( ১ )
কে বলেরে বাঙ্গালীর জীবন অসার
সৌরভে আমোদ দেখ্ আজ্ কিবা তার !
বঙ্গালীর হৃদয়ের যতনের ধন,
তার মাঝে দেখ ভাই দুইটী রতন
রজনী করিতে ভোর উজলি গগন
আশার আকাশে উঠি জ্বলিছে কেমন !—
ধন্য বঙ্গনারী ধন্য সাবাসি তুহারে |
ভাসিল আনন্দ ভেলা কালের জুয়ারে !
( ২ )
কি ফুল ফুটিল আজি বঙ্গের মরুতে
ফোটে কিরে হেন ফুল কোন সে তরুতে ?
কোন্ নদী কোন হ্রদ পাহাড় উপরে
ফুটন্ত কুসুম হেন আনন্দ বিতরে ?
রে যামিনি ! তারা হারা, কিবা আভরণ
আছে বল্ তোর বুকে দেখিতে এমন ?
এত দিনে বুঝিলাম সে নহে স্বপন,
ভারত-বিপিনে বীজ হয়েছে বপন ||–
ধন্য বঙ্গনারী ধন্য সাবাসি তুহারে !
ভাসিল আনন্দ ভেলা কালের জুয়ারে !
( ৩ )
এত দিনে জাগিল রে জীবনে বিশ্বাস,
ঘুচিল হৃদয় হ’তে কালের হতাশ ||
বাঙালীর কামিনীর হৃদয়-কমলে
পাশ্চাত্য সাহিত্য-রূপ দিনমণি জ্বলে ||
সমপাঠে সহযোগী কুরঙ্গ-নয়নী,
ছুটেছে যুবক সঙ্গে যুবতী রমণী ||
পরেছে উপাধি হার – সুনীল বসন
সেজেছে অঙ্গেতে কিবা চারু-দরশন |–
ধন্য বঙ্গনারী ধন্য সাবাসি তুহারে |
ভাসিল আনন্দ ভেলা কালের জুয়ারে !
( ৪ )
কবে দেখিব রে বল্ এ বিপিন মাঝে,
আর ( ও ) হেন কুরঙ্গিণী এ মোহন সাজে !
সে দিন হবে কি ফিরে এ দেশে আবার
নারী হবে পুরুষের জীবন আধার !
গৃহরূপ কমলের কমলা আকারে,
ছড়াইবে সুখ রাশি চাহিয়া সবারে
হবে কি সে দিন, ফিরে যাবে এ বাঙালী
অলকা পাইবে হাতে অভাগা কাঙালী |–
কি আশা জাগালি হৃদে, কে আর নিবারে ?
ধন্য বঙ্গনারী ধন্য সাবাসি তুহারে !
( ৫ )
হরিণ-নয়না শুন কাদম্বিনী বালা,
শুনো ওগো চন্দ্রমুখী কৌমুদীর মালা,
তোমাদের অগ্রপাঠী আমি এক জন,
অই বেশ, ও উপাধি করেছি ধারণ |
যে ধিক্কারে লিখিয়াছি “বাঙালীর মেয়ে”,
তারি মত সুখ আজ তোমা দোহে পেয়ে ||
বেঁচে থাক, সুখে থাক, চির সুখে আর !
কে বলেরে বাঙালীর জীবন অসার |–
কি আশা জাগালি হৃদে কে আর নিবারে ?
ভাসিল আনন্দ ভেলা কালের জুয়ারে ||
ধন্য বঙ্গনারী ধন্য সাবাসি তুহারে |