Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সুজন মাঝি || Mrinmoy Samadder

সুজন মাঝি || Mrinmoy Samadder

সুজন গত দশ বছর ধরে নৌকা চালাচ্ছে। এই নৌকা নিয়ে চলে যায় অনেক দূরে। মাঝে মাঝে যাত্রী বহন করলেও ওর মূল কাজ হলো মাছ ধরা। সারাদিন মাছ ধরে সন্ধ্যেবেলা মাছের আড়তে গিয়ে দিয়ে আসে। প্রতিদিনই বেশ ভালো আয় হয় ওর। এভাবে বেশ ভালোভাবেই ওর সংসার চলে যাচ্ছিল। নদীর পাড়ে একটা ছোট বাড়ি করেছে। ঘরে ওর স্ত্রী আর সন্তান আছে। যারা সারাটা দিন সুজনের ফেরার অপেক্ষায় বসে থাকে। সুজন ফিরে এলে ওদের স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এবং সবাই আনন্দে খাওয়া-দাওয়া করে। আর নিশ্চিন্তের ঘুম দেয়।
দুদিন থেকে আকাশটা কালো হয়ে ছিল। ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছিল। এই দুদিনে সুজনের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে এবং বেশ ভালো আয় হয়। সেদিনও আকাশটা খুবই থমথমে হয়ে ছিল। নদীতে গিয়ে দেখল জল যেন অনেকটা বেড়ে গেছে। ও নদীতে নৌকা ভাসিয়ে দিল। আজ সকালবেলাটা দেখে সুজনের একটু চিন্তাই হচ্ছিল। জাল ফেলেছে অনেকক্ষণ নদীতে কিন্তু মাছ আর ধরা পড়ছে না। এদিকে জলের স্রোত বেড়ে যাচ্ছে বেলা বাড়ার সাথে সাথে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চলল। কিন্তু আশানুরূপ মাছ আর পেল না। এদিকে প্রকৃতিও বিরূপ হয়ে গেছে। খুব জোরে জোরে হাওয়া বইছে। নৌকা সামলানোই ওর পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
নাহ, আজ আর মাছ পাওয়া যাবে না। ফিরেই যাই। শুধু শুধু আর অপেক্ষা করে কি হবে?
সুজন নৌকাটাকে বাড়ির ঘাটের দিকে ঘুরিয়ে নিল। নৌকাটা ঘোরাচ্ছে এমন সময় ওর জলের দিকে চোখ পড়ল মনে হল কিছু একটা ভেসে যাচ্ছে। ভালো করে লক্ষ্য করে দেখল একটি দেহ ভেসে যাচ্ছে। ও কোন রকমে নদীতে ভেসে যাওয়া দেহটাকে নিজের নৌকায় তুলে নিল।
নৌকায় তুলে দেখল লোকটির তখনও শ্বাস চলছে। তবে খুব ধীরে ধীরে। লোকটিকে নৌকার পাটাতনে শুইয়ে দিয়ে বুকে পেটে চাপ দিয়ে ভেতরের সব জল বের করে দিল। লোকটির পেটের ভেতরের জল বেরিয়ে যেতে ধীরে ধীরে নিঃশ্বাসের জোর বাড়তে লাগলো। লোকটিকে নৌকাতে নিয়ে ফিরে এলো নিজের বাড়ির ঘাটে। নৌকাটিকে ভালো করে বাঁধাছাদা করে লোকটিকে কাঁধে তুলে নিল আর সামান্য যা মাছ পেয়েছিল সেটা নিয়ে ওর বাড়িতে এলো।
বাড়িতে এসেই স্ত্রীকে গরম জল,দুধ করতে বলল। গরমজল,দুধ লোকটিকে খাইয়ে দিল। লোকটি অনেকটা সুস্থবোধ করল এবং ধীরে ধীরে উঠে বসলো। সুজন বলল এই দুর্যোগের রাত্রে আপনি আর কোথায় যাবেন আমাদের সাথেই থেকে যান। পরদিন ওনাকে নিয়ে ওনার বাড়ি পৌঁছে দিল সুজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *