Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামু চাকরের কেরামতি || Saswati Das

রামু চাকরের কেরামতি || Saswati Das

রামু চাকরের কেরামতি

মাধববাবুর বাড়ির নতুন চাকর রামু, ওটা একটা পাক্কা চোর। সে সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। কখন কি হাত সাফই করবে। অথচ মুখে সব সময় মিষ্টি মিষ্টি কথা। রামুই আজকাল মাধববাবুর বাড়ির গরুগুলোর দেখাশোনা করে, দুধ দোয়ায়।
রামু আসার পর থেকে গরুর দুধ এখন রোজই পাতলা হোচ্ছে। মাধববাবু রামুকে একদিন ডেকে জিজ্ঞেস করলেন
” হ্যাঁ রে রামু আজকাল দুধ এতো পাতলা হচ্ছে কেন?”
“আজ্ঞে বাবু, আমিতো রোজ সকালে গরুগুলোকে ভালো করে চান করাই, তার পর মাঠে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যাই; সারা দিন রোদে তেঁতেপুড়ে গরুগুলো ঘাস খায় তো, তাই বালতি করে ওদের অনেক  জল খাওয়াই, তাই মনে হয় দুধ পাতলা হচ্ছে।”
“হ্যাঁ, তা তুই ঠিক বলেছিস। আগের চাকরটা তো গরুগুলোকে একটুও যত্ন করতো না।তুই ওদের খুব যত্ন করিস।”
“আজ্ঞে বাবু আপনার নুন খাচ্ছি,আপনার গরুর এইটুকু সেবা করবো না, তা কি হয়?”
গরুর দুধ দোয়ানো হয়ে গেলে রামু আগেই বালতিতে অনেকটা দুধ সরিয়ে রাখতো। আর বাকি দুধে জল মিশিয়ে মালিকের হাতে তুলে দিতো।রামু যখন মাঠে গরু চরাতে নিয়ে যেত তখন ওই বালতির দুধ বাড়ি বাড়ি বিক্রি করে আসতো। এই কথা মাধববাবু বা তার বাড়ির লোক ঘুনাক্ষরেও টের পায় নি।
একদিন একজন লোক মাধববাবুর সাথে দেখা করতে ওনার বাড়ি এসেছে, রামুকে দেখে মাধববাবুকে জিজ্ঞেস করলো
“এই লোকটা কি আপনার বাড়িতে থাকে?”
“হ্যাঁ ও তো আমার গরুর দেখাশোনা করে। খুব ভালো ছেলে।ওর জন্যই গরু গুলো এখন যত্ন পায়।”
” ও। তা আপনি এখন দুধের ব্যবসা করছেন তা তো জানতাম  না ?
“না না আমি কেন…”
“আরে তাতে কি হয়েছে! এই ব্যাবসায় নেমে আপনি ভালোই করেছেন, আর আপনার এই ছেলেটাও কিন্তু খুব সৎ। দুধটা খুব ভালো দেয় একটুও জল মেশায় না। এতো গাঢ় দুধ আমরা আগে কখনো পাইনি। তাই তো আমাদের আগের গোয়ালাকে ছাড়িয়ে ওর কাছথেকে দুধ নিচ্ছি।
“আপনি কি বলছেন কি? আমি দুধের ব্যবসা করি? আমার এতো বড় হোলসেল ব্যাবসা ছেড়ে আমি কি না দুধের ব্যাবসা করবো?”
“আরে তাতে কি হয়েছে? দিন তো সব সময় এক রকম যায় না। আর ও সত্যি আপনাকে এতো ভক্তি করে, যে, কখনো জানতেই দেয় নি আপনি এখন এই ব্যবসা করছেন।”
“আরে না না, আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আমি কেন দুধের ব্যবসা করবো? আমাদের বাড়িতে সবার খাবার জন্যই লেগে যায় ওটুকু দুধ।
“না না আমার কোথাও ভুল হচ্ছে না,
আপনি কি বলতে চাইছেন? আমি বাড়ি বয়ে এসে আপনাকে মিথ্যে কথা বলছি?”
” হ্যাঁ আলবৎ মিথ্যে বলছেন।”
“কই ডাকুন আপনার ছেলেটাকে।এখুনি প্রমাণ হয়ে যাবে কে সত্যি বলছে কে মিথ্যে বলছে। আরে বলি টাকা-পয়সার অভাব হয়েছে সে কথা স্বীকার করতে এতো অসুবিধা কোথায়? এখনো এতো বড়োলোকি চাল আসে কোথা থেকে?”
“আপনি কিন্তু আমাকে বাড়ি বয়ে অপমান করছেন!”
“আরে মশাই ডাকুন না ওই ছেলেটাকে তাহলেই তো দুধ আর জল আলাদা হয়ে যাবে।”
দুজনের চিৎকার চ্যাঁচামেচি শুনে ঘরের বৌ ঝি’রা পর্দার ফাঁক দিয়ে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে।
মাধববাবুর হঠাৎ মনে পড়ল এখন গরুর দুধ পাতলা হওয়ার কারণ রামু কি বলেছিল।
” রামু..! রামু…! শিগগির এদিকে আয় হতচ্ছাড়া পাজি তোর জন্য আমাকে এতো বড় অপমান সহ্য করতে হলো! আজ তোকে আমি মেরেই ফেলবো।”
কিন্তু কোথায় রামু সেতো ওই লোকটাকে আসতে দেখেই পিছনের দরজা দিয়ে সেই যে ছুট লাগিয়ে পগারপার আর তার টিকি কেউ কখনও দেখতে পায় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress