কতদূর এগোলো মানুষ!
কিন্তু আমি ঘোরলাগা বর্ষণের মাঝে
আজও উবু হয়ে আছি। ক্ষীরের মতোন গাঢ় মাটির নরমে
কোমল ধানের চারা রুয়ে দিতে গিয়ে
ভাবলাম, এ-মৃত্তিমা প্রিয়তমা কিষাণী আমার।
বিলের জমির মতো জলসিক্ত সুখদ লজ্জায়
যে নারী উদাম করে তার সর্ব উর্বর আধার।
বর্ষণে ভিজছে মাঠ। যেন কার ভেজা হাতখানি
রয়েছে আমার পিঠে। আর আমি
ইন্দ্রিয়ের সর্বানুভূতির চিহ্ন ক্ষয় করে ফেলে
দয়াপরবশ হয়ে রেখেছি আমায় কালো দৃষ্টিকে সজাগ।
চতুর্দিকে খনার মন্ত্রের মতো টিপ টিপ শব্দে সারাদিন
জলধারা ঝরে। জমির কিনার ঘেঁষে পলাতক মাছের পেছনে
জলডোরা সাপের চলন নিঃশব্দে দেখছি চেয়ে।
বাহুতে আমার
আতঙ্কে লাফিয়ে উঠছে সবুজ ফড়িং।
বুঝিবা স্বপ্নের ঘোরে আইল বাঁধা জমিনের ছক
বৃষ্টির কুয়াশা লেগে অবিশ্বাস্য যাদুমন্ত্রবলে
অকস্মাৎ পাল্টে গেলো। ত্রিকোণ আকারে যেন
ফাঁক হয়ে রয়েছে মৃন্ময়ী।
আর সে জ্যামিতি থেকে
ক্রমাগত উঠে এসে মাছ পাখি পশু আর মানুষের ঝাঁক
আমার চেতনা জুড়ে খুঁটে খায় পরস্পর বিরোধী আহার।