আমরা দেখেছিলাম শরতের পাতা,
প্রথমে যেন গৌরবময় রঙে সজ্জিত,
তারপর আস্তে আস্তে পড়ে গেল মাটির পথে।
গলির শেষে মিশে গেল তারা—
শেষমেশ একদিন, যেন প্রকৃতির ক্রোধে,
এক বৃষ্টিসিক্ত দিনের ঝড়ে
পাতারা আছড়ে পড়ল,
চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে মাটির সাথে মিশে গেল।
আমরা শুনলাম সেই শব্দ
“শেষ!” বলে প্রকৃতি যেন ঘোষণা করল।
এক বছরের সঞ্চিত পাতা
অপচয়ের আকার নিল।
আমরা বড়াই করি—
জমিয়ে রাখার, সংরক্ষণের।
কিন্তু ভুলে যাই সময়ের অপচয়,
ভুলে যাই ঘুমিয়ে থাকার মুহূর্তের অপচয়,
অশ্রুতে ভেসে যাওয়া আনন্দের অপচয়।
আমরা এড়িয়ে যাই যুদ্ধের নিষ্ফলতা,
জাতির অপচয়।
তবু এই নভেম্বরের দিনগুলো
আমার কাছে একান্তই আলাদা।
আমার বিষণ্ণতা, যখন সে আসে আমার কাছে,
সে বলে, এই মলিন দিনগুলোই সুন্দর।
বৃষ্টিভেজা পাতা, মলিন গাছ,
কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ—
সে এগুলোকে দেখে অনন্য সৌন্দর্যের চোখে।
সে হাঁটে কাদা মাখা পথে,
আর তার ধূসর পোশাক কুয়াশায় ভিজে
হয়ে ওঠে রূপালী।
সে আমাকে বলে—
“এই ফাঁকা গাছগুলো কি তোমার চোখে পড়ে না?
এই বিবর্ণ মাটি, এই ভারী আকাশ—
এদের সৌন্দর্য কি তুমি দেখতে পাও না?”
আমি চুপ করে শুনি,
কারণ তার চোখে আমি দেখতে পাই
অন্য এক জগৎ, অন্য এক অনুভূতি।
এই নভেম্বরের দিনগুলো
আমারও প্রিয় হয়ে ওঠে।
বরফ পড়ার আগে, প্রকৃতির নিরাভরণ রূপে
যে শান্তি আসে, তা যেন ভিন্ন এক দুনিয়া।
তাকে বোঝানোর প্রয়োজন নেই,
কারণ তার প্রশংসায় এ সৌন্দর্য
আরও গভীর হয়।
এভাবে, পাতা যেমন মাটিতে মিশে যায়,
আমাদেরও মিশতে হয় সময়ের স্রোতে।
তবু এই নভেম্বর, এই বৃষ্টি,
এই মলিনতা—
আমাদের মনে করিয়ে দেয়,
অপচয় আর ক্ষতির মধ্যেও
থাকে সৌন্দর্য,
যদি তা দেখার মতো চোখ থাকে।