স্বামীর চিতায় সহমরণেই পুণ্যের সঞ্চার,
জীবন্ত চিতা-দগ্ধ শরীর ,বুকফাটা হাহাকার।
ঢাকের বাদ্য ধূপের ধোঁয়ায় ভয়ে ভীত বধূ চঞ্চল,
লেলিহান শিখা গ্রাস করে নেয় সতী মার স্নেহ অঞ্চল।
মহিমান্বিত গৌরবময় সে সতী-গাথার কীর্তনে,
অগ্নি-দগ্ধ ক্রন্দসী মুখ চাপা পড়ে বীর নর্তনে।
তেল ও সিঁদুরে মাখামাখি মুখ গলায় জবার মালা,
ভীত সন্ত্রস্ত বলির পাঁঠায়,মন বলে “ছুটে পালা। “
আধপোড়া দেহ,ঝলসানো মুখ ছুটে চায় চলে যেতে ,
অগ্নিদগ্ধ চিতাকাঠ ছুঁড়ে তেড়ে আসে সকলেতে।
পিটিয়ে পিটিয়ে পুড়িয়ে ঝড়িয়ে শ্রান্ত ক্লান্ত রব,
বাজনদারের বাজনা থেমেছে থেমে গেছে উৎসব।
সবল হস্ত করে সমস্ত সতীরে যে উৎক্ষিপ্ত,
সতীর সুবাসে আপামর জনে গৌরবে অভিষিক্ত।
জ্বলন্ত-চিতা জেগে রয় বুকে সতীর স্বর্গারোহণ,
ক্ষোভে-রাগে ফেটে পড়লেন যিনি, তিনি যে রামমোহন।
দেশের ভাগ্য রচে গেছে নারী হোমাগ্নিসম্ভূতা,
অসহ্য এই নারীনিধনের লাঞ্ছনা কথকতা।
শাস্ত্র প্রজ্ঞা, অধ্যবসায়, কঠিন জেদের বলে,
সতীদাহ প্রথা বন্ধ হয়েছে তাঁর প্রয়াসের ফলে।