Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ছলনার ছন্দ – ব্যোমকেশ বক্সী || Sharadindu Bandyopadhyay » Page 2

ছলনার ছন্দ – ব্যোমকেশ বক্সী || Sharadindu Bandyopadhyay

ব্যোমকেশরা প্ৰায় মাস ছয়েক হলো কেয়াতলার নতুন বাড়িতে এসেছে। বাড়িটি ছোট‌, কিন্তু দোতলা। নীচে তিনটি ঘর‌, ওপরে দু’টি। সত্যবতী এই বাড়িটি নিয়ে সারাক্ষণ যেন পুতুল খেলা করছে। আনন্দের শেষ নেই; এটা সাজাচ্ছে‌, ওটা গোছাচ্ছে‌, নিজের হাতে ঝাঁট দিচ্ছে‌, ঝাড়-পোছ করছে। ব্যোমকেশ কিন্তু নির্বিকার‌, শালগ্রামের শোয়া-বসা বোঝা যায় না।

পরদিন বিকেলবেলায় ব্যোমকেশ তার বসবার ঘরের জানলায় দাঁড়িয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিল‌, দেখছিল লাল কোট পরা কোনো লোক চোখে পড়ে কি না। কয়েকটি লাল শাড়ি পরা মহিলা গেলেন‌, দু’ একটি লাল ফ্রক পরা খোকাথুকিকেও দেখা গেল‌, কিন্তু লাল কোট পরা বয়স্থ পুরুষ একটিও দৃষ্টিগোচর হলো না। অনুমান হয় আজকাল লাল কোট পরে কোনো পুরুষ কলকাতার রাস্তায় বেরোয় না।

এই সময় টেলিফোন বাজল। রাখালবাবু বললেন–’ব্যোমকেশদা‌, মামলার রায় পেয়েছি। পড়ে দেখলাম আমাদের কাজে লাগতে পারে এমন কিছু নেই। পিওনের হাতে পাঠিয়ে দিচ্ছি‌, আপনি পড়ে দেখুন।’

আধা ঘণ্টা পরে থানা থেকে কনস্টেবল এসে রায় দিয়ে গেল। আলিপুর আদালতের জজ সাহেবের রায়‌, কড়া সরকারী কাগজে বাজাপ্ত নকল। পনেরো-ষোল পৃষ্ঠা। ব্যোমকেশ সিগারেট ধরিয়ে পড়তে বসল।

রায়ের আরম্ভে জজ সাহেব ঘটনার বয়ান করেছেন। তারপর সাক্ষী-সাবুদের আলোচনা করে দণ্ডাজ্ঞা দিয়েছেন। রায়ের সারাংশ এই;

‘আসামী নরেশ মণ্ডল, বয়স ৩৯। Scrap Iron & Steel Factory Ltd. নামক লোহার কারখানায় কাজ করে। অপরাধ–রাস্তায় একজন ভিক্ষুককে খুন করিয়াছে। পিনাল কাডের ৩০৪/৩২৩ ধারা অনুযায়ী দায়রা সোপর্দ হইয়াছে।

‘প্রধান সাক্ষী গঙ্গাপদ চৌধুরী এবং অন্যান্য সাক্ষীর এজাহার হইতে জানা যায় যে‌, আসামী অত্যন্ত বদরাগী ও কলহপ্ৰিয়। ঘটনার দিন বিকাল আন্দাজ পাঁচটার সময় আসামী নরেশ মণ্ডল ও সাক্ষী গঙ্গাপদ চৌধুরী একসঙ্গে কর্মস্থল হইতে বাসায় ফিরিতেছিল। দু’জনে পূবেক্তি লোহার কারখানায় কাজ করে‌, গঙ্গাপদ চৌধুরী নরেশ মণ্ডলের সহকারী।

‘পথ চলিতে চলিতে বাজারের ভিতর দিয়া যাইবার সময় নরেশ সামান্য কারণে গঙ্গাপদর সঙ্গে ঝগড়া জুড়িয়া দিল; তখন গঙ্গাপদ তাহার সঙ্গে সঙ্গে না গিয়া পিছাইয়া গেল; নরেশ আগে আগে চলিতে লাগিল‌, গঙ্গাপদ তাহার বিশ গজ। পিছনে রহিল।

‘এই সময় একটা কোট-প্যান্ট পরা মাদ্রাজী ভিক্ষুক নরেশের পিছনে লাগিল‌, ভিক্ষা চাহিতে চাহিতে নরেশের সঙ্গে সঙ্গে চলিল। ভিক্ষুকটার চেহারা জীৰ্ণ শীর্ণ‌, কিন্তু সে ইংরাজিতে কথা বলে। বাজারে অনেকেই তাহাকে চিনিত।

