Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » পল্লী-মা || Golam Mostofa

পল্লী-মা || Golam Mostofa

পল্লী-মায়ের বুক ছেড়ে আজ যাচ্ছি চলে প্রবাস-পথে
মুক্ত মাঠের মধ্য দিয়ে জোর-ছুটালো বাষ্প-রখে।
উদাস হৃদয় তাকায়ে রয় মায়ের শ্যামল মুখের পানে,
বিদায়-বেলায় বিয়োগ-ব্যথা অশ্রু আনে দুই নয়ানে।

চির চেনার গন্ডি কেটে বাইরে এসে আজকে প্রাতে,
নতুন করে দেখা হল অনাদৃতা মায়ের সাথে,
ভক্তি-পূজা দিইনি যারে ভুলেও যাহার বক্ষে থেকে–
নম্রশিরে প্রণাম করি দূর হতে তার মূর্তি দেখে।

স্নেহময়ীর রূপ ধরে মা দাঁড়িয়ে আছে মাঠের পরে,
মুক্ত চিকুর ছড়িয়ে গেছে দিক হতে ওই দিগন্তরে।
ছেলেমেয়ে ভিড় করেছে চৌদিকে তার আঙ্গিনাতে,
দেখছে মা সেই সন্তানেরে পুলক-ভরা ভঙ্গিমাতে।

ওই যে মাঠে গোরু চরে লেজ দুলিয়ে মনের সুখে,
ওই যে পাখির গানের সুরে কাঁপন জাগে বনের বুকে,
মাথাল-মাথায় কাস্তে হাতে, ওয়ে যে চলে কাল চাষা,
ওরাই মায়ের আপন ছেলে ওরাই মায়ের ভালোবাসা।

রাখাল ছেলে চরায় ধেনু, বাজায় বেণু অশথমূলে,
সেই গানেরই পুলক লেগে ধানের ক্ষেত ওই উঠল দুলে,
সেই গানেরই পুলক লেগে বিলের জলের বাঁধন টুটে,
মায়ের মুখের হাসির মত কমল-কলি উঠল ফুটে।

দুপুর বেলার রৌদ্র-তাপে ক্লান্ত হয়ে কৃষক ভায়া
বসল এসে গাছের তলে ভুঞ্জিতে তার স্নিগ্ধছায়া,
মাথার উপর ঘন নিবিড় কচি কচি ওই যে পাতা
ও যেন মার আপন হাতে তৈরি করা মাঠের ছাতা।

সবুজ ধানে মাঠ ছেয়েছে, কৃষক তাহা দেখলে চেয়ে,
রঙ্গিন আশায় স্বপ্ন এল নীল-নয়নের আকাশ ছেয়ে।
ওদেরই ও ঘরের জিনিস, আমরা যেন পরের ছেলে,
মোদের ওতে নাই অধিকার- ওরা দিলে তবেই মেলে।

কত গভীর তৃপ্তি যে গো লুকিয়ে আছে পল্লী-প্রাণে,
জানুক কেহ, নাই বা জানুক,- সেকথা মোর মনই জানে।
মায়ের গোপন বিত্ত যা, তার খোঁজ পেয়েছে ওরাই কিছু,
মোদের মত তাই ওরা আর ছুটে নাক মোহের পিছু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *