Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হিমুর বাবার কথামালা || Humayun Ahmed » Page 3

হিমুর বাবার কথামালা || Humayun Ahmed

পোশাকের গুরুত্ব

আমি আমার জীবনে পোশাককে কখনই গুরুত্বপূর্ণ মনে করি নি। ইস্ত্রিবিহীন কুঁচকানো শার্ট তার সঙ্গে স্পঞ্জের স্যান্ডেল পরে বড় কোনো অনুষ্ঠানে যেতে কখনই সমস্যা বোধ করি নি। তবে একবার মহাবিপদে পড়েছিলাম। সেই বিপদ নিয়ে ঢাকা ক্লাবের ম্যাগাজিনের রমনা সুবর্ণ জয়ন্তী সংখ্যায় একটা লেখা লিখেছিলাম। লেখাটি আমি আমার অনুমতিক্রমে আবার ছাপছি। কারণ মহাপুরুষ গড়ার কারিগরের পোশাক নির্বাচনের আগে লেখাটা পড়া থাকলে ভাল হবে।

বাঙালের ঢাকা ক্লাব দর্শন

আমার দীর্ঘদিনের পুরনো বন্ধুদের একজনের নাম জুয়েল আইচ। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আমার ব্যবহার একটু অদ্ভুত। আমি কখনই তাদের টেলিফোন করি না। বাসায় আসতে বলি না। রোগে শোকে খবর নেই না। ব্যাপারটা ভাইস ভার্সা। তারাও নেন না।

একদিন হঠাৎ জুয়েল আইচের টেলিফোন। তিনি বললেন, আপনাকে একটা জায়গায় নিমন্ত্রণ করতে চাচ্ছি। আপনি কি আসবেন?

আমি বললাম, অবশ্যই। জায়গাটা কোথায়?

ঢাকা ক্লাবে।

ভাই আমি তো ঢাকা ক্লাবের মেম্বার না। আমাকে ঢুকতে দেবে।

জুয়েল আইচ বললেন, ক্লাবে আলাদা আলাদা ঘর আছে। এসব ঘর ভাড়া নেয়া যায়। সেখানে অতিথিরা যেতে পারেন।

আমি বললাম, দিনক্ষণ বলুন। যথাসময়ে উপস্থিত থাকব। কোনো উপলক্ষ কি আছে?

উপলক্ষ আছে।

জুয়েল আইচ উপলক্ষ ব্যাখ্যা করলেন। তার এক বন্ধু এসেছেন কোলকাতা থেকে, নাম রঞ্জন সেনগুপ্ত। ভদ্রলোক একজন শিল্পপতি। তিনি লেখক হুমায়ূন আহমেদের কিছু রচনা পাঠ করেছেন। তার শখ লেখকের সঙ্গে কথা বলবেন।

আমি নির্দিষ্ট দিনে ঢাকা ক্লাবের রিসিপশন রুমে উপস্থিত হলাম। জুয়েল আইচ তার বন্ধুকে নিয়ে আগেই উপস্থিত। রিসিপশনের যিনি প্রধান, তিনি কেমন অদ্ভুত চোখে তাকাচ্ছেন। প্রথমে মনে হলো লেখককে চিনতে পারার আনন্দের জন্যেই তার চোখের দৃষ্টি অদ্ভুত লাগছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার ভুল ভাঙল। রিসিপশনিস্ট বিনয়ের সঙ্গেই বললেন, স্যার আপনাকে ক্লাবে ঢুকতে দেয়া যাবে না। সরি।

আমি বললাম, কেন?

আপনার ড্রেসকোড ঠিক নেই। আপনার পায়ে স্যান্ডেল। শার্ট যেটা পরেছেন সেখানেও সমস্যা।

জুয়েল আইচ নানা চেষ্টা চরিত্র করছেন। ক্লাবের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন, কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না।

আমি বুঝতে পারছি, আমাকে দেখাচ্ছে লেবেনডিসের মতো। গায়ে ইস্ত্রিবিহীন কুঁচকানো শার্ট। পায়ে স্যান্ডেল। স্যান্ডেলের আয়ুও শেষ পর্যায়ে। যে-কোনো সময় চামড়ার ফিতা খুলে সে রিটায়ারমেন্টে চলে যাবে।

আমার সামনে রিসিপশনের একজন একজোড়া জুতা এনে রাখল। সেই জুতা গামা পালোয়ানের পায়েরও তিন চার সাইজ বড়। আমাকে বলা হলো– এই জুতা পরে ঢুকে যান।

আমি বললাম, অন্যের জুতা পরে কেন ঢুকব? খালি পায়ে কি ঢুকতে পারি? আমার খালি পায়ে ঢুকতে আপত্তি নেই। আমার উপন্যাসের এক চরিত্র হিমু, খালি পায়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল।

রিসিপশনিস্ট বলল, জ্বি-না স্যার। খালি পায়ে ঢুকতে পারবেন না।

আমি বললাম, আচ্ছা মহাত্মা গান্ধী তো আধা নেংটা থাকেন। ছাগলের দড়ি হাতে ঘুরে বেড়ান। ছাগলটা ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে থাকে। মহাত্মা গান্ধী যদি ইচ্ছা প্রকাশ করেন ঢাকা ক্লাবের লাউঞ্জে বসে এক কাপ গরম দুধ খাবেন। তিনি কি পারবেন?

না। তাকে ঢুকতে দেয়া হবে না।।

রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে তো আপনাদের ক্লাবে অনেক অনুষ্ঠান হয়। রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী। রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গান। হয় না?

জি স্যার হয়।

রবীন্দ্রনাথ যদি ক্লাবে আসতে চান, তাঁকে কি ঢুকতে দেয়া হবে? তিনি জোকাটাইপ পোশাক পরেন। পায়ে থাকে চপ্পল।

না উনাকেও ঢুকতে দেয়া হবে না।

আলবার্ট আইনস্টাইনকে কি ঢুকতে দেয়া হবে? ঢাকা ক্লাবের ড্রেসকোডের ধার কিন্তু তিনি ধারেন না।

স্যার, উনাকেও ঢুকতে দেয়া হবে না।

এতক্ষণে আমি কিছু স্বস্তি ফিরে পেয়েছি। এই গ্রহের সেরা তিনজনই যদি ক্লাবে ঢুকতে না পারেন, আমি কোথাকার হরিদাস পাল? আমাকে যে এরা কানে ধরে উঠবোস করায় নি এতেই আমি খুশি।

.

এই ঘটনার মাস ছয়েক পর আমি ঢাকা ক্লাব থেকে একটা চিঠি পেলাম। চিঠিতে লেখা, আমাকে ঢাকা ক্লাবের অনারারি মেম্বারশিপ দেয়া হয়েছে। এই খবর শুনে আমার বন্ধুরা এমন ভাব করতে লাগল যেন চব্বিশ ক্যারেট সোনার একটা হরিণছানা আমার ঘরে ঢুকে গেছে। ঢাকা ক্লাবের মেম্বারশিপের যে এত গুরুত্ব তা তো জানতাম না। আমি ক্লাব টাইপ মানুষ না। গুরুত্ব ধরতে পারার কথাও আমার না। আমি আমার নিজের ক্লাব সঙ্গে নিয়ে ঘুরি। যেখানে যাই ক্লাব সাথে নিয়েই যাই।।

যাই হোক, একদিন ঠিক করলাম মেম্বারশিপের শুভ উদ্বোধন করব। আমি আমার আরেক বন্ধু আর্কিটেক্ট করিমকে খবর দিলাম। সে ঢাকা ক্লাবের পুরনো মেম্বার। ক্লাবের নিয়মকানুন ভালো জানে। করিমকে সঙ্গে নিয়ে চামড়ার জুতা কিনলাম, ফুলহাতা শার্ট কিনলাম। ইন করে শার্ট পরব, কাজেই একটা বেল্টও কেনা হলো। আয়নায় তাকিয়ে দেখি নিজেকে সং-এর মতো লাগছে। সবাইকে সব কিছুতে মানায় না।

ক্লাবে ঢুকলাম। নতুন জুতার কারণে মেঝে অতিরিক্ত পিচ্ছিল লাগছিল। মনে হচ্ছিল যে-কোনো সময় আমি পিছলে গুরুত্বপূর্ণ কারো ঘাড়ে পড়ে যাব। একটা কেলেঙ্কারি হবে।

ইংরেজ সাহেবদের বানানো ক্লাব দেখে মুগ্ধ হলাম। চমৎকার মার্গারিটা পরপর কয়েকটা খেয়ে ফেললাম। সাহেবদের প্রতি একধরনের কৃতজ্ঞতাও বোধ করলাম। ভাগ্যিস তারা ক্লাব প্রজাতির ছিলেন।

পাখি উড়ে চলে গেলে পাখির পালক পড়ে থাকে। সাহেরা চলে গেছেন ফেলে রেখে গেছেন তাদের ছায়া। আমরা ক্লাবের মেম্বাররা সেই ছায়া গায়ে মেখে ক্লাবে ঢুকি। আড্ডা দেই। নিজেদের কেমন যেন ব্রিটিশ ব্রিটিশ লাগে। আমার মতো ভেতো বাঙালের জন্যে এও তো কম প্রাপ্তি না। আসুন এখন হিমুর বাবার পোশাক নিয়ে পুরনো নিয়মে প্রসেস অফ এলিমিনেশনের ভেতর দিয়ে যাই।

তিনি কি ছেলের মত হলুদ পাঞ্জাবী প্রবেন?

না।

তিনি কি থ্রি পিস স্যুট টাই পরবেন?

না।

লুঙ্গী গামছা?

না।

হাফপ্যান্ট, টি-শার্ট?

না।

মাওলানাদের পাঞ্জাবী, পায়জামা?

না। তিনি কি নগ্ন থাকবেন?

না।

পাঠক দেখছেন– তার পোশাক নির্বাচন কতটা জটিল হয়ে গেছে? তাকে সাধারণ হাওয়াই শার্ট এবং প্যান্ট পরানো ছাড়া গতি দেখছি না। পোশাকে তিনি হবেন সাধারণ। আইনস্টাইন টাইপ। আইনস্টাইনের পোশাক নিয়ে একটা গল্প কোথায় যে পড়েছিলাম। গল্পটা বলি। সুইডেনের রানীর সঙ্গে তার বৈঠক। রানী হঠাৎ লক্ষ্য করলেন আইনস্টাইনের শার্টের বোতাম ঠিকমত লাগানো নেই। দ্বিতীয় বোতামটি লাগানো হয়েছে তৃতীয় বোতাম ঘরে। রানী এই ত্রুটি থেকে কিছুতেই নিজের চোখ সরাতে পারছেন না। এক পর্যায়ে আইনস্টাইনের বিষয়টা চোখে পড়ল। তিনি লজ্জিত ভঙ্গিতে বললেন, রানী দুমিনিট সময় দিন আমি বাথরুমে যাব এবং পোশাকের ত্রুটি দূর করে আসব।

আইনস্টাইন বাথরুমে গেলেন এবং পোশাকে আরো বড় ধরনের ত্রুটি নিয়ে ফিরে এলেন। এখন তৃতীয় বোতামটি লাগানো হয়েছে প্রথম বোতাম ঘরে। দ্বিতীয় বোতাম তৃতীয় বোতাম ঘরে পুরো বেড়াছেড়া।

আমার ধারণা গল্পটা বানানো। মহাপুরুষ পর্যায়ের মানুষদের নিয়ে আমরা গল্প বানানো পছন্দ করি। বিদ্যাসাগরের মাতৃভক্তির গল্পের কথাই ধরি। গল্পটা এক সময় পাঠ্যও ছিল। মায়ের অসুখের সংবাদ শুনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর চাকরি থেকে ছুটি চাইলেন মাকে দেখতে যাবেন। ছুটি দেয়া হলো না। তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে রওনা হলেন।

বাড়িতে যাবার জন্যে উত্তাল দামোদর নদী পার হতে হবে। ঘাটে কোনো নৌকা নেই। তিনি সাঁতরে নদী পার হলেন।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ছোট ভাইয়ের নাম শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ব। তাঁর লেখা থেকে জানা যায় এমন কোনো ঘটনা ঘটে নি।

আমাদের সমাজের মহাপুরুষ নেই বলেই আমাদের মধ্যে ক্লান্তিবিহীন চেষ্টা— মহাপুরুষ বানাতে হবে। যেসব গুণ একজনের আছে তাতে চলবে না, আরো গুণ ঢেলে দিতে হবে।

মহাপুরুষ অনুসন্ধানের এই ব্যাকুলতার পেছনে জেনেটিক কারণ আছে বলে আমার ধারণা। মানুষ এক সময় বনে জঙ্গলে বাস করত। মহাবিপদের জীবন চর্যা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীতে বিভক্ত সেইসব মানব সম্প্রদায়ের জন্যে প্রয়োজন ছিল বিচক্ষণ, জ্ঞানী, বুদ্ধিমান এবং সাহসী নেতা। যারা তাদেরকে বিপদ থেকে বাঁচার পরামর্শ দেবে এবং তারা টিকে থাকবে। জেনেটিক কারণে অতীতের সেই স্মৃতি অমিরা নিয়ে এসেছি। এখনো আমাদের নেতা দরকার, আওয়ামী লীগ, বিএনপি দরকার। নেতা ছাড়া আমরা অসহায়।

মহাপুরুষরা, নেতার চেয়েও বড়। নেতারা নিজের স্বার্থ খুব ভালমত দেখেন। মহাপুরুষরা তা দেখেন না। কিংবা হয়তো দেখেন আমরা যারা সাধারণ পাবলিক তারা তা বুঝতে পারি না।

খ্রিস্টান ধর্মে সেইন্ট ঘোষণা করার একটি প্রক্রিয়া আছে। Saint অর্থ মহাসাধক, মহাপুরুষ। আমাদের পরিচিত মাদার তেরেসাকে তার মৃত্যুর পর Saint ঘোষণা করা হয়েছে। পাঠক কি জানেন শেষ বয়সে মাদার তেরেসার গভীর ঈশ্বর বিশ্বাসে চিড় ধরেছিল? তিনি অসহায় বোধ করছিলেন। সেই সময় তিনি পোপ বেনেডিক্টকে বেশ কিছু চিঠি দিয়েছিলেন। চিঠির বিষয়বস্তু ঈশ্বরের অস্তিত্বে সন্দেহ। তিনি চিঠিগুলি নষ্ট করে দেয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন। সেপ্টেম্বর ৭ তারিখ ২০০৭-এ তার কিছু চিঠি প্রকাশিত হয়। একটিতে তিনি লিখেছেন–

Where is my faith? Even deep down there is nothing but emptiness. If there be a God–please forgive me.

অন্য আরেকটি চিঠিতে লিখলেন–

I feel just that terrible pain of loss, of God not wanting me, of god not being god, of God not really existing.

একজন স্বীকৃত মহাপুরুষে (না-কি মহামানবী?)-র যদি এই সমস্যা থাকে তাহলে সাধারণ আমজনতা যাবে কোথায়?

জটিল তথ্য আলোচনা থাকুক। আসুন আমরা আবার প্রসেস অফ এলিমিনেশন টেকনিকে বের করি মহাপুরুষ কেমন হবেন।

একজন মহাপুরুষ কি আপনার বাড়িতে বসে হিদল শুঁটকি দিয়ে ভাত খাবেন?

না।

তিনি কি ঈদের হাসির নাটক দেখার জন্যে আগ্রহ নিয়ে টিভির সামনে বসে থাকবেন?

না।

তিনি এক সেট সস্তা গ্লাস রঙিন কাগজে মুড়ে বিয়ের দাওয়াত খেতে যাবেন?

না।

তিনি কি যথাসময়ে একটি তরুণী বিয়ে করবেন এবং বাসর রাতের কর্মকাণ্ডে অংশ নেবেন?

না।

তাহলে কি এই দাঁড়াচ্ছে না যে মহাপুরুষ আমাদের মত কেউ না। সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু। সেই ভিন্নটা কি তাও পরিষ্কার না। যে বস্তুর অস্তিত্বই নেই সেই বস্তু সম্পর্কে ধারণা করাও তো অসম্ভব।

আমরা যখন ভূতের বা রাক্ষসের ছবি আঁকি সেই ভূতটা দেখতে হয় মানুষের কাছাকাছি কিংবা আমাদের দেখা পশুর কাছাকাছি।

তার শিং থাকতে পারে (আমরা অনেক শিংওয়ালা পশু দেখেছি)। গা ভর্তি কাটা থাকতে পারে (সজারু)। ভয়ঙ্কর দাঁত থাকতে পারে (বাঘ, সিংহ) কানা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু আঁকা মুরালিয়েলিস্টিক চিত্রকর সালভাদর দালির পক্ষেও সম্ভব হয় নি।

হিমুকে মহাপুরুষ বানানো এই কারণেই আমার জন্যে সহজ একটা কাজ হয়েছে। কারণ একটাই মহাপুরুষের কোনো ধারণা আমাদের নেই। হিমু নিতান্তই ঘরোয়া এক ছেলে। যে শুটকির সঙ্গে বেগুনের তরকারি দিয়ে আগ্রহের সঙ্গে পেট ভর্তি করে ভাত খাবে। ভাত খাবার পর তর্জনিতে চুন লাগিয়ে পান খাবে। পানের পিক ফেলবে।

সম্প্রতি হিমুকে নিয়ে ছোট্ট একটা ঝামেলায় পড়েছি। ঝামেলাটা তৈরি করেছেন আমার মা। তাঁর বয়স প্রায় আশি। কিডনি অকেজো। ওষুধপত্র দিয়ে কোনো রকমে সচল রাখা হয়েছে। হার্টের অবস্থাও দুর্বল। বাই পাস করানো হয়েছে। প্রায়ই ফুসফুসে পানি আসে। হাসপাতালে পাঠিয়ে ঠিক করে আনা হয়।

এক সকালে তাকে নিয়ে নাশতা খাচ্ছি। তিনি হঠাৎ বললেন, হিমুকে ভাল মেয়ে দেখে বিয়ে দিয়ে দে।

আমি নাশতা খাওয়া বন্ধ করে বললাম, হিমুকে বিয়ে দিয়ে দিতে বলছেন?

মা বললেন, হ্যাঁ। বেচারা কতদিন একা একা ঘুরবে? আমার নিজেরও বয়স হয়েছে। হিমুর বিয়ে খেয়ে যাই।

পাঠক কি সমস্যাটা বুঝতে পারছেন? হিমু রিয়েলিটির অংশ হয়ে যাচ্ছে। একদিন হয়তো আমি নিজেই হলুদ রঙের একটা কার্ড পাব। হিমুর বিয়ের কার্ড। বিডিআর এর দরবার হলে আয়োজন করে বিয়ে। কে জানে আমার মা হিমু পত্নীর জন্যে হলুদ সিল্কের শাড়ি নিয়ে বিয়ে খেতে চলে যেতেও পারেন।

Pages: 1 2 3 4

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *