Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ব‍্যর্থ স্বপ্ন || Samarpita Raha

ব‍্যর্থ স্বপ্ন || Samarpita Raha

আমাদের পাড়ায় লীলা আপার্টমেন্টে তলায় এত ভীড় কেন?ঐ ফ্ল্যাটে তো সুজয় থাকে ,ওকেই ফোন করি।ছাদে ঘুরছি,আর সুজয়কে ফোন করছি।বাবা জয়েন্টে ভাল র‍্যাঙ্ক করেছিস তাই ধরছিস না।আরে দুজনেআলাদা স্কুলের হতে পারি,কিন্ত্ত ছোট থেকে তুই যা যা কোচিনে পড়েছিস,আমিও তাই তাই কোচিনে পড়েছি,আমিও ভাল র‍্যাঙ্ক করেছি।আমরা দুজনেই যাদবপুরে পড়ব।ফোনটা ধরলো না।
তারপর ভাবলাম সুজয়ের মা কালকেই বললেন শোন রীমা,তুই সুজয়কে বলিস তো মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে।কেন কাকিমা ও কি নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাইছে।আরে না রে আমার ছেলে পদার্থ বিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়তে চাই।বল আমি আর তোর মা কত কষ্ট করেছি তোদের ভবিষ্যতের চিন্তা করে।তারপর কাকিমা গজগজ করতে করতে চলে যান।ছাদ থেকে নিচে নেমে নিজের কাজে মন দিই। কলিংবেলবাজে,দেখি,কাজের মেয়ে খনাদি।কি গো খনাদি আজ এত তাড়াতাড়ি এসেছ?তারপর তাকিয়ে দেখি পুলিশ।রীমা বলে কে আছো?আমি ভয় পেয়ে মা কে ডাকি।পুলিশদের ঘরে ডাকে।তুমি রীমা?হ্যাঁ। বলো ,সাতসকালে কেন সুজয়কে ফোন করেছিলে?আমি বলি ও তো আমার কোচিং এর বন্ধু তাই।তা কেন?আসলে ছাদে ঘুরছিলাম,তাকিয়ে দেখি সুজয়দের আপার্টমেন্টের নীচে কি ভীড়।তাই ফোন করেছিলাম,জানতে চাইছিলাম,কেন রে এত ভীড়।অবশ‍্য ও ফোন ধরে নি।তোমার সাথে কেমন বন্ধুত্ব।এখন আমি ছোট,ক‍্যারিয়ার নিয়ে ভাবছি।ও ওর মত ,আমি আমার মত।বাবা জিজ্ঞাসা করেন পুলিশকে কেন সুজয়ের কিছু হয়েছে?না আজ সকালে ও ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়েছে।আমি বলি তাহলে ও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাইনি।কাল কাকিমা আমায় যা যা বলেছিলেন সব বললাম।পুলিশ বলল একটা আঠারো বছরের ছেলে সাধারণত প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যা করে।বাবা তখন পুলিশকে বলেন আপনি তাই দুই আর দুই মিলে আমার নিরীহ মেয়েকে জড়িয়ে পাঁচ করছেন।না না শেষ ফোন আপনার মেয়ে করেছে।মা এতক্ষণ চুপ ছিলেন।সুজয় কি আমার মেয়ে ফোনের পরেই মারা গেছে?না না ও ভোর পাঁচটায় ঝাঁপ দিয়েছে।শুনুন তাহলে আমার মেয়ে সুজয় মারা গেছে কিনা জানতে ফোন করেছে?
না না ও মারা যায় নি।মারাত্মক জখম।নমস্কার জানিয়ে পুলিশ চলে যায়।যাবার সময় পুলিশ বলে,কত র‍্যাঙ্ক হল।আমি বললাম যাদবপুরে ভর্তি হব।পুলিশ তো মাথায় হাত দিয়ে চলে গেল।মা এসে ঠাস করে এক চড়।সকালে ছাদে হাঁটতে গিয়ে কিসের জন‍্য আমার ফোন দরকার।বাবা মা কে বললেন ,ঐ ছেলেটা মায়ের অত‍্যাচারে ঝাঁপিয়েছে।পড় পড় করে শেষ করল।এবার বাঁচলেও মষ্তিষ্কে কোন চাপ নিতে পারবে কিনা সন্দেহ।তুমি আর সুজয়ের মা সব সমান।
আমি বলি বাবা এটা মা আর আমার ব‍্যাপার।যাও মা রা সন্তানদের ভালোর জন্য বলে।কোন মা চান না ছেলে মেয়ের ক্ষতি হোক।

২য় পর্ব

আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে ,এম বি এ করে রাঁচিতে ভাল কম্পানিতে চাকরি করছি,হঠাত দেখি কাকু আর কাকিমা,ঐ সুজয়ের মা আর বাবা।
আমি গাড়ি থেকে নামতেই কাকিমা আদর করে বললেন রীমা তুই এখানে।তারপর জোর করে ওনাদের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান।কাকিমা কত বছর এখানে।সুজয় কোথায়?তাকিয়ে দেখি সুজয়ের গলায় মালা ঝুলছে।আসলে যা বুঝলাম ও পাগল হয়ে গেছিল।রাঁচি হাসপাতালে এসে গত পরশু ঝাঁপ দেয়,এবার পুরো শেষ।এইভাবে হাসপাতাল,আর বাড়ি করে পাঁচ বছর হল।কাকিমা বললেন ,কাল সুজয়েরর কাজে আসিস।আসব বলে চলে এলাম।

৩য় পর্ব

তারপর বহু বছর,ছেলে বর সংসার নিয়ে আমার কোলকাতায় ব‍্যস্ত জীবন।বাবা ও মা মারা গেছেন।কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝেই একটা বৃদ্ধাশ্রমে যেতাম।ওই বিধবা বুড়িটা সুজয়ের মা তো।কাকিমা তুমি।সুজয়ের কাজে এলি না মা।আমার কেউ নেই রে,মাঝে মাঝে আসিস।
তুমি কদিন আমার বাড়ি বেড়াতে যাবে।তুই এখানে অনুমতি নে,তাহলে শুক্রবার যাব,রবিবার ফিরব।কোন কারণে আমি শুক্রবার যেতে পারি নি।শনিবার যায় কাকিমাকে আনতে।গিয়ে শুনি উনি গতকাল মারা গেছেন।

আমার রথ চলছে,এখন আমার যুদ্ধ চলছে ছেলে,বর সংসার নিয়ে।আমরাও বুড়ি হব,আমরাও পরপারের ডাক পেয়ে সবাই চলে যাব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress