Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ভ্রমণ কাহিনী || Purnendu Pattrea

ভ্রমণ কাহিনী || Purnendu Pattrea

‘Withches in Macbeth are part of the landscape’- Jan Kott
এপারের জঙ্গলগন্ধ অন্ধকারে আমাদের নামিয়ে
অল্প দূরের ব্রিজে বিসর্জনের তুমুল তাসায় এক ঝলক নেচে
রেলগাড়িটার লম্বা দৌড় ওপারের দিকচিহ্নহীনতায়
তারপর সমস্ত শব্দের ঢলে-পড়া ঘুম।
আমরা কেউ ওভারব্রিজের খোঁজে ঘাড় ঘোরাই
কেউ আকাশে যেমন-তেমন একট চাঁদ অথবা চেনা নক্ষত্রের খোঁজে।
আকাশের যে জায়গাটায় চাঁদ থাকার কথা।
নিদেনপক্ষে ছুটকো-ছাটকা ইনভার্টারে জ্বালানো লন্ঠন
ইসকেমিয়ার ঘোলাটে চাউনীতে সব লেপাপোঁছা।

পাহাড়টা কোন্ দিকে? উত্তরে না দক্ষিণে/
কেউ একজন প্রশ্ন করে।
পাহাড়ের আগে শাল-মিছিলে ঘেরা হ্রদ। দক্ষিণে, না উত্তরে?
অন্য কারো জানার ইচ্ছে।
ওভারব্রিজটা সামনে, না পিছনে?
কেউ একজন শুনিয়ে দেয় জবাব:
সব স্টেশনের ওভারব্রিজ থাকে না কিন্তু
অনেক স্টেশন কার্ড-বোর্ডে কাটা মানুষের মতো সমতল।
কে কার সঙ্গে কথা বলছি
বুঝতে পারি শুধু কন্ঠনালীর সৌজন্যে।
দুর্গদেয়ালের মতো অন্ধাকারে আমরা পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন।

আমাদের বলে দিয়েছিল স্টেশন থেকে নামলেই
লাল মাটির সোজা রাস্তা।
হয়তো আছে, কিন্তু অন্ধকারের দরজায় তো ফুটো নেই কোনোখানে।
আমাদের বলে দিয়েছিল স্টেশনে নামলেই
এক দৌড়ে পৌঁছে দেওয়ার এক্কা।
হয়তো ছিল, কিন্তু এখন তো মূছিত চেতনার মাঝরাত।

হঠাৎ কার যেন মনে পড়ে যায় টর্চের কথা।
টর্চ, টর্চ। টর্চ জ্বালাচ্ছিস না কেন?
নেমে আসি বালি কাঁকরের ঢালু প্রান্তরে,
পথপ্রদর্শক, টর্চের আলোর প্রেতচক্ষু।

ডাইনে আলো পড়ে টর্চের। ওটা কি?
ঝাঁঝরা কঙ্কাল, কোনো এক সময়ের সাতমহল অমরাবতীর।
টর্চের আলো ঘোরে বাঁয়ে। ওটা কি?
সমুদ্র-জাহাজের ভাঙচুর কাঠকাটরা আর নষ্ট নোঙর।

পথ আর পৌছনার মাঝখানে
কী দুঃস্বপ্ন শাসিত ব্যবধান!
মন্ত্র আর আরতির মাঝখানে
গণনাহীন বলির রক্তরেখা।

জন্ম থেকেই তো আমরা এই রকম, ঠিকানাহীন,
কেউ একজন বাতাসে ভাসিয়ে দেয় তার দীর্ঘশ্বাস।
সমস্ত রেলগাড়িই আমাদের বেলায় ছত্রিশ ঘন্টা লেট,
কেউ একজন বুক থেকে নিংড়ে আনে তার কুয়াশা।

হঠাৎ ঝড় উঠলে হয়তো সাড়া পাওয়া যেত লোকালয়ের,
কে যেন ঘাই মেরে উঠল তার বিষন্নতার বুদবুদ সরিয়ে।
রমনীসুলভ হ্রদের কোমর জড়িয়ে শালবনের মাতাল যৌবন
তাকে পেরোলেই সম্রাট মহিমার পাহাড়
আমাদের পৌছনোর কথা সেইখানে।
সেইখানেই বিশ্বস্ত লাল রোদের কেন্দ্রে
আমাদের সবুজ বাংলো রক্তকরবীর বেড়া দিয়ে ঘেরা।
ছেলেবেলার পানের ডাবর থেকে লাফিয়ে-ওঠা কেয়াখয়েরের উল্লাস নিয়ে
বাতাস বুনছে বীজানুহীন অভ্যর্থনা।
টর্চের আলো ঘোরে উত্তরে। ওটা কি?
ঝড়ে উলটোনো মহান বটের মাথামুন্ডুহীণ আধখানা।
টর্চের আলো ঘোরে দক্ষিণে। ওটা কি?
ভূল স্রোতের ফাঁদে-পড়া নদীর অকাল-ধ্বস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress