Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ভয়ঙ্কর সেই রাত || Roma Gupta

ভয়ঙ্কর সেই রাত || Roma Gupta

সারদাকান্ত তখন ফয়জাবাদের বস্তি অঞ্চলে সরকারি হাসপাতালে হার্টের ডাক্তার হিসেবে জয়েন করেছে। ভারত তখনও ভাগ হয়নি।
বৃটিশ শাসন অব্যাহত। সুদূর ঢাকা থেকে তার ফয়জাবাদে আসা।সঙ্গে ভাই নলিনীকান্তকে নিয়ে হাসপাতালের কাছেই একটা বাড়ি ভাড়া করে থাকেন। সম্পর্কে তাঁরা আমার মামা।
কিছুদিন পরে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে সরকারি আবাসনে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা হয়।
হাসপাতালের চত্বর বিশাল বড়। ধুধু চারিদিক।ঐ আবাসনে কতিপয় লোক থাকে। নীচে দারোয়ান রামদীন ঝাঁ থাকে। দোতলায় দুটো ব্যাচেলর ডাক্তার। আর এরা দুইভাই একটু দূরে পুব কোণের রুমটা নেয়।
আবাসনটি হসপিটাল ক্যাম্পাসে হলেও নির্জনে অবস্থিত। অদূরে মর্গ। ঘরের জানলার পাশে আছে একটা আম গাছ। শোনা যায় , দিনের বেলায় কখনো কখনো বিপ্লবীদের গোপন সভা হয়। যদিও দাড়োয়ান স্বীকার করেনা। রাতে লোক থাকেনা বললেই চলে। বৃটিশ পুলিশের ভয়ে রাতের দিকে লোকজন বেরোতে ভয় পেতো। এরকম একটা নির্জন পরিবেশে
সারদাকান্ত ভাইকে রেখে নাইট ডিউটি করতে চলে যায়।
রাতে নলিনী বিছানায় ঘুমোচ্ছে, শুনতে পাচ্ছে আমগাছ থেকে যন্ত্রণাসূচক শব্দ আসছে, যেন কোনো উৎকট ব্যাধিগ্ৰস্ত কেউ আর্তনাদ করছে। তবুও গুরুত্ব না দিয়ে ঘুমোচ্ছে। হঠাৎ দেখছে ঘর আলোকিত হয়ে উঠলো আর জানালার বাইরে থেকে দুটো কালো হাত ইশারায় ডাকছে।
ধড়পরিয়ে উঠে বসে নলিনীকান্ত, সারা শরীর ঘামছে।
কিছুক্ষণ পর একটু ধাতস্থ হয়ে ঘরের লাইট জ্বালিয়ে আবার ঘুমোনোর চেষ্টা করে। সবে ঘুমে চোখ লেগেছে দেখে একজন কৃশ বিহারি লোক বুকের উপর বসে গলা চেপে ধরে বলছে,” তু হামারা বিস্তার পর কাঁহে লেটা। তোহারা জান লে লেঙ্গে হাম। বিস্তার ছোড় দে”।
নলিনী হা- রাম,হ্যায় রাম করতে থাকে; ভয়ে স্পষ্ট রামদীন বলতে পারেনা। হাঁ রাম শুনে প্রেত উধাও।
ভোর বেলায় দাদা এলে সব ঘটনা বলে।
পরদিন সারদাকান্ত ভাই নলিনীকান্তকে নিয়েই ডিউটি যায়। সেখানেই রাত কাটায় নলিনী।
এসিস্টেন্ট নার্সকে সামনে পেয়ে নলিনী ঘটনার কথা জানালে, নার্স বলে- ঐ আবাসে হসপিটালের একটা বেড রাখা আছে। সেই রুমেই কি আপনাদের থাকার ব্যবস্থা!
তারপর বলে, এখানে পুরোনো ওয়ার্ডে বেডটা ছিল। একজন দুরারোগ্য ব্যাধির রোগী তিনমাস ভোগার পর মারা যায়। তারপর থেকে ঐ বেডে যাকেই দেওয়া হয় সেই রোগীকেও রাতে ঘুমানোর সময় ঠিক আপনি যেমন বলছেন ঐভাবে ভয় দেখায়।
পাল্টে পাল্টে অনেক রোগীকে রাখা হয়, কিন্তু সবাই পরদিন জোর করে ছুটি নিয়ে পালিয়ে যায়।কেউ থাকতে চায়না। দিনের বেলায় কিন্তু কোনো উৎপাত নেই। রাতে ঘুমোলেই এসব কান্ড।
নলিনী একথা দাদাকে জানালে সারদাকান্ত অনুসন্ধান করে জানে সত্যি ঐ বেডটাই তাদের ঘরে। ভয়ে তারা আবাসন ছাড়ে।
পরে সারদাকান্তের প্রচেষ্টায় বেডটা সরযু নদীতে ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress