কড়ি দিয়ে কিনলাম (Kari Diye Kinlam) : প্রথম খণ্ড – ভূমিকা
ছোটবেলায় আমার প্রিয় গ্রন্থ ছিল রামায়ণ। বলতে গেলে গল্পে সেই আমার প্রথম পাঠ। গল্পের রস যে কত গম্ভীর হতে পারে, তা সেদিন চোখের জলের সঙ্গে যেমন করে হৃদয়ঙ্গম করেছিলাম, তারপরে আর কোনও গ্রন্থ পড়ে তা করিনি।
এ তো গেল গল্পের দিক। গল্প যতক্ষণ পড়ি ততক্ষণই তার রস। পর মুহূর্তেই গল্পের আবেদন হালকা হয়ে আসে। কিন্তু গল্পের উর্ধ্বে আর একটি তীব্রতর এবং গভীরতর আবেদন আছে যা পড়বার সঙ্গে সঙ্গে নিঃশেষ হয় না। যা জীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে থাকে। যা জীবনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। যা জীবনের অগ্রগতিতে সাহায্য করে। রামায়ণ সেই জাতীয় গল্প যা যুগ থেকে যুগান্তরে প্রসারিত হয়ে জীবনকে জাগ্রত করে। জীবনকে পুনর্জীবন দান করে।
বড় হয়ে দেখছি রামায়ণ শুধু অসার কবি-কল্পনা নয়। এই বর্তমান সংসার জীবনেরও হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ রাম সীতা রাবণ আপন মহিমায় বিরাজমান। অযোধ্যা আর লঙ্কা শুধু ভৌগোলিক নাম মাত্রই নয়-কলকাতা শহরের মধ্যেই তাদের অবস্থিতি। এই কলকাতায় এ-যুগেও সীতাহরণ হয়। এ-যুগেও সীতার বনবাস হয়। এবং এই বিংশ শতাব্দীতেও সীতার পাতাল-প্রবেশ হয়।
অনেক দিনের কল্পনা ছিল রামায়ণের গল্প নিজের ভাষায় লিখবো। তা আর হলো না। হলো ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’। ইতি–