বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যায়
আমি সাবিনা খাতুন, থাকি ঢাকায় । স্বামী সৌধি-আরবে, এক তেলের কোম্পানীতে চাকরী করে। বছরে একবার দেশে আসে, মাসখানেক থেকে আবার চলে যায়। যখন থাকে আনন্দের জোয়ারে ভাসি। চলে গেলেই জীবন শুষ্ক মরুভূমি।
দু’বছর কাটার পর, সময় কাটাবার জন্য আমি এক ক্লাবের সদস্য হই । সেখানে পরিচয় হয় রমণীমোহন চৌধুরী নামে এক কবির সঙ্গে। মানুষটি ভদ্র, সুরসিক, মার্জিত, সুন্দর কথা বলে।
কিছুদিন ক্লাবে মেলা-মেশার পর তার সাথে আমার হৃদ্যতা বাড়ে ,তার উপর বিশ্বাস জন্মায়। এরপর আমি তাকে একদিন আমাদের বাড়িতে আসতে বলি।
সেদিন সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়, বেলা বাড়ার সঙ্গে বৃষ্টির প্রকোপ বাড়ে। সন্ধ্যায় তার আসার কথা, সারা শহর তখন জলমগ্ন। ভাবি সে বুঝি আর এলো না। বৃষ্টির উপর আমার রাগ হয় খুব। তার প্রত্যাশা যখন ছেড়ে দিয়েছি, ঠিক সেই মুহূর্তে কলিং বেল বেজে উঠল।
দরোজা খুলে আমি তাকে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই।
এসো এসো বলে আমি তাকে ঘরে এনে বসাই। দেখি তার জামা প্যান্ট সব ভিজে গেছে। আলমারি খুলে আমার স্বামীর একসেট জামা কাপড় পরার জন্য তাকে বের করে দিই। বাথরুম থেকে শুকনো জামা কাপড় পরে সে যখন বেরিয়ে আসে আমি তাকে দেখে অবাক হয়ে যাই। দেখে মনেহয় ঠিক যেন আমার স্বামীই। পোষাক মানুষকে কতটা বদলে দেয়।
আমরা কিছু খাবার আর ড্রিংস নিয়ে বসি। দু’পেগ খাবার পরই কবি বলে, চলো আজ ছাদে গিয়ে আমরা দু’জনে একসঙ্গে ভিজবো। আমার সর্দির ধাত বলে, আমি না না করি। কবি আমার বারণ উপেক্ষা করে, প্রায় জোর করেই আমায় ছাদে নিয়ে যায়।
সে আবেগে গান ধরে,
‘আজি ঝর ঝর মুখর বাদল দিনে,
জানিনে, আমি জানিনে
সাবিনা ছাড়া আর কিছু জানিনে
আজি ঝর ঝর মুখরও বাদল দিনে…….’
গান করতে করতেই আচমকা সে আমার কাছে এসে, আমাকে টেনে নেয়। আমি তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আমি আপত্তি করি, এ কি করছেন কবি?
সে হেসে বলে, আমি কিছুই করছি না। যা করার তা করছে এই প্রকৃতি ও পরিবেশ। এতে আমার কোন দোষ নেই।
তার কথা আমাকে স্পর্শ করে। আমাকে ভিতরে ভিতরে আলোড়িত করে। আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারি না। আমিও একান্ত ভাবে নিজেকে সঁপে দিই বৃষ্টি মুখর সন্ধ্যার কাছে। তখন মনেহয়, যৌনতা শৃঙ্গার রসের এক স্পর্শময় ছন্দ খেলা ছাড়া আর কিছুই নয়।
তারপর সে কখন আমাকে ঘরে পৌঁছে দিয়ে চলে গেছে আমি টের পাইনি। সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখি টেবিলের উপর আমার স্বামীর জামা প্যান্টটা পড়ে আছে। কাঁদব কি হাসব আমি বুঝতে পারছি না। কারণ, আমার জীবনে কখনও এ’রকম একটা ঘটনা ঘটবে, আমি ভাবতে পারিনি।