Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ক্ষতিপূরণ || Mrinmoy Samadder

ক্ষতিপূরণ || Mrinmoy Samadder

মহেশবাবু এলাকায় একজন গন‍্যমান‍্য ব‍্যক্তি হিসেবেই পরিচিত। উনি একটা সময় স্থানীয় হাইস্কুলের হেডমাষ্টার ছিলেন। কোন একটা সময় ওনার বাড়ি ছিল বারাসতে। এই প্রত‍্যন্ত গ্রামীন স্কুলে চাকরিটা পেয়ে সেই যে এলেন আর বারাসত ফেরা হলো না। ওনার বাবা মা বেঁচে থাকাকালীন কয়েকবার গেছিলেন অবশ‍্য তারপর সেই টানটাও কোথাও যেন হারিয়ে গেছে ওনার জীবন থেকে।
এই গ্রামই এখন তার কাছে সব। এখানে মাষ্টারমশাই হিসেবে সবাই শ্রদ্ধা করে। সেই সময় উনি ধুতি পাঞ্জাবী পড়েই স্কুলে আসতেন। একটাই পোশাক। তবে কোনদিন কেউ ওনাকে নোংরা বা অবিন‍্যস্ত পোশাক পরতে দেখেনি। এখন এই আশি বছর পেড়িয়ে গিয়েও ওনার সেই অভ‍্যাস পাল্টায় নি।
তবে মানুষ হিসেবে মহেশবাবু খিটখিটে প্রকৃতির। আজ থেকে নয় সেই চাকরিজীবন থেকেই। এটা ওনার পরিবারের সবাই জানে বলে কেউ ওনাকে ঘাঁটাতে চায় না।
এখন উনি সারাটা দিন ঘরে থাকবার পর সন্ধ‍্যাবেলা একটু হাঁটাহাঁটি করতে বেরোন। ঘন্টাখানেক হাঁটাহাঁটি করে ঘরে ফিরে টিভিতে অনুষ্ঠান খবর ইত‍্যাদি শোনেন বা দেখেন।
কি যে হলো কে জানে,আজ কার মুখ দেখে উনি উঠেছিলেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও উনি সান্ধ‍্যভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। পরনে যথারীতি ধুতি পাঞ্জাবী। কিছুটা দূর হেঁটেও এসেছেন এমন সময় পেছন থেকে একটা মোটরভ‍্যান রিকশা ওনাকে পাশ কাটিয়ে বেড়িয়ে যেতে চাইলে রিকশাটার কোন কিছুতে লেগে ওনার ধুতিটা গেল ছিঁড়ে।
আর যায় কোথায়। ভ‍্যান রিকশার চালককে উনি থামালেন। চালকের বয়স মেরেকেটে হয়তো তিরিশ বত্রিশ হবে। মহেশবাবু বেশ হম্বিতম্বি করতে শুরু করলেন ঐ ভ‍্যান চালকের ওপর। আশেপাশে বেশ কিছু মানুষ জড়ো হয়ে গেছে। ফ্রিতে একটু মজা দেখবার আশায়।
তর্কাতর্কি চলতে চলতে এমন এক পর্যায় চলে এলো যে কোন সময় হাতাহাতি শুরু হতে পারে। সেই দেখে কয়েকজন এগিয়ে এসে দুজনকেই মিটমাট করে নেবার পরামর্শ দিলো।
ঠিক হলো ভ‍্যান চালককে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ধুতির দাম বাবদ।
মধ‍্যস্থতাকারীরা বললো “ও দাদু তোমার ধুতির দাম কতো ?”
মহেশবাবু “পাঁচশো টাকা “
মধ‍্যস্থতাকারী “কতোদিন আগে কিনেছিলেন ধুতিটা”
মহেশবাবু “এই তো বছর তিনেক আগে “
“তাহলে তো ওটার দাম আর পাঁচশো নেই দাদু। মেরেকেটে দেড়শো টাকা হবে।”
“ঠিক আছে বাবা, তাই দাও।”
ভ‍্যান চালক ওনার হাতে দেড়শো টাকা দিয়ে দিল। উনি টাকাটা নিয়ে পাঞ্জাবীর পকেটে রেখে চলতে শুরু করলেন।
এমন সময় ভ‍্যান চালক বলে উঠলো “ও দাদু কোথায় যাচ্ছেন। আমি আপনাকে ধুতিটা ছিঁড়ে যাবার জন্য দেড়শো টাকা ক্ষতিপূরণ দিলাম। তার মানে এই ধুতিটা এখন আমার। তা আমার হকের ধুতিটা আমাকে না দিয়ে আপনি চলে যাচ্ছেন যে বড়ো।”
শুনে মহেশবাবু………………।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *