Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সারপ্রাইজ || Samarpita Raha

সারপ্রাইজ || Samarpita Raha

সমরবাবুর দুই ছেলে।
বড় ছেলে বিকাশ ও ছোট ছেলে প্রকাশ। দুই ভায়ের মধ্যে বয়সের তফাৎ থাকলেও…দুজনের মধ্যে খুব মিল ছিল।
দাদা বিকাশ ভাই প্রকাশের চেয়ে প্রায় ছয় বছরের বড়।প্রকাশ বরাবর একটু দুষ্টু প্রকৃতির ছিল।
অনেক সময় প্রকাশ মা -বাবার কথা না শুনলেও… দাদার কথা সবসময়েই শুনত।দাদা ভাইকে খুব ভালোবাসত।কোথায় কি করছে..পড়াশোনা ঠিকমতো করছে কিনা লক্ষ্য রাখত দাদা।

কিন্তু এই বিকাশ স্নেহের ভাইকে ছেড়ে চ‍্যাটার্ড পাশ করে লন্ডনে একটা বড় কোম্পানির চাকরিতে গিয়ে ঢোকে।পরে জানা যায় ও স্বেচ্ছায় দেশ ছেড়ে বিদেশে গেছে।মা জিজ্ঞেস করলে বলে কোলকাতায় চাকরি কোথায়?

কতবার মা —বিয়ের কথা বলেছেন—বিকাশ বিয়েতো দূরের কথা দেশে ফিরতে রাজি নয়।
ভায়ের বয়স প্রায় ছাব্বিশ—এম- বিএ করে চাকরিতে ঢুকেছে।
মা —তাই ওদের বাবাকে বললেন–ছোট ছেলে দাদার মত বিদেশে চলে না যায়—তাই পায়ে বেড়ির প্রয়োজন।
ছোট বলে দাদা বিয়ে না করলে সেও করবে না।

ভায়ের অভিমানের কাছে হার মেনে এবার দাদা দেশে ফিরছে।।

দাদা বিকাশ বিয়েতে রাজি—প্রকাশের অফিস কলিগ—দাদা ফেরার ঠিক দুদিন বাদেই দাদার মেয়ে দেখতে সপরিবারে যায় পাত্রীর বাড়ি।

পাত্রী সবার পছন্দ ও হয়।
পাত্রীর মা বৌমাকে চা..মিষ্টি দেবার জন্য ডাকেন।
একটা পুচকি মেয়ের কান্না শুনে প্রকাশ এগিয়ে যায়—কোলে করে আনে।
ও কেঁদে চলেছে। -ওর পিসির বিয়ে হয়ে গেলে—-ওর তো বাবা নেই—-কে আদর করবে?
বিকাশ ও প্রকাশ দুজনে পুচকির কান্না থামাবার চেষ্টা করে।হঠাৎ পুচকির মুখটা দেখতে আৎকে ওঠে।
মেয়েটার মুখটা বিকাশের খুব চেনা-!!
আচ্ছা ও কি বিদেশে থাকে??
পাত্রী শুনে বলে ও আমার ভাইঝি।ওর সাথে ডেভিড কপারফিল্ডের মিল আছে—ও ডেভিডের মত জন্মিয়ে বাবাকে দেখে নি।
আমার দাদা বিয়ের আট মাসের মাথায় গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়–তখন বৌদি দুমাসের অন্তঃসত্ত্বা।—
আমার বৌদি কোনদিন বাপের বাড়ি যায় নি…।
বৌদি আমার মা ,বাবাকে জীবন দিয়ে আগলাচ্ছে।
আসলে বৌদির কুষ্টিতে বৈধব‍্য যোগ ছিল—তাই বৌদি প্রেমিককে বিয়ে করতে চাই নি—সেই প্রেমিকের কথা সৎ মা কেও বলেনি—পনেরো দিনের মধ্যে আমার মা তার বিপ্লবী ছেলের মতি ফেরানোর জন‍্য বৌদির সৎমার সাথে জোট বেঁধে বিয়ে দেন।
পাত্রী লুনা ভায়ের কলিগ—তাই খুব পারিবারিক গল্প হয়।

এমন সময় ট্রলি করে সাদা থান পড়া মহিলা প্রচুর খাবার নিয়ে ঢোকে।
বিকাশ কাকে দেখছে!!!
—আট বছর আগে ওকে ভুলবার জন্য একা কাটিয়েছে—ও কিনা এত কষ্ট পেয়েছে।
শুধু কফি খেয়ে লুনাদের বাড়ি থেকে কাজের অজুহাতে বিকাশ একাই বাড়ি চলে আসে।
কি করবে বিকাশ!!
তার পৃথিবী যে নড়ে গেছে।
বাড়িতে সবাই বিকাশের বিয়ে নিয়ে আনন্দ করছে—-ভায়ের ফোনে লুনার ফোন—
হঠাৎ লুনা বলে বিকাশদা আপনি বৌদিকে চিনতেন।তাই কাজের অজুহাত দেখিয়ে চলে এলেন।
আপনি বৌদিকে বিয়ে করবেন???
বিকাশ বলে মা–নে টা কি?” সে এক বিরাট সারপ্রাইজ”।মনে মনে যাকে আট বছর খুঁজে বেড়িয়েছে।আজ হঠাৎ তার দেখা পাবে।বিকাশের কাছে তা অকল্পনীয়।প্রকাশ বলে
আমি সব জানি রে দাদা।।
লুনা বলেআপনার ছবি প্রকাশের কাছে দেখেছি।
বৌদি তো আমার বন্ধু,তাই আপনার ছবি বৌদির কাছে ও দেখেছি।

প্রকাশ বলে-―সবই বুঝলাম—কিন্তু
“তুমি কি আমার ভাইকে বিয়ে করবে”??
লুনা আমতা আমতা করে।
শোন্ বোন খাবারগুলো আছে রে?
আমি আর ভাই যাচ্ছি ,খাব রে।
শোন পুচকি কে বলিস —ওর বাবার বাড়িতে পিসি,দুটো করে ঠাম্মা ,দাদু সবাইকে একসাথে দেখতে পারবে,তাই কোনো কান্নাকাটি যেন না করে।
লুনা বলে ঠিক আছে দাদাভাই।

ঐ ওদের বিয়ের সানাই বাজছে।
সবার নিমন্ত্রণ থাকল,নব দম্পতিদের আশীর্বাদ করুন,ওরা যেন খুব সুখি হয়।
দাদা তার প্রেমকে খুঁজে পায়—বৌদিও তার ভালোবাসা ফিরে পায়—গুড়িয়া পায় বাবা—-ঐ বুড়ো আর বুড়ি,যারা বিধবা বৌয়ের ছত্রছায়ায় ছিলেন ,নুতন করে ছেলে পান—-লুনাও একজন ভাল ভাসুর পেয়েছে।বিকাশ ও প্রকাশের মা ও বাবা খুব খুশি।তাদের একাকীত্ব জীবন ভালো লাগছিল না।
যৌথ পরিবারে প্রচুর আনন্দ ও সুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress