Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » আনন্দাশ্রু || Suchandra Bose

আনন্দাশ্রু || Suchandra Bose

আনন্দাশ্রু

এমন অনেক কথাই মনের গহীনে থাকে যা প্রকাশ করা যায় না।প্রকাশ করতে গিয়ে মনে হয় যেন অনেক কিছুই বলা হলো না। এবার তাহলে পাশের বাড়ির মাসিমার কথা দিয়েই শুরু করি।

পৃথিবী জুড়ে কত অসহায় মানুষ আছে তার খবর কে বা রাখে? নিজের সমস্যার সমাধানের চিন্তা নিয়েই সবাই ব্যস্ত।প্রতিবেশিরা কে কেমন আছে কারো খবর কেউ রাখতে পারে না।পাশের বাড়ির মাসিমা নিঃসন্তান।তার তিনকুলে আত্মীয় বলে কেউ নেই। রোজই বেলায় এসে আমার সঙ্গে গল্প করতেন।স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি পড়লেন মহামুশকিলে।তিনি কোনদিন দোকান বাজার করেন নি,ব্যাঙ্কে গিয়ে নিজে টাকা পয়সা তোলেননি।যতদিন মেশোমশাই বেঁচে ছিলেন তিনিই নিজে সব করেছেন।তবে অফিসের সাফাই কর্মীর এক ছেলে থাকত তাদের বাড়িতে। মাঝে মাঝে সেও ব্যাঙ্কের এবং অন্য কাজও করে দিত।মাসিমা বলত কানু খুব বিশ্বাসী ছিল রে।সেও চলে গেল মেসো গত হওয়ার মাস দুই পরে।এখন এই বৃদ্ধার দেখভাল কে করবে। পেনশন কে তুলে এনে দেবে। আমাকে বলল পেনশনের জন্য কিসব করতে হয় তার ব্যবস্থা করে দিতে।সে সময় করে দরখাস্ত জমা দেওয়াও হল কিন্তু তার পেনশন দুই বছর ধরে আসে না। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে চিঠি দিয়েও কোন লাভ না হওয়ায় চলে গেলাম ওনাকে নিয়ে আদালতে। দুই তিনদিন ঘোরাঘুরি করেও ম্যাজিস্ট্রেটের দেখা পাওয়া গেল না।তাই একদিন দুজনেই সিঁড়িতে বসে রইলাম সাহেবের অপেক্ষায়।

দেখলাম ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব নিজের দপ্তরে পৌঁছানোর জন্য সবেমাত্র গাড়ি থেকে নেমে সিঁড়িতে পা দিয়েছেন,তিনি দেখলেন সেই সিঁড়িতে আমরা বসে আছি। বৃদ্ধা তখন তাকে দেখে হাতজোড় করে কান্নাকাটি শুরু করলেন। সাহেব থমকে দাঁড়িয়ে গেলেন। বৃদ্ধার কাছে সব কথা শুনলেন।তিনি অফিসে ঢুকে পিয়নকে ডেকে বৃদ্ধার ফাইলটি নিয়ে আসতে বললেন।দেখলেন বৃদ্ধার কোন গাফিলতি নেই।গাফিলতি অফিসারদের।তিনি সংশ্লিষ্ট অফিসারদের ডাকলেন এবং বৃদ্ধার আবেদন পত্রটি পরিপূরণ করে মাসিমাকে পেমেন্টের অর্ডার দিলেন।কয়েক মুহূর্তের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হয়ে গেল।তার দুঃখের অশ্রু আনন্দের অশ্রুতে বদলে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *