১৬২ তম জন্মদিনে
নাম ছিল
শ্রীনরেন্দ্রনাথ দত্ত, পরে হলেন স্বামী বিবেকানন্দ।
গুরু ছিলেন তাঁর — ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ।
“ধর্ম ” প্রকৃত অর্থে যা ধারণ করা হয়।
জন্মসূত্রে ধর্ম এক আর দ্বিতীয় হলো– নিজস্ব শিক্ষা , দীক্ষা , আচরণ, চলন , গ্রহণ, বর্জন যা ব্যক্তিবিশেষের প্রকাশ— যা ধারণ করে আছেন, তাই তার ধর্ম। চোর ধারণ করে আছেন সর্বদা চৌর্যবৃত্তি। ঠগের ঠকানস্বভাব । দুষ্কৃতী জনের খুন করাই ধর্ম। মানবিক মানুষের সৎকর্মই ধর্ম।
মহাপ্রাণ বিবেকানন্দ ঘরসংসারে বদ্ধ না থেকে শ্বাশতবাণীর প্রচার করেন এবং নশ্বর জগতের ঈশ্বরকে স্মরণ করেন প্রতীক দেবতার মাধ্যমে।
এর সাথে খাদ্য চয়ন, পোষাক পরিচ্ছদ, নিজস্ব জীবন ধারা , সম্পূর্ণ নিজের ব্যাপার। তিনি ছিলেন দার্শনিক, সমাজ সংস্কারক । সচেতনায় ছিল সুসংস্কার, উন্নতমানের শিক্ষা ও কৃষ্টি, সততা ইত্যাদি।
বৈদিক গ্রন্থ যথা বেদ,ব্রাহ্মণ উপনিষদ ইত্যাদি বুঝবার জন্য দরকার ছটি শাস্ত্র — শিক্ষা, কল্প, ছন্দ, জ্যোতিষ, নিরুক্ত ও ব্যকরণ — এসব অনুধাবন করে হিন্দু ধর্মের নির্যস প্রচার করেন তিনি।
জগতের সর্বোচ্চ শক্তি বা ঈশ্বর এর সন্ধান অতি দুরুহ, আধ্যাত্মিক ও বৈজ্ঞানিক কোন উপায়েই নয়। বিবেকানন্দ এমনই একজন —যিনি বিজ্ঞান ও অধ্যাত্ব দুই ধারনাতেই ঋদ্ধবদ্ধ ছিলেন এবং সমাজের সবাই কে উদ্বুদ্ধ করে গেছেন। আবার হিন্দুধর্মের ছুৎমার্গ নিয়ে সবচেয়ে প্রতিবাদও করে গেছেন– “হে ভারত ভুলিও না, নীচ মুচি মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই—“
আর —
আর
কোথায় ঈশ্বর?
“বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর
জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। “
বিজ্ঞান সম্মত মনস্তাত্বিক প্রকাশ তার বিশ্ব ও ঈশ্বরকে উপলব্ধির বিকাশ। তাই বাগেশ্রী রাগে– কথা ও সুরে স্বামী বিবেকানন্দ গেয়েছেন–
“নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি নাহি শশাঙ্ক সুন্দর।
ভাসে ব্যোমে ছায়াসম ছবি বিশ্বচরাচর।
অস্পষ্ট মন আকাশে জগত সংসার ভাসে।
ওঠে ভাসে ডুবে পুনঃ অহং- স্রোতে নিরন্তর।
ধীরে ধীরে ছায়াদল প্রবেশিল মহাতল
বহে মাত্র ‘ আমি আমি’– এইধারা অনুক্ষণ।”
বলে গেছেন
“মন চল নিজ নিকেতনে—“
বড়ো কমদিন তিনি পৃথিবীতে ছিলেন– মাত্র ৩৯ বৎসর। আজ সেই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষের জন্মদিবস–
(১২ই জানুয়ারি১৮৬৩ — ৪ঠা জুলাই, ১৯০২) অস্থির দুনিয়ায় নব্য হালচালের নেট জগতে আবারো একজন বিবেকানন্দের আবির্ভাব কামনা করি নূতন যুগের আদত মানবিক ধর্মাচরণের
জন্য…….
প্রণাম