অনেকেই আসে, মুখে হাসি রেখে,
প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—
“ দিদিমা বয়স কতো হলো তোমার?”
আহা! কী সহজে বলি এই প্রশ্নের উত্তর!
বয়স কি কেবলই সংখ্যা?
নাকি মনের আয়নায় খেলা করা ছায়া?
যখন মেয়ের সঙ্গে কার্টুন দেখি,
আমি কি তখন বুড়ো?
না, তখন তো বয়স সাত কিংবা আট!
হাসি, আনন্দ আর ছোট্ট কথার ভেলায় ভাসি।
আর যখন গানের তালে তালে নাচতে থাকি,
নিজেকে লাগে একেবারে ষোলো।
তখন পায়ের তালে তালে
জীবনের ছন্দে মাতি।
কিন্তু যখন কারো পাশে বসে
তার ব্যথাগুলো আঙুলে ছুঁয়ে দিই,
তখন মনে হয় পাঁচ কুড়ি তো হবেই।
তবুও বয়স সেখানে থেমে যায় না,
গভীর মমতায় গলে যায়।
আর যখন কাক, চড়ুই কিংবা শালিকের সাথে গল্প জুড়ি,
তখন তাদেরই বয়স হয়ে যাই।
তাদের ডানায় ভেসে
আমি শিখি উড়তে।
বয়স দিয়ে হবেটা কী, বলো?
ওটা তো সংখ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়।
সূর্যের আলো কি গুনে রাখে তার দিন?
নদীর জল কি মাপে তার প্রবাহ?
সময় বদলায়, আমিও বদলাই,
রাতের পথে দিনের মতো আমি চলি,
অনুভূতির গভীরে খুঁজি তার স্পর্শ।
তাই প্রশ্ন করো না,
“বয়স কতো হলো তোমার?”
জিজ্ঞাসা করো,
“কতোটা বেঁচেছ তুমি?”
বেঁচেছি কি হাসিতে, প্রেমে, গল্পে?
বেঁচেছি কি কারো চোখের জল মুছতে?
এই যে এই আছি, এই নেই,
সময়ের বাতাসে ভাসি।
বয়স নয়, জীবনটাই আসল উত্তর।
জীবনের পরত খুলে দেখো,
বয়স নয়, সেখানে লেখা
শত রঙের গল্প।