হাতে, পুরোনো কাগজের মালা—তুমি জানো শুধু, অপেক্ষা করতে হয় কীভাবে—
সবুজ পানাপুকুর পেরিয়ে, ছোট্টো তোমাদের বাড়ি
তোমাদের পুকুরে কাঠের নৌকো ভাসে না কোনোদিন-তোমাদের গলিতে
লাফাতে লাফাতে ঢোকে না সাহেব, আর মেমসাহেব হেসে ওঠে না সহসা
শুধু দুপুর হলে, চলে যায় ট্রেন
শুধু বিকেল হলে, স্কুল থেকে ফিরে আসে ছেলেরা, আর কমলালেবুর খোসা
জমে ওঠে রাস্তার ওপর—তোমার ছাপানো শাড়ি, হঠাৎ
আমি অদৃশ্য হয়ে যেতে দেখি তোমাদের বারান্দা থেকে—তোমার পুরোনো চিঠি
হঠাৎ আমি খুঁজে পাই আমার বাক্সের ভেতর—
সত্যি, এক নম্বরের হাবাটে আমি
আমার দিনগুলো আমি কাটিয়েছি যথার্থ একটা উল্লুকের মতো—
মনে পড়ে তোমার, শুকনো, বিক্ষিপ্ত মুখ
মনে পড়ে তোমাদের, পারিবারিক, শান্ত অ্যালবাম—অসুখ থেকে উঠে
তুমি সেবার বেড়াতে গেলে না কোথাও—তোমার সুটকেশ
পড়ে রইলো তোমার খাটের নিচে—তোমার টেবিলে, এলোমেলো
পড়ে রইলো তোমার ইতিহাসের বই—
আমার ভুলগুলো আজ পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারি আমি—সন্ধেবেলা
হাঁটতে হাঁটতে ঐ বাড়ি ফিরে চলেছে মানুষ—শুকনো গাছটায়
দেখি, আবার যাতায়াত শুরু করেছে পাখিরা—শোনো, সমস্তকিছুই নষ্ট হয়নি
সমস্ত কিছুই শেষ হয়ে যায়নি আমাদের—বৃষ্টির মধ্যে
আবার আমার কাগজ-পত্তর টেনে আনবো আমি—আবার আমরা ব’সে ব’সে
মজার গদ্য পড়বো আমাদের বারান্দায়-আমার অসুখের কথা
হয়তো সকলেই জেনে ফেলবে সেদিন, আর আমাদের ম্যাট্রিক-ফেল মেজদি
বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে থাকার জন্যে
প্রতিদিনই হয়তো দুঃখ করবে—প্রতিদিনই, হয়তো কাঁদবে খুব—শীত-গ্রীষ্মে
সকলের জন্যেই ঝলমলে পোস্ট-কার্ড পাঠিয়ে দেবো আমরা—সকলের জন্যেই
শুভেচ্ছা আর গরীব ভালোবাসা আমাদের
হৈ হৈ করে, হঠাৎ আমরা ঘুরে আসবো একদিন বর্ধমান