Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » উড়ে উড়ে আসে || Samarpita Raha

উড়ে উড়ে আসে || Samarpita Raha

কর্তার কাজের সূত্রে পুরুলিয়া আসা। প্রজেক্ট তিন মাসে ও শেষ হতে পারে , আবার তিন বছরে শেষ হতে পারে।
যে গেস্ট হাউসে ছিলাম, চারিদিকে সারি সারি পলাশ গাছ।তখন ছিল বসন্ত কাল।লাল ফুলে ঢাকা। অপরূপা সৌন্দর্য। এরকম সুদৃশ্য দেখে একাকিত্ব কেটে যাচ্ছিল।
প্রথমে ভেবেছিলাম সময় কাটবে কি করে!
কাজের মহিলা তিন বেলা এসে সব কাজ করে দিয়ে যায়।
আমার একটা কাজ সময়মত খাওয়া,আর প্রকৃতিকে দেখা।
ওর থেক্যে বেইশ মানভূম ভাষাটো শিইখছিল্লাম।
ও তো হেস্যে কুট্টিকুট্টি ।
ও বলছেক মু লাকি পাইরবক লাই।
মু তো রাগ কইরে বল্যি তুক্কে আর আইসতে হবেক লাই।
শিখ্যালেই আসবিক।
তারপর সত্যি সত্যি দুই দিন হয়ে গেলও আর আসছিল না।কোনো খবর ও নেই। দারোয়ানের মুখে শুনলাম ওই দূরের বাংলোতে থাকে।ওর বাবা,মা কেউ নেই।বাংলোটা ও দেখাশোনা করে।ওই বাড়ির কর্তা চাকরি ছেড়ে নিজের বাংলো তে থাকে।কর্তার নাকি একটা মেয়ে আছে।তাকে ফুলমণি দেখাশোনা করে।মেয়েটা কলেজে পড়ে।
আমি সাহস করে পরদিন কর্তা অফিস যাবার পর ওই বাংলোতে যাই। ফুলমণি করে ডাকি।অল্প বয়সী মেয়ে আমাকে দেখে খুশীতে পাগল।আয় ক্যানে।দেখ্যে যা মুর কর্তাবাবার বাড়িটো।কর্তাবাব্বার অস্সুখ করেছেক।আলাপ হতেই চমকে উঠি!
সমীরণ তুমি!
তখন সমীরণ ক্যালপল ছাড়া দরদর করে ঘামছে।কত কথা আমার মনের মধ্যে *উড়ে উড়ে আসে।ত্রিশ বছর আগে সমীরণের সাথে বিয়ে ঠিক। বিয়ের বাসরে বর অনুপস্থিত। লগ্নভ্রষ্টা মেয়েকে উদ্ধার করে পাশের পাড়ার নিলয় বলে এক ছেলে।যার সাথে এত বছরের বিবাহিত জীবন।চাপ দিতে জানলাম নিলয় , সমীরণের প্রিয় বন্ধু। বিয়ের দিন আমার ছবি সমীরণের কাছে দেখে অনুনয় করে বলে ,নিলয় নাকি আমাকে ছোট্ট থেকে ভালোবাসে। আমি বলি বন্ধুর জন্য তুমি’তো সেদিন এতটা করলে , কিন্তু তোমার বন্ধু’তো কোনোদিন তোমার কথা বলে নি।তবে আমাদের সুখের সংসার।
রাগে অপমানে আমি ঘামছিলাম। সমীরণের সাথে বিয়ে ঠিক হবার পর ছ’মাস ফোনে কথা , ঘোরাঘুরি’তো হয়েছিল।কেমন টান হয়েছিল। সেই বিচ্ছেদে কষ্ট, ঘৃণা জন্মেছিল।নিলয়কে মহান ভেবেছিলাম।
সমীরণ বলে সেদিন নিলয়কে বাঁচাতে আমাকে সড়ে যেতে হয়!
তবে আমি বারণ করেছিলাম বিয়ের পর বৌকে কিছু না জানাতে!
দুজনের মনে শত শত মুহুর্ত উড়ে উড়ে আসে, অতীত স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। এইভাবে সারা দুপুর কেটে যায়।
সমীরণের মুখে শুনলাম ওর বৌ বাচ্চার জন্ম দিয়েই মারা গেছেন। মেয়ে “ল “কলেজে পড়ছে।
নিজের গেষ্ট হাউস রুমে ফিরে আসি।
সমীরণ ঠিক পরদিন গেষ্ট হাউসে আসে।নিলয় তো ভূত দেখছিল। আমি স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করি। নিলয়কে বলি ওনার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তখন দেখি নিলয় ও অজানা আশঙ্কায় ঘামছিল।
আমি বলি উনি অন্য মেয়েকে ভালবাসতেন। তাঁকে বিয়ে করেছেন। তাইতো তোমার সাথে আমার গাঁটছড়া বাঁধা হয়েছে। নিলয়কে নতুন করে দোষ তো দেওয়া যায় না ।
দিন এগিয়ে চলে সমীরণের মেয়ের সাথে আমার ছেলের মাঘ মাসে বিয়ে। আপনারা বিয়েতে আসছেন তো!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress