্দেশ দেন। এর পর সামরিক বাহিনী কর্তৃক ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। এই সঙ্গীতের পাশাপাশি সম্মিলিত স্থল, জল ও বায়ুসেনার বিভিন্ন ব্যান্ড, পাইপ, ভেরী প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রের কুশলীরা অনুষ্ঠানের শেষ লগ্নে সারে জাঁহা সে আচ্ছা প্রভৃতি দেশাত্মবোধক গানের আয়োজনও করেন।

সাধারণতন্ত্র দিবস কুচকাওয়াজে ভারতে আহূত রাষ্ট্রসমূহ (গাঢ় নীল)। ভূতপূর্ব যুগোস্লাভিয়া (২ বার আহূত)-কে দেখানো হয়নি। ১৯৫০ সাল থেকে ভারত সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অথবা গুরুত্বপূর্ণ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে সাম্মানিক রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে বরণ করে আসছে। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় (আরউইন মঞ্চ, কিংসওয়ে, লালকেল্লা ও রামলীলা ময়দান)। ১৯৫৫ সালে থেকে বর্তমান স্থানটি নির্দিষ্ট হয়। অতিথি রাষ্ট্র কে হবে তা নির্ধারিত হয় কৌশলগত, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে। ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ এর দশকের মধ্যে বেশ কিছু জোট-নিরপেক্ষ ও পূর্ব ব্লক রাষ্ট্রকে ডাকা হয়েছিল। ঠান্ডা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর অনেক পাশ্চাত্য নেতাকেও ডাকা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হল এই যে, চীন ও পাকিস্তানের সাথে ভারতের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের আগে পর্যন্ত ঐ দুই রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ সাধারণতন্ত্র দিবসে ভারতে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। ১৯৬৫ সালে সাধারণতন্ত্র দিবসে পাকিস্তানের খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ভারতের সাম্মানিক অতিথি ছিলেন, এবং এর কয়েক দিন পরেই দুই দেশের যুদ্ধ বাধে। একাধিকবার যে সমস্ত রাষ্ট্র আমন্ত্রিত হয়েছে তাদের মধ্যে আছে প্রতিবেশী (ভুটান ও শ্রীলঙ্কা), প্রতিরক্ষা মিত্র (ফ্রান্স, সোভিয়েত ইউনিয়ন/রাশিয়া, যুক্তরাজ্য), বাণিজ্য সহযোগী (ব্রাজিল) এবং জোট-নিরপেক্ষ মিত্রগোষ্ঠী (নাইজিরিয়া ও ভূতপূর্ব যুগোস্লাভিয়া)। ভুটান ও ফ্রান্স সবচেয়ে বেশি বার (চার বার) আমন্ত্রিত হয়েছে, আর তাদের পরেই আছে মরিশাস ও সোভিয়েত ইউনিয়ন/রাশিয়া: শেষোক্ত দুই দেশই আমন্ত্রিত হয়েছে তিন বার করে।

বছর অতিথির নাম দেশ মন্তব্য

১৯৫০ রাষ্ট্রপতি সুকর্ণ (ইন্দোনেশিয়া)
১৯৫১ রাজা ত্রিভুবন বীর বিক্রম শাহ (নেপাল)
১৯৫২ —
১৯৫৩ —
১৯৫৪ _ রাজা জিগমে দোরজি ওয়াংচুক (ভুটান)
১৯৫৫ _ গভর্ণর জেনারেল মালিক গোলাম মুহাম্মদ পাকিস্তান রাজপথে কুচকাওয়াজের প্রথম অতিথি
১৯৫৬ _ চ্যান্সেলর রাব বাটলার
প্রধান বিচারপতি কোতারো তানাকা (যুক্তরাজ্য
জাপান )
১৯৫৭ —
১৯৫৮ _ মার্শাল ইয়ে জিয়ান্‌য়িং (চিন )
১৯৫৯ —
১৯৬০ _ রাষ্ট্রপতি ক্লিমেন্ট ভোরোশিলভ (সোভিয়েত ইউনিয়ন)
১৯৬১ _ রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ (যুক্তরাজ্য )
১৯৬২ —
১৯৬৩ _ রাজা নরোদম সিহানুক (কম্বোডিয়া )
১৯৬৪ _ প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন (যুক্তরাজ্য)
১৯৬৫ _ খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী রানা আবদুল হামিদ (পাকিস্তান) ২য় আমন্ত্রণ
১৯৬৬ —
১৯৬৭ —
১৯৬৮ _ প্রধানমন্ত্রী আলেক্সেই কোসিগিন (সোভিয়েত ইউনিয়ন) ২য় আমন্ত্রণ
রাষ্ট্রপতি জোসিপ ব্রজ টিটো (যুগোস্লাভিয়া)
১৯৬৯ _ প্রধানমন্ত্রী টোডোর ঝিভকভ (বুলগেরিয়া)
১৯৭০ —
১৯৭১ _ রাষ্ট্রপতি জুলিয়াস নিয়েরেরে (তানজানিয়া)
১৯৭২ _ প্রধানমন্ত্রী সিউসাগুর রামগুলাম (মরিশাস )
১৯৭৩ _ রাষ্ট্রপতি মোবুটু সেসে সেকো জাইর
১৯৭৪ _ রাষ্ট্রপতি জোসিপ ব্রজ টিটো (যুগোস্লাভিয়া) ২য় আমন্ত্রণ
প্রধানমন্ত্রী সিরিমাভো বন্দরনায়িকে (শ্রীলঙ্কা)
১৯৭৫ _ রাষ্ট্রপতি কেনেথ কাউন্ডা (জাম্বিয়)
১৯৭৬ _ প্রধানমন্ত্রী জাক শিরাক (ফ্রান্স)
১৯৭৭ _ মুখ্য সচিব এডওয়ার্ড গিয়েরেক (পোল্যান্ড)
১৯৭৮ _ রাষ্ট্রপতি প্যাট্রিক হিলারি (আয়ারল্যান্ড)
১৯৭৯ _ প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম ফ্রেসার (অস্ট্রেলিয়া)
১৯৮০ _ রাষ্ট্রপতি ভালেরি জিস্কার দেস্তাঁ (ফ্রান্স) ২য় আমন্ত্রণ
১৯৮১ _ রাষ্ট্রপতি হোসে লোপেজ পোর্তিলো[ (মেক্সিকো )
১৯৮২ _ রাজা প্রথম জুয়ান কার্লোস (স্পেন)
১৯৮৩ _ রাষ্ট্রপতি শেহু শাগারি (নাইজেরিয়া)
১৯৮৪ _ রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক (ভুটান) ২য় আমন্ত্রণ
১৯৮৫ _ রাষ্ট্রপতি রাউল আলফোনসিন (আর্জেন্টিনা)
১৯৮৬ _ প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রিয়াস পাপান্দ্রিউ (গ্রিস)
১৯৮৭ _ রাষ্ট্রপতি অ্যালান গার্সিয়া (পেরু)
১৯৮৮ _ রাষ্ট্রপতি জুনিয়াস জয়বর্ধনে (শ্রীলঙ্কা) ২য় আমন্ত্রণ
১৯৮৯ _ সাধারণ সচিব গুঁয়েন ভান লিন (ভিয়েতনাম )
১৯৯০ _ প্রধানমন্ত্রী আনেরুদ জুগনাথ (মরিশাস) ২য় আমন্ত্রণ
১৯৯১ _ রাষ্ট্রপতি মাউমুন আবদুল গায়ুমমালদ্বীপ)
১৯৯২ _ রাষ্ট্রপতি মারিও সোয়ারেস (পর্তুগাল)
১৯৯৩ _ প্রধানমন্ত্রী জন মেজর (যুক্তরাজ্য) ২য় আমন্ত্রণ
১৯৯৪ _ প্রধানমন্ত্রী গো চক তং (সিঙ্গাপুর)
১৯৯৫ _ রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা (দক্ষিণ আফ্রিকা)
১৯৯৬ _ রাষ্ট্রপতি ফার্নান্দো হেনরিক কার্ডোসো (ব্রাজিল )
১৯৯৭ _ প্রধানমন্ত্রী বাসদেও পান্ডে (ত্রিনিদাদ ও টোবাগো)
১৯৯৮ _ রাষ্ট্রপতি জাক শিরাক (ফ্রান্স) ৩য় আমন্ত্রণ
১৯৯৯ _ রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব (নেপাল)
২০০০ _ রাষ্ট্রপতি ওলুসেগুন ওবাসাঞ্জো (নাইজেরিয়া) ২য় আমন্ত্রণ
২০০১ _ রাষ্ট্রপতি আবদেলাজিজ বুতেফ্লিকা (আলজেরিয়া)
২০০২ _ রাষ্ট্রপতি কাসাম উতীম ( মরিশাস) ৩য় আমন্ত্রণ
২০০৩ _ রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ খাতামি (ইরান)
২০০৪ _ রাষ্ট্রপতি লুইস ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা (ব্রাজিল) ২য় আমন্ত্রণ
২০০৫ _ রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক (ভুটান) ৩য় আমন্ত্রণ
২০০৬ _ রাজা আবদুল্লা বিন আবদুলাজিজ আল-সৌদ (সৌদি আরব)
২০০৭ _ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন (রাশিয়া) ৩য় আমন্ত্রণ
২০০৮ _ রাষ্ট্রপতি নিকোলা সার্কোজি (ফ্রান্স) ৪র্থ আমন্ত্রণ
২০০৯ _ রাষ্ট্রপতি নুরসুলতান নাজারবায়েভ (কাজাখস্তান)
২০১০ _ রাষ্ট্রপতি লী মিউং বাক (দক্ষিণ কোরিয়া)
২০১১ _ রাষ্ট্রপতি সুশিলো বামবাং যুধন্য (ইন্দোনেশিয়া) ২য় আমন্ত্রণ
২০১২ _ প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা (থাইল্যান্ড)
২০১৩ _ রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক (ভুটান)৪র্থ আমন্ত্রণ
২০১৪ _ প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে (জাপান )
২০১৫ _ রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা (যুক্তরাষ্ট্র) [যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আমন্ত্রিত রাষ্ট্রপতি]
২০১৬ _ রাষ্ট্রপতি ফ্রঁসোয়া ওলঁদ (ফ্রান্স) ৫ম আমন্ত্রণ
২০১৭ _ যুবরাজ মুহম্মদ বিন জৈদ আল নাহিয়ান (সংযুক্ত আরব আমিরাত )
২০১৮ _ সুলতান হাসসান আল-বলকিয়াহ (ব্রুনাই)।

—————————————————————-
[ তথ্যসূত্র – উইকিপিডিয়া ও Hidustan Times বাংলা। সংগৃহীত ও সম্পাদিত ]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *