Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

সূর্যোদয়ের আগেই সাধুদের প্রাতঃকৃত্য

সূর্যোদয়ের আগেই সাধুদের প্রাতঃকৃত্য, জপতপ সব শেষ করতে হয়। জটাই তান্ত্রিক সব সেরে তাঁর সাধনপীঠের উঠোনে বসে হরি ডোমের করোটিতে করে চা খাচ্ছিলেন। হারানচন্দ্রকে আগড় ঠেলে ঢুকতে দেখে খুব একটা অবাক হলেন না। প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে হারানচন্দ্র প্রায়ই তাঁর কাছে এসে বসেন এবং তন্ত্রসাধনা ও ধর্ম ইত্যাদির অসারতা প্রমাণ করে উঠে যান।

আজ হারানচন্দ্রকে একটু কাহিল দেখাচ্ছিল। কণ্ঠস্বরটা তেমন তেজী নয়। একটা মোড়া টেনে বসে বারকয়েক গলাখাঁকারি দিয়ে বললেন, “ওহে, ইয়ে, কাল রাতে ভাল ঘুম হয়নি।”

জটাই তান্ত্রিক মুখ থেকে করোৰ্টিটা নামিয়ে বললেন, “ঘুম হয়নি মানে? তুমি কি এখনও জেগে আছ নাকি?”

“জেগে নেই?” বলে আতঙ্কিত হারানচন্দ্র নিজের গায়ে নিজেই একটা চিমটি কেটে “উঃ” করে ককিয়ে ওঠেন।

জটাই তান্ত্রিক উদার হাস্যে মুখোনা ভাসিয়ে বলেন, “না, না, তোমার দেহের ঘুম ভেঙেছে বটে হে হারান, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু আত্মার ঘুম! তাকে জাগাবে কবে? সে যদি না জাগল, তবে আর জাগ্রত আছ বলি কী করে?”

হারানচন্দ্র চিমটির জায়গাটায় হাত বোলাতে বোলাতে খেঁকিয়ে উঠলেন, “তোমার কবে আক্কেল হবে বলো তো! সকালবেলাতেই এমন সব কথা বলো যে পিত্তি জ্বলে যায়। একে কাল রাতে ঘুম হয়নি, মাথাটা কেমন টলমল করছে।”

জটাই তান্ত্রিক করোটিটা গঙ্গাজলে ধুয়ে তুলে রাখলেন। তারপর আচমন করে রক্তাম্বরে মুখ মুছে বললেন, “ঘুম হয়নি কেন?”

“ইয়ে, রাত্রে মনে হয় চোর এসেছিল।”

“আবার চোর?”

হারানচন্দ্র প্রথমেই ভূতের কথাটা তুলতে লজ্জা পাচ্ছিলেন। তাই ভাবছিলেন একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথাটা তুলবেন। এবার বললেন, “চোর বলেই মনে হয়েছিল। আমি তাদের কথাবার্তা শুনেছি, গানবাজনাও। কিন্তু…”

জটাই তান্ত্রিক খুব অবাক হয়ে বলেন, “চোর তোমার বাড়িতে এসে গানবাজনা করেছে? বলো কী?”

হারানচন্দ্র লজ্জিত হয়ে বলেন, “সেখানেই গোলমাল। চোর গানবাজনা করতে গেরস্তবাড়িতে ঢোকে না। তারা হাসেও না। কিন্তু কাল রাতে এ-সবই ঘটেছে। আমি ছাড়া অবশ্য আর কেউ কিছু শোনেনি। তাই ভাবছিলাম এসব ইয়ে নয় তো! সেই যে কী যেন বলো তোমরা!”

জটাই তান্ত্রিক বাল্যবন্ধুর মুখের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললেন, “কিসের কথা বলছ বলো তো?”

“ইয়ে, মানে ওইসব আর কি! ওই যে তুমি যাদের দিয়ে তোমার বুজরুকিগুলো করাও। তাই ভাবছিলাম ব্যাপারটা তোমাকে বলি।”

জটাই তান্ত্রিক মাথা নেড়ে বলেন, “বুজরুকি আমি কখনও করিনি। কী জিনিস তাও জানি না। কাল রাতে কি তোমার বাড়িতে কোনও ভৌতিক ঘটনা ঘটেছে?”

“ইয়ে, অনেকটা তাই। তবে আমি ওসব বিশ্বাস করি না তা আগেই বলে রাখছি।”

জটাই তান্ত্রিক গম্ভীর হয়ে বলেন, “খুলে বলল।”

হারানচন্দ্র বললেন। জটাই তান্ত্রিক ঊধ্বনেত্র হয়ে চুপ করে বসে শুনলেন।

বলা শেষ হলে জটাই তান্ত্রিক একটা বিশাল শ্বাস ফেলে বললেন, “বুঝেছি।”

“কী বুঝলে?”

“ব্যাপারটা খুব সহজ নয় হে হারান।”

হারান মুখ ভেংচে বললেন, “সহজ নয় হে হারান! খুব বললে! এতকাল জপতপের ভণ্ডামি করে এখন ‘সহজ নয় হে হারান’ বলবে, এটা শোনার জন্য তো তোমার কাছে আসিনি! বলি, কিছু বুঝেছ ব্যাপারটা?”

“বুঝেছি।”

“ছাই বুঝেছ! কী বলো তো?”

জটাই তান্ত্রিক গম্ভীর হয়ে বললেন, “ঘড়ি।”

“ঘড়ি? তার মানে?”

“তোমার ওই নতুন ঘড়িটা গো। ওটাই যত নষ্টের মূল।”

হারানচন্দ্র তাড়াতাড়ি হাতঘড়িটার দিকে তাকালেন। ঘড়িটা একটু অস্বাভাবিক বটে। এখনও পর্যন্ত তিনি ঘড়ি দেখে সময় আঁচ করতে পারেননি। কাঁটা দুটো কখন যে কোন ঘরে থাকবে, তার কোনও স্থিরতা নেই। এইসব অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি তাঁর পছন্দ নয়। সাবেকি জিনিস অনেক ভাল।

তিনি বললেন, “ঘড়ির সঙ্গে এসব ঘটনার কী সম্পর্ক? কী যে সব পাগলের মতো কথা বলো।”

জটাই তান্ত্রিক গম্ভীর হয়ে বললেন, “এর আগে কোনওদিন এরকম ঘটনা ঘটেছে?”

“না।”

“ঘড়িটা আসার পরেই কেন ঘটল তা ভেবে দেখেছ?”

“ভাববার সময় পেলাম কোথায়?”

“আমার কিন্তু ভাবা হয়ে গেছে।”

“কী বুঝলে ভেবে?”

“বুঝলাম যে, ঘড়িটা নতুন নয়। নিশ্চয়ই এর আগে ঘড়িটার একজন মালিক ছিল। কোনও কারণে সেই মালিকের মৃত্যু ঘটেছে। এবং সে ঘড়ির মায়া এখনও কাটাতে পারেনি। আত্মাটা ঘড়ির কাছাকাছি ঘুরঘুর করছে। কাল রাতে তুমি যে-সব শব্দ শুনেছ, তা সম্পূর্ণ ভৌতিক।”

হারানচন্দ্র বেকুবের মতো কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে খেঁকিয়ে উঠতে গিয়েও পারলেন না। কথাটা তাঁর অযৌক্তিক মনে হচ্ছে না তো! ঘড়িটা ভাল করে আবার দেখলেন তিনি। সাধারণ কব্জিঘড়ির মতোই, একটু হয়তো বা বড়। ঝকমকে স্টেনলেস স্টিলের। পুরনো নয় বটে, তবে সেকেন্ডহ্যান্ড হতে বাধা নেই।

এসব জিনিস তো বহুকাল নতুনের মতোই থাকে!

তিনি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, “ইয়ে, ওসব আমি মানছি কিন্তু। মানে ভূতটুত আমি বিশ্বাস করছি না। তবে যদি ওসব ইয়ে থেকেই থাকে, তবে তোমাদের তন্ত্রেমন্ত্রে কোনও বিধান নেই?”

জটাই তান্ত্রিক হাত বাড়িয়ে বললেন, “ঘড়িটা দাও দেখি।” হারানচন্দ্র ঘড়িটা হাত থেকে খুলে দিলেন। জটাই তান্ত্রিক সেটা অনেকক্ষণ হাতের মুঠোয় ধরে ধ্যানস্থ থাকলেন। তারপর খুব দূরাগত স্বরে বলতে লাগলেন, “টবিন সাহেব…বেঁটেখাটো, ভারী জোয়ান…মুখটা দেখলেই মনে হয় খুনি…লন্ডনের সোহো এলাকার একটা গলি ধরে দৌড়োচ্ছে…মধ্যরাত্রি..পিছনে একটা কালো গাড়ি আসছে…টবিন চৌমাথায় পৌঁছে গেছে…পিছন থেকে

গুড়ম করে গুলির শব্দ…টবিন মাটিতে বসে পড়ল…গুলি লাগেনি..সামনেই একটা ট্যাক্সি…টবিন এক লাফে উঠে পড়ল…কালো গাড়ি থেকে আবার গুলি…ট্যাক্সিটা জোরে যাচ্ছে..জাহাজঘাটা…একটা জাহাজ ছেড়ে যাচ্ছে…ডেক থেকে টবিন ঝুঁকে চারদিকে লক্ষ রাখছে…হাতে ঘড়ি…এই ঘড়িটা…জাহাজ আটলান্টিক মহাসাগর পার হচ্ছে…রাত্রি…টবিনের কেবিনের দরজা আস্তে খুলে গেল…কে…গুড়ম…গুড়ম…”

হারানচন্দ্র হাঁ করে জটাই তান্ত্রিকের মুখের দিকে চেয়ে আছেন।

জটাই চোখ খুলে বললেন, “জলের মতো পরিষ্কার। এ হচ্ছে টবিনের ঘড়ি…”

“টবিন কে?”

“একটা খুনি, গুণ্ডা, ডাকাত।”

“তুমি জানলে কী করে?”

“ধ্যানযোগে।”

হারানচন্দ্র রেগে উঠতে গিয়েও পারলেন না। কে জানে বাবা, সত্যি হতেও পারে। বললেন, “টবিন কি খুন হয়েছে নাকি?”

“তবে আর বলছি কী? তার আত্মা ঘড়িটার সঙ্গে লেগে আছে।”

“তুমি দেখতে পাচ্ছ?”

“পরিষ্কার। তবে দেখার জন্য আলাদা চোখ চাই।”

“ঘড়িটা কি তাহলে ফেরত দেব?”

জটাই তান্ত্রিক একগাল হেসে বলেন, “আমি থাকতে তুমি ভূতের ভয়ে ঘড়ি ফেরত দেবে? পাগল নাকি! ঘড়িটা আমার কাছে এখন থাক। শোধন করে দিয়ে আসব’খন।”

হারানচন্দ্র সম্মতি প্রকাশ করে উঠে পড়লেন। তারপর বললেন, “ইয়ে, বাড়িতে এ নিয়ে কিছু বোলো না।”

“আরে না। নিশ্চিন্ত থাকো।”

হারানচন্দ্র বিরস মুখে বাড়ি ফিরলেন।

বাড়ি ফিরতেই একটা শোরগোল উঠল। লাটু, কদম আর ছানু এসে দাদুকে একটু দেখে নিয়েই ছুটল ঠাকুমাকে খবর দিতে, “ও ঠাকুমা! দাদুর হাতে ঘড়ি নেই।”

“আবার হারিয়েছ?” বলে হুংকার দিয়ে বাসবনলিনী ধেয়ে এলেন।

ঘড়ি হারায়নি। জটাই তান্ত্রিকের কাছে শোধন করতে দিয়ে এসেছেন। কিন্তু সে কথা স্বীকার করেন কী করে? বাড়ির সবাইকে এতকাল তিনি নিজেই বুঝিয়ে এসেছেন যে, তিনি ঘঘারতর নাস্তিক, তন্ত্রমন্ত্র ঈশ্বর কিছুই মানেন না। হারানচন্দ্র আমতা-আমতা করে বললেন, “হারায়নি। হারাবে কেন?”

“তাহলে ঘড়ি কোথায়?”

“কোথাও আছে এখানে সেখানে।”

“তুমি ঘড়ি হাতে দিয়ে বেরোওনি?”

হারানচন্দ্র ফাঁপরে পড়ে বলেন, “ইয়ে, ঘড়িটা আমি সারাতে দিয়েছি।”

“সারাতে দিয়েছ! নতুন ঘড়ি যে!”

“নতুন নয়। সত্যকে নতুন বলে গছিয়েছে। আসলে সেকেন্ডহ্যান্ড। একটু গোলমাল করছিল।”

“কার কাছে সারাতে দিলে?”

“আমার এক বন্ধুর কাছে।” বলে হারানচন্দ্র একটা নিশ্চিন্দির শ্বাস ছাড়লেন। কথাটা খুব মিথ্যেও বলা হল না। শোধন করা মানে তো একরকম সারানোই।

তবে বাসবনলিনীকে ঠকানো মুশকিল। চোখ বড় বড় করে হারানচন্দ্রের দিকে খানিকক্ষণ রক্ত-জল-করা স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার আবার ঘড়ির মিস্ত্রি বন্ধু কে আছে? সবাইকেই তো চিনি।”

হারানচন্দ্র বিপন্ন হয়ে বলেন, “আছে আছে। সবাইকে তুমি চিনবে কী করে?”

বাসবনলিনী তর্ক করলেন না। আরও কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে চাপা স্বরে বললেন, “বুড়ো বয়সে আর কত মিথ্যে কথা বলবে? সত্যি কথাটা বললেই তো হয় যে, ঘড়িটা আবার হারিয়েছ। আনকোরা নতুন ঘড়িটা হারালে, তার ওপর ছেলের বদনাম করে বলে বেড়াচ্ছ যে, ঘড়িটা সেকেন্ডহ্যান্ড ছিল! ছিঃ ছিঃ!”

হারানচন্দ্র মরমে মরে গেলেন। কিন্তু কিছু করারও নেই। কথাটা রাষ্ট্র হতে দেরি হল না। সবাই জানল, হারানচন্দ্র আবার ঘড়ি হারিয়েছেন। হারানচন্দ্র অবশ্য স্বীকার করলেন না। কেবল বলতে লাগলেন, “ঠিক আছে। সারিয়ে আনি আগে, তারপর দেখো।”

হারানচন্দ্রের মেজ ছেলে রজোগুণহরির শখ হল ফোটোগ্রাফির। গোটাকয়েক ক্যামেরা আছে তার। দিনরাত ফোটোগ্রাফি নিয়েই তার যত চিন্তাভাবনা। গোটা গঞ্জের যাবতীয় মানুষের ছবি তার ভোলা হয়ে গেছে। কুকুর, বাঁদর, বেড়াল, পাখি, ফড়িং, পোকামাকড়ও বড় একটা বাদ নেই। প্রতিদিনই সে ছবি তুলছে। নিজেরই একটা ডার্করুম আছে তার। সেখানে ফিল্ম ডেভেলপ আর প্রিন্টিং-এর ব্যবস্থা আছে। নানা পত্রপত্রিকায় সে ছবি পাঠায়। বেশির ভাগই ছাপা হয় না। চাঁদের আলোয় কাশফুল, মেঘের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের মুখ, সাপের ব্যাং ধরা, বাঁদরের অপত্যস্নেহ ইত্যাদি অনেক ছবি তুলে গঞ্জে বেশ বিখ্যাত হয়েছে রজোগুণ।

রজোগুণের লাইকা ক্যামেরায় শেষ দু’তিনটে শট বাকি ছিল। তাই আজ খুব ভোরে উঠে সে একটা কাকের ব্রেকফাস্টের ছবি তুলেছে। কাকটা তেতলা ছাদের রেলিঙে বসে এঁটোকাঁটা কিছু খাচ্ছিল। বাবা ইজিচেয়ারে শুয়ে ঘুমোচ্ছে, হাতে ঘড়ি, এই ছবিটাও তুলে ফেলল সে। বাগানে একটা প্রজাপতির ছবি তুলতেই ফিল্ম শেষ হয়ে গেল।

দুপুর নাগাদ ফিল্ম ডেভেলপ করার পর শেষ তিনটে নেগেটিভ দেখে সে তাজ্জব হয়ে গেল। আশ্চর্য! এ কী! তিনটে ছবির একটাও ওঠেনি। একদম সাদা। এরকম হওয়ার তো কথা নয়। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হল, দুনম্বর ছবিটা। এটা হারানচন্দ্রের ঘুমন্ত অবস্থার ছবি। এ ছবিতে আর সব সাদা হলেও ঘড়িটার ছবি কিন্তু ঠিকই উঠেছে। রজোগুণের বেশ মনে আছে, তার বাবার বাঁ হাতখানা ছিল পেটের ওপর। ঘড়িটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল ভিউ ফাঁইন্ডারে। ছবিতে ঘড়িটা উঠেছে মাঝামাঝি জায়গায়। কিন্তু হারানচন্দ্র বিলকুল গায়েব!

রজোগুণ ক্যামেরাটা ভাল করে পরীক্ষা করল। না, কোনও গোলমাল নেই তো!

রজোগুণ বসে-বসে কাণ্ডটা কী হল তা ভাবছে, এমন সময় বহুগুণ এসে হানা দিল।

“মেজদা, তোমার ঘড়িটা একটু দেবে? আমার ঘড়িটা সকাল থেকেই গোলমাল করছে।”

রজোগুণ অন্যমনস্কভাবে বলল, “টেবিলে আছে, নিয়ে যা।”

বহুগুণ ঘড়িটা নিয়ে একটু দেখেই চেঁচিয়ে ওঠে, “আরে! তোমারটাও যে উলটো চলছে!”

“তার মানে?”

“সকাল থেকেই আমার ঘড়ির কাঁটা উলটো দিকে ঘুরে যাচ্ছে। আমি ভাবলাম ঘড়িটা বোধহয় খারাপ হয়েছে। এখন দেখছি তোমারটাও তাই।”

রজোগুণ ঘড়িটা হাতে নিয়ে দেখল। বাস্তবিকই তাই। সেকেণ্ডের কাঁটাটা উলটোদিকে ঘুরে যাচ্ছে। মিনিটের কাঁটাও পাক খাচ্ছে উলটোবাগে।

দু ভাই দু ভাইয়ের দিকে বোকার মতো চেয়ে থাকে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *