Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » আবার যাবে কি চলে || Shamsur Rahman

আবার যাবে কি চলে || Shamsur Rahman

আবার যাবে কি চলে অভিমানে দীর্ঘ পরবাসে
আমাকে খরায় ফেলে? পথক্লেশ, না কি মতিভ্রম,
কী আমার দোষ
বুঝতে পারিনি ঠিক, তবু শেষমেষ
রেখেছি তোমারই প্রতি অঞ্জলি আমার। শূন্য রইলে করতল,
আমার সকল দিক হবে চির হাহাকারময়,
কংকালে-কংকালে যাবে ছেয়ে শূন্য ভূমি।

তুমিহীনতায় অবেলায়
আমার একান্ত অন্তর্গত অনল ফুরিয়ে গেলে
নিঃসঙ্গ থাকবো পড়ে সীমাহীন শীতে
ভীষণ আহত।
কখনো বেগানা কোনো কুকুর শুঁকবে এসে ছেঁড়া
জামার রক্তের দাগ, শরীরের বর্ধমান ক্ষত।
অথচ এ-ও তো জানি, বসন্তমায়ায়
শহরের নিঝুম কবরখানাতেও
বেলা শেষে কোকিল ব্যাকুল ডেকে যায়।

দূরে আছি, তোমার নিকট থেকে বহুদূরে আছি-
যেমন আকাশ থেকে দুর্বল ডানার কোনো পাখি,
শস্যময় ক্ষেত থেকে উপদ্রুত চাষী,
অন্ধের নিকট থেকে জ্যোতি
কবির নিকট থেকে অভীষ্ট প্রতিমা শব্দেশ্বরী।

দূরত্বের অস্তহীন মরুর সিমুম ঝড়ে দিশাহারা আমি
রোজই ভাবি, দেখা হবে আমাদের কখনও আবার
বনানীর স্নিগ্ধতায়, দীর্ঘ গাঢ় লাল বারান্দায়।
যে-পথ সন্ধ্যার স্পর্শ পেয়ে কেমন মায়াবী হয়,
তার দিকে চোখ পড়ে হঠাৎ যখন,
যখন কোথাও দেখি অপরাহ্নে নতুন ব্লেডের মতো ঝিল,
মনে হয় দেখা হবে আমাদের, দেখা হবে তোমার রূপের স্তব্ধতায়।

আবার যাবে কি চলে? এখনই যেও না,
ফিরিয়ে নিও না মুখ; তুমি
না তাকালে আমি হৃতদীপ্তি, হীনবল
ঈগলের মতো পঙ্গু ডানা নিয়ে হাওয়ার ধিক্কারে
ক্ষয়ে-ক্ষয়ে
নিষ্ফল ক্ষোভের ভারে শ্বাসকষ্টে ভূগি সর্বক্ষণ-
পাহাড়ের চূড়া থেকে নিচে, বহু নিচে
হয়তো কচুরিপানাময় এঁদো ডোবায় অথবা খানাখন্দে
খুব অসহায় মুখ থুবড়ে পড়বো ভেবে ভয়ে নীল হই।

তুমি না বাড়ালে হাত পণ্ড হবে যজ্ঞ সুন্দরের,
ঋত্বিক যাবেন ভুলে মন্ত্র, হোমাগ্নি না জ্বেলে দ্রুত
পুড়িয়ে দেবেন সুশ্রী মণ্ডপ বেবাক;
সুসৌম্য আলেম কোরানের পাতা না উল্টিয়ে ভ্রমে
ঐন্দ্রজালিকের কালো নিষিদ্ধ কেতাবে
দৃষ্টি বুলোবেন।

এখন থেকো না দূরে, এসো চলে এসো-
হে মেয়ে তোমার আশা করার মধ্যাহ্নে স্নিগ্ধ ছায়া,
ফসলের আভা,
দীর্ঘ পরবাসে যোগাযোগহীন পত্রপ্রার্থীদের
সম্মেলনে অলৌকিক ডাক পিয়নের চিঠি বিলি,
অন্ধের ইশ্‌কুলে ব্রেইলির
ব্যাপক দেয়ালি, মৃত শহরের ধু-ধু স্তব্ধতায়
প্রবল আশ্বাসময় দৈব উচ্চারণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *