Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » অমূল্য রত্ন তুই এক টাকা || Maya Chowdhury

অমূল্য রত্ন তুই এক টাকা || Maya Chowdhury

অমূল্য রত্ন তুই এক টাকা

ঘড়িতে সাড়ে দশটা।রোজের মতই ডগিকে খাইয়ে শ্রীপর্ণা চাকরীর উদ্দেশ্যে রওনা দিল। পথের মাঝে অনেকেই চেনা, হাসিমুখে একটু সাড়া দেওয়ার অভ্যাস ছেলে বেলা থেকে। হঠাৎ মনে পড়ল ৫০০ টাকার নোটটা খুচরো করতে হবে। পরিচিত একজনকে তিনশো টাকা শোধ করে, দুশো টাকা নিয়ে অটোর উদ্দেশ্যে দৌড়াতে লাগলো।অটো স্ট্যান্ডে হাঁপাতে হাঁপাতে গেলেও তল পায় না কোনটা ছাড়বে। এ দেখায় ওকে সে দেখায় তাকে। প্রথমটা এভাবে মিস করে দ্বিতীয়তে বসা।
– – কিছু রাস্তা আসার পর মানিব্যাগ খুলে দেখে দুশো টাকার নোট। ছিঃ ছিঃ, মাত্র দশ টাকা ভাড়া। কীভাবে সে খুচরো দেবো এই চিন্তা হতে লাগলো। আরেকজন উঠেছেন দুজন যাবেন দুশো টাকার নোট।
– – ঈশ্বর, আমি কীভাবে ভাড়া মেটাবো’- ভাবতে লাগলো শ্রীপর্ণা।
– – ব্যস্ত সময়। ভীষণ লজ্জায় পড়ে গেল সে। খুচরোর কত মূল্য উপলব্ধি করলো।
– দুটো ব্যাগ ঘেঁটে নয় টাকা পাওয়া গেল। আর এক টাকা কিভাবে পাবে। দুশ্চিন্তায় ঘাম বের হতে লাগলো।
– স্টেশনে পৌঁছে দুশো টাকা সংকোচে ড্রাইভারকে এগিয়ে দিলে সে চিৎকার করে ওঠে। এই অপমান টাকেই ভয় পাচ্ছিল শ্রীপর্ণা। কিন্তু উপায় কোথায়। ভুলতো তার নিজের। কেন সে ব্যাগে খুচরো পয়সা ফেলে রাখে নি। আজকাল টাকা অপেক্ষা খুচরোর মূল্য বেশি।
– – মুখ কাচুমাচু করে দাঁড়িয়ে আছে শ্রীপর্ণা। উপায় যে তার নেই। এক টাকা কম আছে অতএব তাকে অপমান সহ্য করতেই হবে।
– – অফিস যাত্রীরা বিরাট লাইন দিয়ে রয়েছেন। তাদেরও দেরি হয়ে যাচ্ছে। একটা বিরাট চিৎকার এল। ‘এবার ছাড়ুন আর কতক্ষণ’।
– – সারা শরীরে ঘাম আরও বেড়ে যেতে লাগলো। মুখটা তারএকেবারে শুকিয়ে গেছে। হে ভগবান এক টাকা পাইয়ে দাও। নইলে যে মান যাচ্ছে।
– অবশেষে এক টাকা পাওয়ার কোন অবকাশ রইল না। ড্রাইভার ভাই বললেন ঠিক আছে আমাকে এখন নয় টাকা দিন।
– সুপর্ণা জানালো আপনার গাড়ির নম্বর টা দেখে নিচ্ছি আপনাকে এক টাকা দিয়ে দেব।
– দেখুন কি করবেন যদি বেঁচে থাকি এক টাকা দিয়ে দেবেন মনে করে- ড্রাইভার ভাইয়ের সদুক্তি।
– সুপর্ণার মুখটা একেবারে কাচুমাচু। কত টাকা তো একে ওকে দিয়ে দেয়। কোনদিন এত ভাবে না। আজ একটাকা ওকে ভীষণ কষ্ট দিল।
– সুপর্ণা সারা রাস্তা ভাবতে ভাবতে পথ চলল। কত ছেলে মেয়েরা তো ওর কাছে পড়তে এসেছে। কার বাবা অটো চালান, কেউ রিক্সা ,কেউ সামান্য রোজগার করেন। বিনা পয়সায় অনেক কাউকে পড়িয়েছে আজ অবধি। কেউ কেউ মাইনা দিলেও সেটা অর্ধেক দিত। এমনকি তার এনজিও করা সাধারণ মানুষদের জন্য।
– অথচ এক টাকার মূল্য কত অপরিসীম। যা সহজে একটা মানুষকে ছোট হয়ে যেতে সাহায্য করে। এটা থেকে সে শিক্ষা নিল, এক টাকাকে জীবনে বেশি মূল্য দিতে হবে। না হলে এভাবে হোঁচট খেতে হবে।
– – টাকা অপেক্ষা খুচরোর মূল্য সে বুঝতে পারল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress