হঠাৎ দেশে উঠল আওয়াজ “হো–হো, হো–হো, হো–হো”
চমকে সবাই তাকিয়ে দেখে–সিপাহী বিদ্রোহ !
আগুন হয়ে সারাটা দেশ ফেটে পড়ল রাগে,
ছেলে বুড়ো জেগে উঠল নব্বই সন আগে :
একশো বছর গোলামিতে সবাই তখন ক্ষিপ্ত,
বিদেশীদের রক্ত পেলে তবেই হবে তৃপ্ত !
নানাসাহেব, তাঁতিয়াটোপি, ঝাঁসির রাণী লক্ষী—
সবার হাতে অস্ত্র, নাচে বনের পশু–পক্ষী ।
কেবল ধনী, জমিদার, আর আগের রাজার ভক্ত
যোগ দিল, তা নয়কো, দিল গরীবেরাও রক্ত !
সবাই জীবন তুচ্ছ করে, মুসলমান ও হিন্দু,
সবাই দিতে রাজি তাদের প্রতি রক্তবিন্দু ;
ইতিহাসের পাতায় তোমরা পড় কেবল মিথ্যে,
বিদেশীরা ভুল বোঝাতে চায় তোমাদের চিত্তে ।
অত্যাচারী নয়কো তারা, অত্যাচারীর মুণ্ড
চেয়েছিল ফেলতে ছিঁড়ে জ্বালিয়ে অগ্নিকুণ্ড ।
নানা জাতের নানান সেপাই গরীব এবং মূর্খ :
সবাই তারা বুঝেছিল অধীনতার দুঃখ ;
তাইতো তারা স্বাধীনতার প্রথম লড়াই লড়তে
এগিয়েছিল, এগিয়েছিল মরণ বরণ করতে !
আজকে যখন স্বাধীন হবার শেষ লড়াইয়ের ডঙ্কা
উঠছে বেজে, কোনোদিকেই নেইকো কোনো শঙ্কা ;
জব্বলপুরে সেপাইদেরও উঠছে বেজে বাদ্য
নতুন ক’রে বিদ্রোহ আজ, কেউ নয়কো বাধ্য,
তখন এঁদের স্মরণ করো, স্মরণ করো নিত্য —
এঁদের নামে, এঁদের পণে শানিয়ে তোলো চিত্ত ।
নানাসাহেব, তাঁতিয়াটোপি, ঝাঁসির রাণী লক্ষী,
এঁদের নামে, দৃপ্ত কিশোর, খুলবে তোমার চোখ কি ?