বসুন্ধরায় ঝরো ঝরো ধারে এসো শ্রাবণের ধারা,
তোমার আশায় উষ্ণ ধরায় সমীর তন্দ্রাহারা।
আসবে ধরায় ধরিত্রী তাই তব অভিষেক লাগি,
কদম ফুলের বাসর সাজিয়ে গহন রাত্রি জাগি।
এসো গো শ্রাবণ কল কল্লোলে মল্লার গান সুরে,
জীর্ণতা যত ধুয়ে ফেলে ভরে দাও নব অঙ্কুরে।
দামিনী গমকে মেঘমন্দ্রিত তানে আকুল করে,
নির্ঝর বীণা ঝরঝর রবে বাজাও ধরণী ‘পরে।
এসো হে শ্যামল সুন্দর তুমি এসো বন প্রান্তরে,
দুন্দুভি তব বাজিয়ে বেড়াও বনবীথি অন্তরে।
স্নিগ্ধ ধরায় প্রাণ এনে দাও ধরণী বক্ষ মাঝে,
গুরু গুরু গুরু মেঘের মাদল বাজিয়ে সকাল সাঁঝে।
বলাকা পাখায় ঝলক লাগিয়ে এসো গো বর্ষা রানি,
রাখালিয়া সুরে দূর বিজনের বার্তা দাওগো আনি।
মেঘরাগিনীর সুর ধারায় আসবে কেকা রব ভাসি,
তব আগমনে কলাপ মেলিয়া ময়ূর নাচবে রাশি।
তোমার ছোঁয়ায় সবুজাভ ধরা কত আনন্দে রাজে,
দ্রুম লতা ঘাস সবুজে সবুজ উজলতায় বিরাজে।
দাদুরি খুশিতে করে মকমক সোঁদা ঘ্রাণ বহে বায়,
তোমার অঝোর ঝরনে ঝিল্লি উল্লাসে ডেকে যায়।
জল থৈ থৈ মাঠ ঘাট পথ কর্দমাক্ত ধরা,
তব পরশণে প্রকৃতি যেন প্রাণবন্ততায় ভরা।
নদীতে উজান টলটল জল দুকূল ছাপায় পলি,
শস্য শ্যামলা নব যৌবনা বসুধা হাসে উছলি।
এসো শ্যামাঙ্গী জীমূত বিদারি ধরাতলে এসো ধেয়ে,
তব অপেক্ষায় ভূলোক রয়েছে গগন পানেতে চেয়ে।