কুয়াশা, অন্ধকার এবং…
বৃষ্টি। তবে কুয়াশা আর অন্ধকার যতটা ঘন বৃষ্টি ততটা নয়। ঝিরঝিরে মতন। গাড়ির উইন্ডশিল্ডে বৃষ্টির বাচ্চা-বাচ্চা ফোঁটাগুলো যেন খেলার ছলে দস্যিপনা করে ছিটকে পড়ছিল।
শীতের রাতে কুয়াশা আর অন্ধকার থাকাটা স্বাভাবিক। শুধু বৃষ্টিটাই হিসেবের বাইরে।
সামনের কাচের ওপরে ওয়াইপার চলছিল। একইসঙ্গে হেডলাইটের আলো ছিটকে যাচ্ছিল অন্ধকার আর কুয়াশার দিকে।
আমার একহাতে স্টিয়ারিং, অন্য হাতে সিগারেট। জানি, সিগারেট খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। কিন্তু স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনাচিন্তা বেশ কিছুদিন হল ছেড়ে দিয়েছি।
সামনের রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
অন্ধকার রাত। গাঢ় কুয়াশা। জমাট শীত। হালকা বৃষ্টি। কালো ফিতের মতো রাস্তা। হেডলাইটের হলদে আলো।
সবমিলিয়ে বেশ লাগছিল। মনে হচ্ছিল, এই রাস্তা ধরে আজীবন গাড়ি চালাই। এমনকী জীবনের পরেও।
ভাবের ঘোরে বোধহয় একটু আনমনা হয়ে পড়েছিলাম। সেইজন্যেই মেয়েটাকে প্রথমে দেখতে পাইনি। পাশের গাছপালার ফাঁক থেকে কোন মুহূর্তে যেন আচমকা ছিটকে চলে এসেছে গাড়ির সামনে।
আত্মরক্ষার ভঙ্গিতে দু-হাত সামনে বাড়ানো। বড়-বড় আয়ত চোখে নিছক ভয়।
কী করে যেন শেষ মুহূর্তে ব্রেক কষতে পারলাম।
বিশ্রী শব্দ হল। ভেজা রাস্তায় গাড়ির চাকা পিছলে গেল। কপাল ভালো যে, আমার পেছনে কোনও গাড়ি ছিল না। থাকলে সে নির্ঘাত আমার গাড়িতে ধাক্কা মেরে বসত।
মেয়েটি টাল সামলাতে গিয়ে গাড়ির বনেটের ওপরে ঝুঁকে পড়েছিল। হেডলাইটের আলো ওর কোমরের কাছটা ভাসিয়ে দিচ্ছিল। থুতনির নীচে আর গালে আলো পড়ে চোখের কোটর দুটো অন্ধকার গর্তের মতো লাগছিল।
হঠাৎ করেই যেন একটা ঠান্ডা শিরশিরে ভাব আমাকে ছুঁয়ে গেল।
মেয়েটা আশ্চর্যভাবে নিজেকে সামলে নিল। প্রায় ছুটে চলে এল গাড়ির জানলার কাছে। কাচের ওপর শব্দ করে টোকা দিল কয়েকবার।
একমুহূর্ত কী ভেবে আমি ঝুঁকে পড়ে জানলার কাচ সামান্য নামালাম।
মেয়েটি হাত দিয়ে বৃষ্টি আড়াল করার চেষ্টা করতে করতে বলল, দরজাটা একটু খুলুন। না–প্লিজ…।
ওর মুখের একপাশে হেডলাইটের আলোর ঠিকরে আসা আভা। বাকিটা ছায়া-ছায়া, অন্ধকার। তারই মধ্যে কয়েকটা জলের ফোঁটা চিকচিক করছে।
কী ভেবে দরজাটা খুলে দিলাম। আমার দিকে জানলার কাচ নামিয়ে হাতের সিগারেটটা ফেলে দিলাম।
ও চট করে উঠে বসল আমার পাশে। দরজা বন্ধ করে ওড়না দিয়ে মুখটা মুছে নিল। তারপর জানলার কাচটা তুলে দিল।
লক্ষ করলাম, মেয়েটা হাঁপাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন অনেকটা পথ ছুটে এসেছে। ওড়নার আঁচল দিয়ে নাকের কাছে বাতাস করল। বোধহয় সিগারেটের গন্ধে অস্বস্তি হচ্ছে।
গাড়ি চলতে শুরু করল।
আড়চোখে মেয়েটাকে দেখলাম।
হলদে আর লাল চুড়িদার। সেইরকমই একটা ওড়না। জামার ওপরে কালচে রঙের একটা স্লিভলেস সোয়েটার। বয়েস আটাশ কি তিরিশ। বেশ সুন্দর দেখতে। প্রসাধন তেমন না থাকলেও শরীর থেকে একটা হালকা গন্ধ বেরোচ্ছে।
হঠাৎই মনে হল, আমি যেন সিনেমার ভেতরে ঢুকে পড়েছি। কারণ, সিনেমা-টিনেমায় এরকম হয়।
চুপচাপ কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পর জিগ্যেস করলাম, এই রাতে হঠাৎ এভাবে কোথা থেকে এলেন?
মাথা ঝাঁকিয়ে ঘুরে তাকাল আমার দিকে কেন? জিগ্যেস করছেন কেন?
ওর কথার সুরে একটা চাপা ভয় টের পেলাম। সেইসঙ্গে চোখের নজরে দু-চারফেঁটা সন্দেহ।
আমি হাসলাম ও ভয় নেই–আমি পুলিশের লোক নই। যেভাবে এই রাতে কুয়াশা আর বৃষ্টির মধ্যে আপনি হঠাৎ করে আমার গাড়ির সামনে এসে পড়লেন–তাতে প্রশ্নটা করে খুব একটা অন্যায় করেছি বলে তো মনে হয় না।
কয়েক মুহূর্ত ঠোঁট টিপে বসে রইল। তাকিয়ে আছে রাস্তার দিকে। এখনও বড়-বড় শ্বাস পড়ছে। বুক ওঠা-নামা করছে।
আমি আবার কথা বললাম, খুব পার্সোনাল কিছু হলে বলার দরকার নেই। রাস্তার বাঁকে ঝোঁপের গোড়ায় একটা কুকুর চোখে পড়ল। হেডলাইটের আলোয় জন্তুটার সবুজ চোখ ঝিকিয়ে উঠল। আমি মুখ ফেরালাম মেয়েটার দিকে : যাকগে, আমার নাম রনিত। আপনি কোন দিকে যাবেন?
আপনি যেদিকে যাচ্ছেন। আমি আসলে এখান থেকে পালাতে চাই–যতদূরে পারা যায়। আমার নাম সোনাল।
বাঃ, বেশ অদ্ভুত নাম তো! তারিফ করে বললাম, তা কার কাছ থেকে পালাতে চান? হাজব্যান্ডের কাছ থেকে?
আবার চমকে উঠে আমার দিকে ফিরে তাকাল : কী করে বুঝলেন?
কেতার হাসি হাসলাম, বললাম, আমি অনেক কিছুই বুঝতে পারি। বছর দুয়েক হল এই গুণটা গজিয়ে উঠেছে। তবে কীভাবে হল সেটা এগজ্যাকুলি বলতে পারব না।
আমার হাজব্যান্ডটা একটা জানোয়ার– কথাটা বলার সময় ঠোঁটটা অদ্ভুতভাবে বেঁকাল সোনাল। ওর চোয়াল শক্ত হল ও পারে না এমন কোনও কাজ নেই। মানে, পারত না এমন কোনও কাজ নেই। আপনি অচেনা মানুষ–তাও বলছি। দিন-রাত নেশা করত, হাত তুলত, যাচ্ছেতাই গালিগালাজ করত…।
সোনালের দিকে তাকালাম।
এরকম ফুটফুটে কোমলতা মাখা মেয়ের গায়ে কী করে কেউ হাত তোলে।
..দিন আর রাতগুলো এত বিশ্রীভাবে কাটত যে, মনে হত আমি আর বেঁচে নেই। প্রেতাত্মার মতো বাড়ির মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছি…।
আর এখন? কথার পিঠে কথা বলার ছলে প্রশ্নটা করলাম।
এখন তো মুক্ত। মানে টোটাল ফ্রিডম। এখন আমি যা খুশি তাই করতে পারি–।
তাই? জানতে চাইলেন না তো আমি কোথায় যাচ্ছি।
জেনে কী হবে? নতুন জীবন শুরু করার সময় এসব ফালতু প্রশ্নের কোনও দাম নেই…।
আমি অবাক হয়ে সোনালকে দেখলাম। একটু আগে ও ভয়, সন্দেহ, উৎকণ্ঠায় ভাসছিল। আর এখন বেপরোয়া, নির্লিপ্ত, নিশ্চিন্ত। ও সত্যি, না মায়া? নাকি আমাকে ঘিরে ওর অন্য মতলব আছে? থাকলে থাক। কারণ, এখন আমার ভয়-ডর বলে আর কিছু নেই।
কিন্তু যেভাবে ও আমার গাড়ির সামনে এসে পড়েছে তাতে মনে হয় না ব্যাপারটা সাজানো। তা ছাড়া এ-রাস্তা ধরে আমি প্রায়ই রাতের দিকে গাড়ি চালিয়ে যাই। আগে কখনও তো ওকে দেখিনি!
আপনার হাজব্যান্ড এখন কোথায়?
নেই।
নেই মানে?
শেষ। দ্য এন্ড।
মেয়েটা কি ওর স্বামীকে খুন করেছে নাকি?
আমার কোঁচকানো ভুরু দেখে কী যেন ভাবল সোনাল। হেসে বলল, আমি নিজেই জানতাম আমার মধ্যে এত শক্তি আছে। কী করে যে পারলাম কে জানে! বোধহয় আমি নয়–আমার ভেতরের আত্মা কিংবা প্রেতাত্মা আমাকে দিয়ে কাজটা করিয়ে নিয়েছে।
কী কাজ?
বুঝে নিন। এর বেশি বলব না।
আমার হঠাৎ কেমন সন্দেহ হল। আড়চোখে সোনালকে বেশ ভালো করে খুঁটিয়ে দেখলাম। ওর কথার মধ্যে কতকগুলো শব্দ আমার কানে বাজছিল।
একা মেয়ে। এই শীতের রাতে কুয়াশার মধ্যে হঠাৎ করে কোথা থেকে এল ও? আর ঠারেঠোরে যা বলতে চাইছে তাতে একটা মারাত্মক কাণ্ড করে এসে এইরকম নির্লিপ্ত আর উদাসী থাকছে কেমন করে?
আমার ভীষণ অবাক লাগল। মনের ভেতরের কাঁটাটা খচখচ করতে লাগল।
আপনি থাকেন কোথায়? ওকে জিগ্যেস করলাম।
প্রশ্নটা অনেকটা পুলিশের মতো শোনাচ্ছে।
আগেই তো বলেছি আমি পুলিশ নই।
আমার দিকে পূর্ণ চোখে তাকাল। তাকিয়ে কী খুঁজল জানি না। তারপর: যেখানে আপনার গাড়িতে প্রায় চাপা পড়ছিলাম, সেখান থেকে বড়জোর দু-আড়াই কিলোমিটার। সেখানে আমাদের সাজানো দোতলা বাড়ি। পুরোটা ছবির মতন। শুধু ওই লোকটাই ছিল কলঙ্ক। একটু চুপ করে রইল। ওড়নার কাপড়ে হিজিবিজি কাটল। তারপরঃ ওই বাড়িতে আমি আর থাকতে পারব না…।
আমি হঠাৎই রেডিয়োটা অন করে দিলাম।
শুরু হয়ে গেল গান আর কথার কচকচি। তৃতীয় কারও গলা আমাকে যেন ভরসা দিল।
এবারে আপনার গল্পটা শুনতে পারি? সোনাল জিগ্যেস করল।
আমি চুপ করে রইলাম। চোখ রাস্তার দিকে।
বৃষ্টি এখন আর নেই–তবে রাস্তায় ভিজে দাগ রয়েছে। ভিজে দাগ থাক বা না থাক, এখন রাস্তাই আমার জীবন।
কী, বলবেন না? আমারটা তো হাঁ করে শুনলেন—
আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। পুরোনো স্মৃতি ঝিলিক মেরে গেল মাথার ভেতরে।
সেই চেনা গল্প। ওর দিকে না থাকিয়েই বললাম, বড়লোক বউ। স্বামী গরিব, তবে সৎ পরিশ্রমী মানুষ। দিন-রাত শুধু অভিযোগ আর অভিযোগ। আমি নাকি অপদার্থ। শিক্ষিত হলেও গণ্ডমূর্খ। ফুটোপয়সার মুরোদ নেই।
একদিন রাতে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিল আমাকে। ওর বাবার দেওয়া বাড়ি–তাই আমাকে গেট আউট বলার অধিকারও ছিল। আমারও যে কী হল! দুঃখে অভিমানে বোকার মতো বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম। এই গাড়িটা নিয়ে–ওর বাবার দেওয়া গাড়ি। আক্ষেপে স্টিয়ারিং-এ চাপড় মারলাম : আমার লাইফটা একেবারে ইউজলেস ছিল…আর একইসঙ্গে হোপলেস…।
হঠাৎই হেসে উঠল সোনাল।
হাসছেন কেন?
না, একটা কথা মনে হল–তাই।
কী কথা?
মানে…দুজন হোপলেস একজায়গায় হলে একটু-আধটু হোপ তৈরি হতে পারে কি না…।
বেশ বলেছেন। এরকম কথা শুনলে ভালো লাগে নতুন করে আবার বেঁচে উঠতে ইচ্ছে করে। জীবনের জন্যে মায়া জাগে।
সোনাল মাথা নীচু করল। আস্তে আস্তে বলল, আপনি হয়তো ভাবছেন, আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। একটা সিরিয়াস ক্রাইম করে এসে এত কুলি কী করে কথা বলছি। একটু চুপ করে থেকে বলল, আসলে আমার হাজব্যান্ড আমার চোখে বহুদিন আগেই নেই হয়ে গিয়েছিল। ওর থাকা না থাকায় আমার লাইফের কোনও ডিফারেন্স নেই। তা ছাড়া আমার এখনকার লাইফটাও তো ঠান্ডা বরফ আর পাথরের মতো। মানে, মৃত্যু যেমন হয়…।
দূরে একটা রোড সাইন চোখে পড়ল : কার্ভ অ্যাহেড। তারপরই রাস্তাটা ডানদিকে বেঁকে গেছে।
এসে গেছি। আর কয়েকসেকেন্ড।
সোনালকে বললাম, গাড়ি সাইড করছি। আপনি এখানটায় নেমে পড়ুন।
কেন? কপালে ভাঁজ ফেলে আমার দিকে তাকাল ও।
গাড়ির গতি কমালাম ও এরপর আমার সঙ্গে গেলে আপনার বিপদ হবে–গাড়ি আর থামানো যাবে না–তাই।
কীসের বিপদ?
প্লিজ, আমার কথা শুনুন…নেমে পড়ুন।
না। জেদি গলায় বলল মেয়েটা, আগে বলুনকীসের বিপদ।
আমি এপাশ-ওপাশ মাথা নেড়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম : সোনাল, বছরদুয়েক আগে…সেই যে আমি রাগ করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম…সেই রাতটা ছিল অমাবস্যার রাত। আজও তাই…।
খেয়াল করলাম, স্টিয়ারিং-এর ওপরে আমার বাঁ-হাতের পাতাটা অদৃশ্য হয়ে গেছে। ডান হাঁটু আর উরু দেখা যাচ্ছে না।
সোনাল আমার মুখের দিকে তাকিয়ে। এফ. এম. রেডিয়োতে ঝিম্ফাক মিউজিকের সঙ্গে গান বাজছে।
…সেই শীতের রাতে এই রাস্তায় আমার একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়। ওই যে রোড সাইনটা দেখা যাচ্ছে–ওটা পেরিয়ে ডানদিকে টার্ন নিয়ে…তারপর…।
আমার বাঁ-দিকের অনেকটা অংশ আচমকা অদৃশ্য হয়ে যেতেই ব্যাপারটা সোনালের চোখে পড়ল। না পড়ে উপায়ও ছিল না।
ও চোখ বড় বড় করে ফেলল। ভয়ংকর এক চিৎকার করে উঠল।
কিন্তু এখন তো আর কিছু করার নেই। গাড়ি আর থামানো যাবে না।
একটা লোডেড ট্রাকের সঙ্গে আমার গাড়ির মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। সঙ্গে-সঙ্গে সব শেষ। তারপর থেকে…।
সোনাল এখনও চিৎকার করে চলেছে। এফ. এম. রেডিয়ো বাজছে। রোড সাইনটা কাছে এসে গেছে।
তারপর থেকে প্রত্যেক অমাবস্যার রাতে আমি এ-রাস্তা ধরে গাড়ি চালিয়ে যাই। ঝড়, বৃষ্টি, কুয়াশা, শীত পরোয়া না করে ছুটে যাই ওই অ্যাক্সিডেন্টের জায়গায়। মারা যাওয়ার পর থেকে এটাই আমার জীবন, সোনাল…।
কী মনে হওয়ায় গাড়ির রিয়ার ভিউ মিরারটা আমার দিকে ঘোরালাম।
যা ভেবেছি তাই। আমার মুখের বাঁ-দিক, গলা–সব মিলিয়ে গেছে। শুধু ডানদিকের গাল, দুটো চোখ, কপাল আর চুল সাপের ফণার মতো শূন্যে ভেসে আছে।
সোনাল ছুটন্ত গাড়ির দরজা খোলার চেষ্টা করছে, আর পাগলের মতো চিৎকার করছে।
ডানদিকে বাঁক নিয়ে এগোতেই ছুটে আসা ট্রাকের ঘোলাটে হেডলাইট চোখে পড়ল আমার।
সোনাল তখন হিস্টিরিয়ার রুগির মতো বাঁচাও! বাঁচাও! বলে চিৎকার করছে। গাড়ির উইন্ডশিল্ডের কাঁচে হিংস্রভাবে ঘুসি মারছে।
আশ্চর্য! এই মেয়েটাই না একটু আগে বলছিল, আমি আর বেঁচে নেই। প্রেতাত্মার মতো বাড়ির মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছি…।
এখন ওর সামনে সত্যি-সত্যি সেই সুযোগ এসে গেছে। এখন থেকে ও আর আমি একসঙ্গে ঘুরে বেড়াব।
আমার শরীরের বাকি অংশগুলো একে একে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিল।
ট্রাকটা ক্ষিপ্ত গন্ডারের মতো ছুটে আসছে।
আমি অদৃশ্য আঙুলের চাপে গাড়ির হর্নটা বাজাতে শুরু করলাম।
শেষ মুহূর্তটার জন্যে আর মাত্র কয়েকটা মুহূর্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।