‘গঙ্গাপদ তাঁহাদের পিছনে যাইতে যাইতে দেখিল‌, নরেশ ক্রুদ্ধভাবে হাত নাড়িয়া তাহাকে তাড়াইবার চেষ্টা করিতেছে‌, কিন্তু ভিক্ষুক তাহার সঙ্গ ছাড়িতেছে না। তারপর হঠাৎ নরেশ পাশের দিকে ফিরিয়া ভিক্ষুকের ‘গালে সজোরে একটা চড় মারিল। ভিক্ষুক রাস্তার উপর পড়িয়া গেল। নরেশ আর সেখানে দাঁড়াইল না‌, গট গঢ় করিয়া চলিয়া গেল।

‘গঙ্গাপদ বিশ গজ। পিছন হইতে সবই দেখিয়াছিল‌, সে তাড়াতাড়ি আসিয়া দেখিল ভিক্ষুক অনড় পড়িয়া আছে; তারপর তাহার নাড়ি টিপিয়া দেখিল সে মরিয়া গিয়াছে। ডাক্তারের রিপোর্ট থেকে জানা যায় তাহার প্রাণশক্তি বেশি ছিল না‌, অল্প আঘাতেই মৃত্যু হইয়াছে।

‘ইতিমধ্যে আরও অনেক লোক আসিয়া জুটিয়াছিল; তাহাদের মধ্যে কেহ কেহ নরেশকে চড় মুক্তি দেখিয়াছিল। তাহারা পুলিস খবর দিল। পুলিস নরশেরর বাসায় গিয়া তাহাকে প্রেপ্তার করিল।

‘পুলিসের পক্ষে এই মামলায় যাহারা সাক্ষী দিয়াছে তাহারা সকলেই নিরপেক্ষ‌, কেবল গঙ্গাপদ ছাড়া। আসামী অপরাধ অস্বীকার করিয়াছে; তাহার বক্তব্য–গঙ্গাপদ তাহার শত্ৰু‌, তাহাকে সরাইয়া কর্মক্ষেত্রে তাহার স্থান অধিকার করিতে চায়; তাই সে মিথ্যা মামলা সাজাইয়া তাহাকে ফাঁসাইয়াছে।

‘এ কথা সত্য যে সাক্ষী গঙ্গাপদ নিঃস্বাৰ্থ ব্যক্তি নয়; কিন্তু অন্য সাক্ষীদের সঙ্গে তাহার এজাহার মিলাইয়া দেখিলে স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে‌, গঙ্গাপদর সাক্ষ্য মিথ্যা নয়।

‘এ অবস্থায় আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করিয়া অনিচ্ছাকৃত হত্যার জন্য ৩০৪ ধারা অনুসারে ৩ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড ধাৰ্য হইল।’

ব্যোমকেশের রায় পড়া যখন শেষ হলো তখন সন্ধ্যা নেমেছে‌, ঘর অন্ধকার হয়ে গেছে। ব্যোমকেশ অনেকক্ষণ অন্ধকারে চুপ করে বসে রইল‌, তারপর আলো জেলে টেলিফোন তুলে নিল–

‘রাখাল! রায় পড়লাম।’

‘কিছু পেলেন?’

‘একটা রাগী মানুষের চরিত্র পেলাম।’

‘তাহলে রায় পড়ে কোনো লাভ হলো না?’

‘বলা যায় না।—যেখানে দেখিবে ছাই‌, উড়াইয়া দেখ তাই‌, পাইলে পাইতে পার লুকানো রতন।’

‘তা বটে।’

‘ভাল কথা‌, পোড়ো বাড়িতে যে আঙুলের ছাপ পাওয়া গিয়েছিল তার ফটো নেওয়া হয়েছে?’

‘হয়েছে।’

‘গঙ্গাপদ চৌধুরীর পাত্তা পাওয়া যায়নি?’

‘না। ভারত ভ্রমণের যত স্পেশাল ট্রেন আছে তাদের অফিসে খোঁজ নিয়েছিলাম। কিন্তু গঙ্গাপদ চৌধুরী নামে কোনো যাত্রীর নাম নেই।’

‘হুঁ। হয়তো ছদ্মনামে গিয়েছে।’

‘কিংবা যায়নি। কলকাতাতেই কোথাও লুকিয়ে বসে আছে।’

‘তাও হতে পারে। আর কোনো নতুন খবর আছে?’

‘এইমাত্র মীরাট থেকে ‘তার’ এসেছে। অশোক মাইতি খাঁটি মীরাটের লোক। ওখানে কোনো জাল-জুচ্চুরি নেই।’

‘ভাল; আর কিছু।’

‘নতুন খবর আর কিছু নেই। এখন কর্তব্য কি বলুন!’

‘কর্তব্য কিছু ভেবে পাচ্ছি না। একটা কথা। নরেশের জেলের মেয়াদ এতদিনে ফুরিয়ে আসার কথা‌, সে জেল থেকে বেরিয়েছে কিনা খবর নিতে পোর?’

‘পারি। কাল সকালে খবর পাবেন।’

পরদিন বেলা ন’টার সময় রাখালবাবু ব্যোমকেশের কাছে এলেন। মুখ গম্ভীর। বললেন–‘ব্যাপার গুরুতর। দেড়মাস আগে নরেশ মণ্ডল জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। জেলে ভাল ছেলে সেজে ছিল তাই কিছু দিনের রেয়াত পেয়েছে।’

ব্যোমকেশ বলল–’হুঁ। জেল থেকে বেরিয়ে সে কোথায় গেছে সন্ধান পেয়েছ?’

‘তার পুরোনো বাসায় যায়নি। কারখানাতেও যায়নি‌, কাল রতনলাল কাপড়িয়ার মুখে তা জানতে পেরেছি। সুতরাং সে ডুব মেরেছে।’

ব্যোমকেশ একটু চুপ করে থেকে বলল–‘ব্যাপারটা এখন পরিষ্কার হচ্ছে। নরেশের মনে যদি পাপ না থাকবে তাহলে সে ডুব মারবে কেন? সে রতনলালের কাছে গিয়ে চাকরিটা আবার ফিরে পাবার চেষ্টা করত।’

‘আমারও তাই মনে হয়।’

‘গল্পটা এখন কালানুক্রমে সাজানো যেতে পারে।–নরেশ মণ্ডল রাগী এবং ঝগড়াটে‌, গঙ্গাপদ মিটমিটে শয়তান। দু’জনে এক কারখানায় কাজ করত; দু’জনের মধ্যে খিটিমিটি লেগেই থাকত। গঙ্গাপদর মতলব নরেশকে সরিয়ে নিজে তার জায়গায় বসবে। কিন্তু নরেশকে সরানো সহজ নয়‌, সে কাজের লোক।

‘হঠাৎ গঙ্গাপদ সুযোগ পেয়ে গেল। নরেশ রাস্তায় একটা ভিখিরিকে চড় মেরে শেষ করে দিল। আর যায় কোথায়! গঙ্গাপদ নরেশকে ফাঁসিকাঠে ঝোলাবার জন্যে উঠে-পড়ে লাগল।

‘নরেশের কিন্তু ফাঁসি হলো না। সে দোষী সাব্যস্ত হলেও তার তিন বছর কারাদণ্ড হলো। গঙ্গাপদর পক্ষে একটা মন্দের ভাল‌, সে কারখানায় সদর মোল্টার হয়ে বসল। নরেশ জেলে গেল।

নিরেশ লোকটা শুধু বদমেজাজী নয়‌, সে মনের মধ্যে রাগ পুষে রাখে। জেলে যাবার সময় সে বোধ হয় প্রতিজ্ঞা করেছিল‌, গঙ্গাপদকে খুন করে প্রতিহিংসা সাধন করবে। তিন বছর ধরে সে এই প্রতিহিংসার আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে।

‘গঙ্গাপদ জানত নরেশের তিন বছরের জেল হয়েছে‌, সে তঙ্কেতকে ছিল। তাই নরেশ যখন মেয়াদ ফুরবার আগেই জেল থেকে বেরুল‌, গঙ্গাপদ জানতে পারল। তার প্রাণে ভয় ঢুকল। হয়তো সে দেখেছিল নরেশ তার বাসার আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিংবা সামনের পোড়ো বাড়ি থেকে উকিঝুকি মারছে। গঙ্গাপদ ঠিক করল কিছুদিনের জন্যে বাসা থেকে উধাও হবে।

‘সে কারখানা থেকে একমাসের ছুটি নিল এবং একটা দাড়ি যোগাড় করে তাই পরে ঘুরে বেড়াতে লাগল‌, যাতে নরেশ তাকে দেখলেও চিনতে না পারে। গঙ্গাপদ বোধহয় সত্যিই ভারত ভ্বমণে যাবার মতলব করেছিল‌, তারপর হঠাৎ একদিন হাওড়া স্টেশনে অশোক মাইতির সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। সে দেখল। অশোক মাইতির চেহারা অনেকটা তার নিজের মত।

‘গঙ্গাপদ লোকটা মহা ধূর্ত। তার মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল‌, অশোক মাইতিকে যদি কোনোমতে নিজের বাসায় এনে তুলতে পারে তাহলে নরেশ ভুল করে তাকেই খুন করবে এবং ভাববে‌, গঙ্গাপদকে খুন করেছে। গঙ্গাপদ নিরাপদ হবে‌, তাকে আর প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে না। চাকরিটা অবশ্য যাবে; কিন্তু প্ৰাণ আগে‌, না চাকরি আগে? গঙ্গাপদ নিশ্চয় বুঝেছিল যে‌, নরেশ তাকে সামনের জানলা থেকে গুলি করে মারবে।

‘এবার নরেশের দিকটা ভেবে দেখা যাক। নরেশ জেল থেকে বেরিয়ে একটা পিস্তল যোগাড় করেছিল। পুরোনো বাসায় ফিরে যাবার কোনো মনে হয় না‌, সে অন্য কোথাও আড়া গেড়েছিল এবং গঙ্গাপদর বাসার সামনে পোড়ো বাড়িটায় যাতায়াত করেছিল। তার বোধ হয় মতলব ছিল গঙ্গাপদ কখনো তার জানলা খুলে দাঁড়ালে সে রাস্তার ওপর থেকে তাকে গুলি করে মারবে‌, তারপর কলকাতা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাবে। গঙ্গাপদ খুন হবার পর কলকাতা শহর আর তার পক্ষে নিরাপদ নয়‌, পুলিস তাকে সন্দেহ করতে পারে।

‘যাহোক‌, গঙ্গাপদ অশোক মাইতিকে নিজের বাসায় বসিয়ে লোপাট হলো। অশোক মাইতিকে উপদেশ দিয়ে গেল‌, সে যেন মাঝে মাঝে জািনলা খুলে লক্ষ্য করে‌, রাস্তা দিয়ে লাল কোট পরা কেউ যায় কি না। লাল কোট পরা মানুষটা নিছক কল্পনা; আসল উদ্দেশ্য অশোক মাইতি জানিলা খুলে দাঁড়াবে এবং নরেশ সামনের জানলা থেকে তাকে গুলি করবে।

‘সবই ঠিক হয়েছিল। কিন্তু একটা চুক হয়ে গেল; অশোক মাইতি আহত হলো‌, মরাল না। সে পুলিসকে সব ঘটনা বলল। এখন গঙ্গাপদ আর নরেশ দু’জনের অবস্থাই সমান‌, ওরা কেউ আর আত্মপ্রকাশ করতে পারে না। খবরের কাগজে সংবাদ ছাপা হয়েছে‌, দু’জনকেই পুলিস খুঁজে বেড়াচ্ছে।

নিরেশ অবশ্য আইনত অপরাধী‌, সে খুন করবার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু গঙ্গাপদ লোকটা মহা পাষণ্ড; জেনেশুনে সে একজন নিরীহ লোককে অনিবাৰ্য মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল। কিন্তু সে যদি ধরাও পড়ে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে কি না সন্দেহ।’

ব্যোমকেশ চুপ করল। রাখালবাবুও নীরবে কিছুক্ষণ টেবিলের ওপর আঙুল দিয়ে আকিজোক কেটে বললেন–‘তা যেন হলো। কিন্তু যাকে আইনত শাস্তি দেওয়া যাবে তাকে ধরবার উপায়। কি বলুন!’

আবার খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে ব্যোমকেশ বলল–’একমাত্র উপায়–বিজ্ঞাপন।’

‘বিজ্ঞাপন!’

‘হ্যাঁ।–পুকুরে ছিপ ফেলে বসে থাকা। মাছ যদি টোপ গেলে তবেই তাকে ধরা যাবে।’

তিন দিন পরে কলকাতার দুইটি প্রধান সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন বেরুল :
বম্বে স্টীল ফাউন্ড্রি লিমিটেড–
আমাদের বম্বের কারখানার জন্য অভিজ্ঞ ইলেকট্রিক মেল্টার চাই।
বেতন-৭০০-২৫-১০০০্‌।
প্রশংসাপত্র সহ দেখা করুন।

Pages: 1 2 3

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *