দু’লক্ষ পদ শূন্য ভারতীয় সেনাদলে,
চার বছর ধরে নিয়োগ বন্ধ :
কার মহান স্বার্থে?
দেশ সুরক্ষায় ছিনিমিনি বুঝি দেশপ্রেম!
এক পড়শি দেশ সীমান্তে দাপাদাপি করছে,
আস্ত এক গ্রাম বসিয়ে দিয়েছে,
সেতু – রাস্তা – রেলপথ নির্মাণ করেই চলেছে,
নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করছে।
আমরা প্রাসাদ,মূর্তি ও মন্দির নির্মাণে ব্যস্ত,
ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিচে দেবদেবী খুঁজছি!
ভোটকেন্দ্রিক রাজনীতির হিসাব কষছি,
এভাবেই বিকাশের বন্যায় প্লাবন চলছে।
ভারতীয় রেল কর্মসংস্থানের বৃহৎ ভাণ্ডার,
আশি হাজার পদে চাকরি চিরস্থগিত,
ধীরে ধীরে রেল বেসরকারিকরণ চলছে,
প্রিয় পুঁজিপতির জন্য বাগান সাজছে,
সাধারণ ট্রেন হঠাৎ এক্সপ্রেস হয়ে যাচ্ছে,
বয়োজ্যেষ্ঠদের কম ভাড়ার সুবিধা বাতিল,
বেশি বেশি মুনাফার ফিকির আঁটা চলছে,
যাত্রী পরিষেবা ও নিরাপত্তা সেই তিমিরেই!
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে কিছু নেই,
কোন্ মহৎ উদ্দেশ্যে?
একেই জনস্বার্থ বলে কোন্ মূর্খ?
সবাই বিকাশের বন্যায় ভাসছে!
কেন্দ্রীয় সরকারের ষাট লক্ষ পদ খালি,
দেশ বেকারত্বের সর্বকালীন শীর্ষে,
আশ্বাস ছিল বছরে দু’কোটি চাকরির,
প্রমাণ হল বিশাল রাজনৈতিক ধাপ্পা!
কার মহান স্বার্থপূরণ হচ্ছে??
বিদ্বেষের বীজ রোপন অব্যাহত,
চোপ রও, বিকাশ তরতরিয়ে এগোচ্ছে।
তেষট্টি লক্ষ পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে,
লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে না,
সেই টাকায় মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়া হচ্ছে,
ঢক্কানিনাদে কান পাতা দায়,
রাষ্ট্রীয় সম্পদ দেদার বিক্রি চলছে,
কোথায় যাচ্ছে এতো টাকা!!
দেশবাসী দুর্ভোগের সর্বকালের শীর্ষে,
কোন্ স্বার্থ সুরক্ষিত হচ্ছে!
এগুলোকেই বুঝি দেশপ্রেম বলে!
বিকাশ বুঝি তাই?
ভবিষ্যতের সুরক্ষায় চাকরিগুলো কারা পেতো –
মায়ানমার পলাতক রোহিঙ্গারা?
বাংলাদেশিরা?
পাকিস্তানিরা?
শহুরে নকশালরা?
দেশদ্রোহীরা?
কথায় কথায় ওদের দিকে আঙুল তোলা হয়,
ওদের নামের অছিলায় বুলডোজার চলে,
চাকরিগুলো পেতো ভারতমাতার সন্তানেরা,
আমার – আপনার ঘরের ছেলেমেয়েরা।
তারা ভারতমাতার দেশপ্রেমিক সন্তান,
তাদের ঠকিয়ে কী মহান উদ্দেশ্য সাধন হচ্ছে?
দেশবাসীকে বঞ্চনার নাম বুঝি দেশপ্রেম!
দেশ চলছে ভীষণ বিকাশের রাস্তায়।
আমরা প্রশ্ন করি না,
আমরা প্রতিবাদ করি না,
আমরা উপলব্ধি করি না,
আমরা আন্দোলন করি না,
আমাদের মস্তিষ্ক বসে গেছে!
এতো ক্ষতি ও দুর্ভোগ মেনে নিচ্ছি?
গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাচ্ছি,
পথে বসার পর হুঁশ হবে?
শ্রীলঙ্কার যেমনটা হয়েছে!
পাকিস্তানের যেমনটা হয়েছে!
কলমের কাজ কাউকে তুষ্ট করা নয়,
অন্ধ ভক্তরা হতেই পারে রুষ্ট,
ধর্মের আফিমে নেশাগ্রস্ত নয়,
বিদ্বেষী মননে নয়,
এখানেই তফাৎ শিরদাঁড়ার।
মানসিকতার।
সচেতনতার।
দেশভক্তির।