তবু ভালোবাসা
এই মানসিক চাপ আর নিতে পারছে না ঊর্মিলা। অভ্রর এতো অভিমান! কোন্ সংসারে ঝগড়াঝাটি নেই ! তাই বলে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে!
হ্যাঁ সেদিন একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছিলো ঊর্মিলা। এতোটা না করলেই হতো। আসলে মাথাটা এমন গরম হয়ে গেলো..
দশ বছর হলো ওদের বিয়ে হয়েছে। বাড়ির অমতে বিয়ে করেছিলো বলে বাবাও সম্পর্ক রাখেনি। অভ্র তখন একটা প্রাইভেট ফার্মে কাজ করতো। বেতনও তেমন কিছু না। তবু হার মানেনি ঊর্মিলা। কিন্তু অভ্রর কোম্পানিটা যেদিন বন্ধ হয়ে গেলে, সেদিন ওরা অথৈজলে পড়েছিলো। তবু আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে বাবার কাছে যেতে পারেনি। নিজেই বাড়ি বড়ি ধূপকাঠি বিক্রি করে সংসারের জোয়াল শক্ত হাতে ধরেছিলো। কিন্ত অভ্র আর কোনো চাকরির চেষ্টাই করেনি। প্রথমে ঊর্মিলা মেনে নিলেও ক্রমে অধৈর্য্য হয়ে উঠলো। ইদানিং ওর মদের নেশাও হয়েছে।ওর বহু কষ্টে উপার্জিত টাকা এইভাবে মদে ওড়ানো সহ্য করতে না পেরে সেদিন বাধ্য হয়ে বলেছিলো “বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও।” কিন্তু ও তো মন থেকে তা চায়নি। ও চেয়েছিলো অভ্র বিপদের দিনে বন্ধু হয়ে সংসারে ওর পাশে দাঁড়াক। বাড়ির অমতে বিয়ে করে যে সুখের সংসার ও গড়তে চেয়েছিলো তা এতোটা ঠুনকো ছিলো! না না অভ্র ঠিক নিজের ভুল বুঝতে পারবে।
নিঃসঙ্গ বিছানায় শুয়ে ঊর্মিলা অভ্রকে হাতড়ে বেড়ায়। ওর বিশ্বাস অভ্র ঠিক ফিরবে, হাতটা ওর পিঠে রেখে বলবে “ভয় কি? আমিতো আছি।”