Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কলকাতার জঙ্গলে || Sunil Gangopadhyay » Page 9

কলকাতার জঙ্গলে || Sunil Gangopadhyay

জগাই মল্লিক দুহাত তুলে বলল, দাঁড়ান দাঁড়ান, রায়চৌধুরীবাবু, আগে আমার একটা কথা শুনুন! আমি কি আপনার সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেছি। আপনার কী চাই বলুন!

কাকাবাবু বললেন, আমি চাই, তুমি ওই সিঁড়ি দিয়ে প্রথমে নামবে!

মেঝের গর্তটার দিকে তাকিয়ে জগাই মল্লিক যেন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। সে বিড়বিড় করে বলল, সিঁড়ি, সিঁড়ি, ওটার কথা তো–আমি নিজেই প্ৰায় ভুলে গেছলাম। দশ-বারো বচ্ছর ব্যবহার হয়নি। ওর মধ্যে সাপখোপ কী না কী আছে!

কাকাবাবু বললেন, সে-সব কিছু নেই। সিঁড়ির মাঝপথে রয়েছে। একজন মানুষ। সে তোমার লোকও হতে পারে, পুলিশের লোকও হতে পারে। তুমি আগে আগে নামবে। তোমার লোক যদি হয়, তুমি বলে দাও যেন গুলি টুলি না চালায়। চালালে, তুমিই আগে মরবে!

ওখানে কে আছে, আমি তো জানি না!

তা হলে গিয়ে দেখতে হবে। চলো!

শুনুন, শুনুন! আগে যা হয়েছে, হয়েছে, সব ভুলে যান। সব ক্ষমা করে দিন। আমি আপনাকে আর আপনার ভাইপো-ভাইঝিকে এক্ষুনি বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। মা-কালীর নাম নিয়ে বলছি, আপনাদের গায়ে আর কেউ হাত ছোঁয়াবে না।

বিপদে পড়লেই যত রাজ্যের শয়তান-বদমাইশদের ধর্মের কথা মনে পড়ে। আর এক সেকেন্ড দেরি নয়। আর দেরি করলে প্রথমে তোমার দুপায়ে গুলি করব, তারপর জোর করে ধাক্কা দিয়ে তোমাকে ওই সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে দেব।

জগাই মল্লিক অসহায়ভাবে এদিক-ওদিক তাকাল। রাজকুমার আবার বুবু শব্দ করল মুখ দিয়ে।

কাকাবাবু তার দিকে তাকিয়ে বললেন, তুমি এইখানেই পড়ে থাকবে। কই জগাই মল্লিক, নামো?

জগাই মল্লিক গর্তটার কাছে মুখ নিয়ে কাঁপা-কাঁপা গলায় বলল, এই নীচে কে আছিস? আমি বড়বাবু, আমি আসছি।

তলা থেকে কোনও সাড়া এল না।

কাকাবাবু একটা ক্রাচ তুলে নিয়ে বললেন, আমি এটা দিয়েই কাজ চালাব, সন্তু তুই আর-একটা নিয়ে আয়। তুই আমার পেছন-পেছন আসবি।

জগাই মল্লিক মোটাসোটা মানুষ, পুরো সিঁড়িটা তার শরীরে ঢেকে আছে। কাকাবাবু তার পিঠে রিভলভারের নল ঠেকিয়ে নামতে লাগলেন।

জগাই মল্লিক এক ধাপ করে নামছে, আর চেঁচিয়ে বলছে, এই কে আছিস, আমি বড়বাবু! আমি বড়বাবু!

সিঁড়িটা যেখানে প্রথম বেঁকেছে, সেখানে সে থমকে দাঁড়াল।

কাকাবাবু বললেন, থেমে লাভ নেই। আবার চেঁচিয়ে দ্যাখো, তোমার লোক আছে কি না। এগোতে তোমাকে হবেই।

জগাই মল্লিক আবার চ্যাঁচাল। কোনও সাড়া এল না।

তারপর সে বাঁকের মুখে এক পা রাখতেই ওপাশ থেকে দুটো হাত বেরিয়ে এসে তার গলা ধরে টেনে নিয়ে গেল চোখের নিমেষে।

কাকাবাবু এক পা পিছিয়ে এলেন।

জগাই মল্লিকের ভয়ার্তা চিৎকারের সঙ্গে-সঙ্গে শোনা গেল একটা ভারী শরীর গড়িয়ে পড়ার শব্দ। যে টেনে নিয়েছে, সে সিঁড়ি দিয়ে তাকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে। গড়ানোর শব্দ আর চিৎকার দুটোই এক সঙ্গে থেমে গেল।

কাকাবাবু দৃঢ় গলায় বললেন, ওপাশে কে? বাঁচতে চাও তো সরে যাও, নইলে আমি গুলি করব।

এবারে একজন বলে উঠল, হামার সাহেব কোথায় আছে? তুমাদের সাথে আছে?

সন্তুর সবঙ্গে একটা শিহরন খেলে গেল। এই গলার আওয়াজ তার চেনা। এ তো টাইগার নামে বিশাল চেহারার সেই লোকটা। টাইগার ওপরেই একটা ঘরে বসে ছিল। কখন নীচে নেমে গেছে, আর সিঁড়ির মুখটা খুঁজে পেয়েছে।

এই টাইগার কিন্তু সন্তুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি। সে প্ৰভুভুক্ত, সে তার সাহেবের খোঁজ নিতে এসেছে।

সন্তু কাকাবাবুর পিঠে হাত দিয়ে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলল, টাইগারজি, তোমার সাহেব নেই। তুমি সরে যাও, আমাদের যেতে দাও! আমাদের সঙ্গে সত্যি রিভলভার আছে।

ওপাশ থেকে টাইগার বলল, হামার সাহেব মরে গেছে?

কাকাবাবু বললেন, না, সে মরেনি। কিন্তু তার চাকরি আর তোমাকে করতে হবে না। তুমি যদি বাঁচতে চাও তো পালাও!

টাইগার বলল, সাহেবের জন্য হামি জান দেব, তবু ভাগব না!

কাকাবাবু বললেন, সাহেবের জন্য তোমাকে জান দিতে হবে না। তবে সাহেবের সঙ্গে যদি একসঙ্গে জেল খাটতে চাও, তবে থাকো।

কাকাবাবু বুঝে গেছেন টাইগারের কাছে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র নেই। ছুরি-টুরি থাকতে পারে। তিনি মাথাটা বা দিকে হেলিয়ে টাইগারকে একপলক দেখে নিলেন। তারপর বললেন, সময় নষ্ট কোরো না, এবার তোমার পায়ে গুলি চালাবা! তুমি পিছু হটো!

টাইগার কয়েকটা সিঁড়ি নেমে যেতেই কাকাবাবু চট করে বাঁক ঘুরে বললেন, দাঁড়াও! আর এক পা নড়বে না! নড়লেই গুলি চালাব। শোনো, তোমাকে ছেড়ে দিতে রাজি আছি। কিন্তু তার আগে বলো, আমাদের সঙ্গের মেয়েটি কোথায়? তার কোনও ক্ষতি হলে তোমায় শেষ করে দেব!

টাইগার বলল, সে লেড়কি নীচে আছে। ঠিক আছে।

কাকাবাবু বললেন, আগে তাকে দেখতে চাই, তারপর তোমাকে ছাড়ব।–এক পা এক পা করে নামো।

কিন্তু টাইগার এবারে দৌড় মারার চেষ্টা করল। কাকাবাবু সঙ্গে-সঙ্গে গুলি চালাতেই সে আছড়ে পড়ল। সেইসঙ্গে সিঁড়িতে প্ৰচণ্ড শব্দ হল গুলির।

কাকাবাবু সন্তুর দিকে ফিরে বললেন, ইচ্ছে করে ওর গায়ে গুলি করিনি, শুধু ওকে ভয় দেখিয়েছি, ও বোধহয় এতক্ষণ বিশ্বাস করছিল না।

তারপর তিনি হেঁকে বললেন, এই ওঠে, টাইগার। এক পা এক পা করে নামবে। দেবলীনা যদি ঠিকঠাক থাকে, তবে তোমার ছুটি। আর তা না-হলে এতে আরও যে-কটা গুলি আছে সব তোমার মগজে ভরে দেব!

টাইগার উঠে দাঁড়িয়ে বলল, সাহেবের পিস্তল ছিনিয়ে নিয়েছেন। তবে হামার সাহেব খতম?

কাকাবাবু বললেন, তোমার সাহেবের কাজ-করবার সব খতম। তোমাকে অন্য চাকরি খুঁজতে হবে, যদি পুলিশের হাতে ধরা না পড়ো!

জগাই মল্লিকের দেহটা এক জায়গায় নিথর হয়ে পড়ে আছে। টাইগার তাকে ডিঙিয়ে নামল। কাকাবাবু তার কাছে এসে নিচু হয়ে ওর নাকটা খুঁজে সেখানে হাত রাখলেন।

তারপর আবার উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, নিশ্বাস পড়ছে। অজ্ঞান হয়ে গেছে। ও থাক এখানে। এখন কিছু করা যাবে না।

সিঁড়ি শেষ হয়ে যাবার পর যেখানে বারান্দা, সেখানে ভেতরের দিকে দরজা আছে একটা। সন্তু আগে এই দরজাটা বন্ধ দেখেছিল, এখনও বন্ধ। কিন্তু টাইগার সেই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে জোরে ঠেলতেই সেটা খুলে গেল।

এবারে টাইগার টর্চ জেলে বলল, ইধারে আসুন।

সন্তু বুঝল, টাইগার তাদের মতন বারান্দা ডিঙিয়ে এই সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসেনি। মাটির তলার জায়গাটায় ঘুরতে-ঘুরতে সে কোনওক্রমে এই দরজাটা খুঁজে পেয়েছে, তারপর দরজাটা খুলে কিংবা তালা ভেঙে সে দেখতে পেয়েছে। সিঁড়িটা।

সেই ঘরের মধ্যে আবার একটা লোহার ঘোরানো সিঁড়ি আছে। সেটা নেমে গেছে মাটির নীচে। ফের একতলা নামবার পর আবার একটা দরজা। টাইগার এক হ্যাঁচকাটানে সেই দরজাটা খুলতেই বাইরের টাটকা হাওয়া নাকে এল।

এই জায়গাটা ওপরের বারান্দার ঠিক তলায়। এখানে আগাছার জঙ্গল হয়ে আছে, তাই বাইরে থেকে দরজাটা দেখতে পাওয়ার কোনও উপায় নেই।

টাইগার সেই ঝোপের মধ্যে টর্চের আলো ফেলে বলল, ইয়ে দেখিয়ে। হামি ওকে মারিনি, কিছু বলিনি, কোনও লেড়কিকে আমি মারি না। লেকিন ও হামার হাথ কামড়ে দিয়েছে!

একটা জলের পাইপের সঙ্গে বাঁধা রয়েছে দেবলীনা। তার মুখে একটা রুমাল গোঁজা। চোখ বন্ধ, ঘাড়টা হেলে গেছে একদিকে।

দেবলীনাকে ওই অবস্থায় দেখেই সন্তুর বুকটা কেঁপে উঠল।

কাকাবাবু বললেন, সন্তু, দ্যাখতো। ওর বাঁধন খুলে দে!

সন্তু খুব সাবধানে ওরা থুতনিটা ধরে উঁচু করে মুখ থেকে আগে দালা-পাকানো রুমালটা বার করল টেনে-টেনে। দেবলীনা চোখ মেলে তাকাল।

কাকাবাবু টাইগারকে বললেন, তুমি এখন যেতে পারো। আর এ-সব কাজ কোরো না। তোমার গায়ে শক্তি আছে, অন্য অনেক কাজ পাবে। আর কখনও যদি তোমাকে কোনও বদমাশদের দলে দেখি, তা হলে কিন্তু আর ক্ষমা করব না।

টাইগার অন্য কিছু বলল না, শুধু বলল, টৰ্চটা আপনাদের লাগবে। এই নিন।

টাৰ্চটা সে কাকাবাবুর পায়ের কাছে ফেলে দিয়ে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল।

বাঁধন খুলে দেবার পর দেবলীনা ছুটে এসে কাকাবাবুর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কাঁদতে লাগল হু-হু করে। কাকাবাবু তার পিঠে হাত ঝুলিয়ে দিয়ে বললেন, ব্যস, ব্যস, সব ঠিক হয়ে গেছে। আর কোনও ভয় নেই। বাবাঃ, তুমি যা বিপদে ফেলেছিলে এবারে আমাদের। তোমার জন্যই তো এত সব কাণ্ড হল?

দূরে একটা কুকুর ডেকে উঠল ঘেউ-ঘেউ করে।

কাকাবাবু বললেন, এখানেও পাহারাদার কুকুর আছে? আমার কুকুর মারতে খারাপ লাগে। দেখা যাক কী হয়। তোরা দুজনে আমার পেছন-পেছন আয়?

খানিকটা এগোতেই একটা কুকুর ডাকতে-ডাকতে ছুটে এল এদিকে। কাকাবাবু রিভলভারটা ধরে রাখলেন। সন্তু মুখ দিয়ে শব্দ করল, চুঃ, চুঃ!

কুকুরটা থমকে দাঁড়িয়ে ওদের দেখল। তারপর আবার দৌড়ে ফিরে গেল।

কাকাবাবু বললেন, তেমন বিপজ্জনক নয়।

বাড়ির পেছন দিকটা ঘুরে সামনের দিকটায় বাগানের কাছে আসতেই দেখা গেল পর পর দুটো জিপ-গাড়ি। বাগানে আলো জ্বলছে। গাড়ি দুটো সবে স্টার্ট নিয়েছে, একটা গাড়ির পাশে-পাশে হাঁটতে-হাঁটতে যে-লোকটি হেসে-হেসে কথা বলছে, তাকে দেখে সন্তুর চোখ কপালে উঠে গেল।

জগাই মল্লিক!

কাকাবাবু চেঁচিয়ে ডেকে উঠলেন, ধ্রুব! ধ্রুব!

পেছনের জিপটা থেকে একজন মুখ বাড়িয়ে বলল, কে? আমার নাম ধরে কে ডাকছে?

কাকাবাবু আবার বললেন, ধ্রুব, একটু শোনো?

জিপ দুটো থেমে গেল।

কাকাবাবু সন্তু আর দেবলীনাকে বললেন, তোমরা ওই গাছতলায় অন্ধকারে একটু লুকিয়ে থাকে। খানিকটা মজা করা যাক। সন্তু, ওই যে ওই লোকটাকে দেখছিস, ও কিন্তু জগাই মল্লিক নয়। তার যমজ ভাই মাধব মল্লিক।

ধ্রুব রায় জিপ থেকে নেমে পড়ে অবাক হয়ে চেয়ে রইলেন। কাকাবাবু কাছে এসে বললেন, এই যে ধ্রুব, তোমার সঙ্গে একটু কথা আছে।

ধ্রুব রায় বললেন, কাকাবাবু? আপনি এখানে? দুদিন ধরে আপনাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ-মহল তোলপাড়।

কাকাবাবু হাসিমুখে বললেন, না, না, আমি নিজেই একটু বেড়াতে গিয়েছিলুম।

তারপর হঠাৎ মুখ ফিরিয়ে মাধব মল্লিকের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আপনিই তো মাধ্যই মল্লিক, তাই না?

লোকটি নীরস গলায় বলল, মাধাই নয়, মাধব। আপনাকে তো চিনতে পারলুম না?

কাকাবাবু বললেন, আমি এমনিই একজন সাধারণ লোক। গঙ্গার ধারে বেড়াচ্ছিলুম, ভুল করে আপনাদের কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়েছি।

তারপর ধ্রুব রায়কে বললেন, তুমি এই মাধ্যই মল্লিকবাবুকে তোমার জিপে একটু উঠে বসতে বলে। উনি একটু অপেক্ষা করুন, ততক্ষণে তোমার সঙ্গে আমি একটা প্ৰাইভেট কথা সেরে নিই!

মাধাই মল্লিক রেগে গিয়ে বলল, কেন, আমায় জিপে উঠে বসতে হবে কেন?

কাকাবাবু বললেন, বসুন না! শুধু শুধু দাঁড়িয়ে থাকবেন, জিপে উঠে বসুন বরং। এসো ধ্রুব?

ধ্রুব রায় কাকাবাবুর ইঙ্গিতটা বুঝে একজন ইন্সপেক্টরের দিকে ইঙ্গিত করলেন মাধাই মল্লিকের ওপর নজর রাখবার জন্য।

তারপর কাকাবাবুর সঙ্গে হেঁটে এলেন খানিকটা।

বাগানের মাঝামাঝি এসে ধ্রুব রায় বললেন, এবারে সব ব্যাপারটা খুলে বলুন!

কাকাবাবু বললেন, সে-সব পরে বলা যাবে। তার আগে একটা কথা। তুমি একবার আমার সঙ্গে অ্যাডভেঞ্চারে যাবে বলেছিলে না?

ধ্রুব বলল, হ্যাঁ, তা তো বলেছিলাম…

এখানেই সেরকম একটা অ্যাডভেঞ্চার শুরু করা যায়।

এখানে মানে এই বাড়ির মধ্যে? আমরা তো একটা খবর পেয়ে সার্চ ওয়ারেন্ট এনেছিলুম। সারা বাড়ি খুঁজে দেখা হল, সেরকম কিছুই নেই। মাটির তলায় কয়েকটা ঘর আছে অবশ্য, কিন্তু সেখানে শুধু সিমেন্টের বস্তা।

কাকাবাবু বললেন, এসো আমার সঙ্গে।

হাঁটতে-হাঁটতে পেছনের দিকের সেই ছোট বারান্দাটার তলায় এসে বললেন, এই যে ঝোপঝাড়ের আড়ালে একটা দরজা দেখছ, এটা ঠেলে ঢুকে গেলে একটা লোহার ঘোরানো সিঁড়ি দেখবে। সেটা দিয়ে উঠলে, এই মাথার ওপরে বারান্দাটার একদিকে আবার একটা গোপন সিঁড়ি। সেই সিঁড়ি দিয়ে উঠে। দ্যাখো তো কিছু পাওয়া যায় কি না?

ধ্রুব রায় বললেন, আপনি আসবেন না?

কাকাবাবু বললেন, হ্যাঁ, আমি পরে আসছি। তুমি এগোও। এই নাও, টৰ্চটা নাও! সোজা একেবারে চারতলায় উঠে যাবে।

ধ্রুব রায় সেই সিঁড়ি দিয়ে উঠতে শুরু করতেই কাকাবাবু বাগানের দিকে এগিয়ে এসে হাতছানি দিয়ে সন্তু আর দেবলীনাকে ডাকলেন।,

ওরা কাছে আসতেই কাকাবাবু বললেন, ধুবকে ওপরে পাঠিয়ে দিয়েছি। আমাদের আর সিঁড়ি ভাঙবার দরকার নেই, কী বল? ও ফিরে এসে দেবলীনাকে দেখে আবার অবাক হবে। ততক্ষণ আমরা গঙ্গার ধারে একটু বসি।

সন্তু আর দেবলীনাকে দুপাশে নিয়ে তিনি গঙ্গার দিকে এগিয়ে গেলেন।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9
Pages ( 9 of 9 ): « পূর্ববর্তী1 ... 78 9

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress