Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » তোমার আসা, না-আসার উদ্দেশে || Shamsur Rahman

তোমার আসা, না-আসার উদ্দেশে || Shamsur Rahman

দূরগামী পাখিদের বুক থেকে ভরসন্ধ্যা নেমে পড়তেই
বুকশেলফ্‌ থেকে
প্লেটোর রিপাবলিক লরেল পাতার মালা নিয়ে,
রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা যূথির স্তবক নিয়ে
গালিবের দিওয়ান গোলাপ,
ইয়েটস্‌ লাইলাক, ড্যাফোডিল নিয়ে
এবং লালনগীতি চন্দনের ফোঁটা নিয়ে আর
নিঃসঙ্গ অধম আমি সারা পথে প্রতীক্ষার ফুল
বিছিয়ে দাঁড়িয়ে আছি তোমার জন্যেই আর
এই হৃদয়ের স্পন্দন ক্রমেই দ্রুত থেকে দ্রুততর হচ্ছে শুধু।

এই তো এসেছ তুমি। নইলে কেন আমার এ-ঘর
‘এসো, এসো’ সম্ভাষণে গুঞ্জরিত? কেন প্রজ্বলিত
দীপ? কেন বেজে ওঠে সারেঙ্গি, দোতারা, এস্রাজ, সরোদ?
গহন সৌন্দর্য নিয়ে বসলে অদূরে নিরিবিলি
মধ্যবিত্ত আসনে, তাকালে জানালার বাইরে খানিক, যেন
আকাশের নক্ষত্র এবং বৃক্ষশোভা
ঘরের ভেতর ডেকে আনবে এখনই। ইচ্ছে হলো
তোমার একান্ত কাছে গিয়ে বসি, হাতে হাত রাখি।

আমার চোখের পাখি তোমার চোখের নিরালায়
গভীর প্রবেশ করে বলে-
‘তোমাকেই ভালোবাসি খ্রিষ্টের জন্মেরও আগে থেকে। অনন্তর
তোমার ওষ্ঠের প্রজাপতি নিবিড় আবৃত্তি করে,-
‘আমার হৃদয় আমি তোমাকেই করেছি অর্পণ
বুদ্ধের জন্মেরও আগে থেকে। ঊর্ণাজালে কম্পমান মহাকাল।

অকস্মাৎ দেখি তুমি নেই এখানে কোথাও, বড়
একা বসে আছি অন্ধকার ঘরে। হায়, তবে কেন
তোমার উপস্থিতির মরীচিকা ও সৌরভ মগ্ন চেতনায়
ভেসে উঠেছিল? তুমি প্রকৃত আসোনি, এই সত্য মেনে নিয়ে
প্লেটোর রিপাবলি, রবীন্দ্রনাথের সঞ্চয়িতা,
এবং লালনগীতি আমাকে প্রবোধ দিয়ে যে জায়গায়
চলে যায়। তবে কি অবোধ আমি তোমার নিভৃত আসা-গুলো
মনের খেয়ালে সৃষ্টি করে চলি কবিতার মতো?
ভাদ্রের ক্ষ্যাপাটে তাপে সারাদিন মাছভাজা হয়ে সন্ধ্যারাতে
ঘরে ফিরে চমকে তাকাই-কী আশ্চর্য, এক কোণে
প্রেমের কবিতা হয়ে মানবীরই বেশে। জ্বলজ্বলে
হাতটা বাড়িয়ে দিলে ঋদ্ধ ঐতিহাসিক ভঙ্গিতে,
অথচ নিশ্চিত নম্র সুরে বাঁধা আধুনিকা তুমি। গলিপথে
বেবিট্যাক্সি হাঁপানি রোগীর মতো ধুঁকতে ধুঁকতে
চলে যায়; আমরা দু’জন বসে থাকি পূর্ণিমার প্রত্যাশায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *