Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » আসামের সেই মনোমুগ্ধকর গ্রাম || Pallav Sanyal

আসামের সেই মনোমুগ্ধকর গ্রাম || Pallav Sanyal

আসামের সেই মনোমুগ্ধকর গ্রাম

আসামের এক ছোট্ট গ্রাম, যার নাম ছিলো মাধবপুর। চারপাশে পাহাড় আর ঘন সবুজ বনানীতে মোড়া এই গ্রামটি ছিল প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের আধার। গ্রামের এক কোণে ছিলো একটি বিশাল পুকুর, যার চারপাশে সারি সারি সুপুরি গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিলো। পুকুরের পানিতে নীরবতা আর শান্তির আভাস। পুকুরটিতে চাষ হতো রুই, কাতলা, এবং আরও নানা ধরনের মাছ। এই পুকুরটিই যেন গ্রামের প্রাণ।

এক বিকালে আমি এই গ্রামে ঘুরতে গিয়েছিলাম। শহরের কোলাহল ছেড়ে যখন গ্রামে পা রাখলাম, তখন মনে হলো যেনো সময় থমকে গেছে। সুপুরি গাছের ছায়ায় বয়ে যাওয়া হালকা হাওয়ার সঙ্গে মিশে ছিলো পাখির কূজন। গ্রামের মানুষগুলোর সরল জীবনযাপন আর তাদের মিষ্টি হাসি আমাকে মুগ্ধ করেছিলো।

হঠাৎ, পুকুরের পাড়ে হাঁটতে হাঁটতে একটি মেয়ে চোখে পড়ল। সে সুপুরি গাছের নিচে বসে পুকুরের জলে পা দুলিয়ে বসেছিলো। মেয়েটির নাম ছিলো ইলা। তার লম্বা চুল বাতাসে খেলা করছিলো, আর তার চোখে ছিলো অদ্ভুত এক গভীরতা। মনে হলো, প্রকৃতি যেন তার সঙ্গে কথা বলছে। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো তার দিকে এগিয়ে গেলাম।

“তুমি এখানকার মানুষ?” আমি জিজ্ঞেস করলাম।
ইলা হেসে বলল, “হ্যাঁ। এই গ্রামেই বড় হয়েছি। আর তুমি?”
“আমি পর্যটক। এই গ্রামের সৌন্দর্য দেখতে এসেছি। কিন্তু তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে, প্রকৃতির চেয়েও সুন্দর কিছু দেখছি।”

ইলার গাল লাল হয়ে গেলো। আমরা পুকুরপাড়ে বসে গল্প করতে লাগলাম। ইলা বলল, এই পুকুর তাদের পরিবারের। তার বাবা মাছ চাষ করেন, আর ইলা প্রায়ই এখানে বসে বই পড়ে। তার চোখে ছিলো গ্রামের প্রতি গভীর ভালোবাসা।

দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এল। পুকুরের পানিতে চাঁদের আলো ঝিলমিল করছিলো। আমরা একসঙ্গে পুকুরপাড়ে বসে সেই দৃশ্য উপভোগ করছিলাম। ইলা হঠাৎ বলল, “জানো, আমি বিশ্বাস করি, প্রকৃতি আর ভালোবাসা দুটোই একই রকম। তারা যেমন নিঃস্বার্থ, তেমনি চিরন্তন।”

আমি তার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলাম। মনে হলো, এই গ্রাম, এই পুকুর, আর ইলার সঙ্গে আমার দেখা হওয়াটাই যেন এক পূর্বনির্ধারিত ঘটনা। সেই সন্ধ্যায় আমরা একে অপরের প্রতি গভীর অনুভূতি ভাগ করে নিলাম।

এরপর থেকে, আমি প্রায়ই মাধবপুরে যেতাম। ইলার সঙ্গে সময় কাটাতাম, প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতাম। আমাদের ভালোবাসা ধীরে ধীরে গভীর হতে লাগলো।

একদিন, পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ইলা বলল, “তুমি কি চিরকাল এই গ্রামে থাকবে? এই পুকুর, এই গাছ, আর আমাকে নিয়ে?”
আমি তার হাত ধরে বললাম, “তুমি যদি চাও, আমি এই গ্রামেই থেকে যাবো। কারণ তুমি আর এই গ্রাম আমার জীবনের নতুন গল্পের শুরু।”

গ্রামের সেই বিকেল আর ইলার মিষ্টি হাসি আমার হৃদয়ে গভীর ভালোবাসার গল্প রচনা করেছিলো, যা চিরকাল আমার স্মৃতিতে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *