Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » দীর্ঘশ্বাস যখন অভিশাপ || Jharna Das

দীর্ঘশ্বাস যখন অভিশাপ || Jharna Das

” তুমি টাকা খরচ করার কথা ছাড়া আর তো কিছুই ভাবতে পারো না, রোজগার তো করতে হয় না ! ” অর্পন কথাগুলো মোহনাকে বলে চলে গেল।
মোহনার চোখ দুটো ভরা বর্ষার মতো জলে টইটম্বুর হয়ে উঠল। খুব কাঁদতে ইচ্ছা করছে মোহনার, চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে। তবুও কাঁদতে পারছে না, মোহনাকে কাঁদতে দেখলে অর্পন বলে উঠবে ” নাটক করছে ।” কতবার এই কথাটা অর্পনের মুখে শুনেছে।
কি এমন চেয়েছিল ও! শুধু একভাবে ঘরের মধ্যে থাকতে থাকতে দম বন্ধ লাগছিলো, তাই বলেছিল ” চলো না ছোট খাট কোথাও একটু ঘুরে আসি সবাই মিলে !” তার উত্তর অর্পন এইভাবে দিয়েছিলো ।
মোহনা কখনো বন্ধুর মতো করে পাশে পায়নি অর্পনকে।সব সময় হাবেভাবে বুঝিয়েছে মোহনাকে দয়া করেছে বিয়ে করে। অর্পনের বাড়ির লোকেরাও দিনের পর দিন অপমান করেছে আর অর্পন এই সমস্ত কিছু কে সমর্থন করে গেছে। মোহনা কখনো জানাতে গেলে বলেছে “ওরা তো ঠিকই বলেছে, তুমি আমাদের বাড়ির যোগ্য না কি! তোমাদের আমাদের স্ট্যান্ডার্ড মেলে না। তাই নাটক কোরো না।” মোহনা অসহায়ের মতো সব সহ্য করে নেয় কারণ ওর মাথার ওপর কেউ নেই ।
গ্রামের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে মোহনা। অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে ও। বাড়িতে টিউশনি করে সেই টাকায় পড়াশোনার খরচ চালিয়েছে। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। ঈশ্বর ওর জন্য আরও অনেক অবহেলা, অপমান সঞ্চয় করে রেখেছেন। স্বামীর ভালবাসা ও স্বামীকে বন্ধুর মতো পাশে পাওয়ার কোনো অধিকারই নেই। কোন্ অপরাধের শাস্তি ঈশ্বর ওকে দিচ্ছে ভাবতে থাকে।
ছোটবেলার কথা মনে পড়ে মোহনার।যখন ক্লাস নাইন এ পড়ে ওর ই এক বান্ধবী রমার বিয়ে হয়ে যায়। রমার বরের এক বন্ধু প্রতীকের মোহনাকে পছন্দ হয়
। মোহনাকে প্রতীকের পছন্দের কথা জানাতে মোহনা বলেছিল,” বিয়ে টিয়ের ব্যাপার বাড়ির লোক বুঝবে।”
তাই প্রতীক সরাসরি মোহনার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় । প্রতীকের বাড়ি থেকে মোহনাকে দেখতে আসে। কিন্তু এই সম্বন্ধ মোহনার বাড়ির লোকের পছন্দ ছিল না তাই একপ্রকার অপমান করা হয়েছিল প্রতীকের বাড়ির লোকের সঙ্গে ‌। কারণ টা ছিল মোহনা ছোট, পড়াশোনা করছে।এত তাড়াতাড়ি মোহনার বিয়ে দিতে চায় না। মোহনা তখন এত কিছু বোঝার মতো বুদ্ধি হয় নি। সবসময় বাড়ির লোকের কথা কে সম্মান জানিয়েছে। তাই সেদিন এই সম্বন্ধ টা হয়নি।
মোহনা একবারের জন্য ভাবতে পারে নি এই ঘটনা টা ওর জীবনের অভিশাপ হয়ে যাবে। অনেক পরে মোহনা জানতে পেরেছিল প্রতীক আর বিয়ে করেনি।ভয় পেয়ে যায় মোহনা।ও তো কোনদিন এই ভাবে ভাবেনি, তাহলে প্রতীক বিয়ে করলো না কেন! ” তবে কি প্রতীকের দীর্ঘশ্বাস মোহনার জীবনের অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে! ” জীবনের অপরাহ্ন বেলায় এই সব কথা ভাবতে ভাবতে মোহনার চোখের কোণ ভারি হয়ে যায়। চোখের প্লাবন আটকে রাখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *