গতানুগতিক
হ-য-ব-র-ল কলেজে সব সময় দুর্দান্ত রেজাল্ট।আসলে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে যারা পাশ করে,তারপর লেটার মার্কস থাকে তাদেরকে নেওয়া হয়।
তবে দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে সব সময়েই গন্ডগোল।দুই দল কিন্তু কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের সুযোগ সুবিধার কথা ভাবে।এক ছাত্র দল। তাদের নেতা কলেজ টপার সৌমেন চৌধুরী। পড়াশোনা যেমন ভালো, তেমনি রাগী। জন্মের সময় মধু
পায়নি সবার ধারণা। মেয়েদেরতো সহ্য করতে পারে না।তার ধারণা মেয়েদের মাথায় বুদ্ধি নেই। ।
অন্যদল ছাত্রীদল। ওখানকার দলনেত্রী সকলের নির্বাচিতা বেশ বুদ্ধিমতি দেবযানী চক্রবর্তী।
দলনেতা – দলনেত্রীর মধ্যে “আদায় কাঁচকলা” সম্পর্ক। দুজনেই দুজনকে দেখলে” তেলে বেগুনে জ্বলে”।
দুজনের চরিত্র ঠিক অপর্ণা সেন ও সৌমিত্র চ্যাটার্জীর
“বসন্ত বিলাপ ” ,”প্রক্সি” সিনেমার চরিত্রের মতো। “সপ্তপদীর” মহানায়িক উত্তম কুমার ও মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের চরিত্রের মতো। সিনেমার প্রথম দিকে ওনাদের সম্পর্ক যেমন ভয়ঙ্কর ছিল।তবে ওনাদের” দুটি মন এক হৃদয়” হয়েছিল চলচ্চিত্রের গল্পে।।উফ এক্ষেত্রে দেবযানী – সৌমেনের যদি মিল হয়।তবে ভবিষ্যত দিব্যদৃষ্টিতে বলা যায় ওদের ছেলে মেয়ে বন্দুক ,লাঠি হাতে জন্মাবে।
ছাত্র ছাত্রীরা সৌমেন -দেবযানীকে ভগবান মনে করে। ওদের জন্য কলেজে স্পেশাল ক্লাস হয়,কারর মাষ্টার রাখতে হয় না।এই টপাররা কখনো পড়া বুঝিয়ে দেয়।
যখন কলেজে আলোচনা সভা হয় তখন কিন্তু ছাত্রদল যা বলে ছাত্রীদল বিপক্ষে বলবেই। আবার উল্টোটা হয়।
বি -এস -সি ফাইনাল দেবে সবাই মন দিয়ে পড়াশোনাতে ব্যস্ত। সেদিন ছিল কলেজে রসায়ন ব্যবহারিক পরীক্ষা।কলেজে হৈচৈ পিওর সায়েন্সের সৌমেন , বায়ো সায়েন্সের দেবযানী পরীক্ষা দিতে আসেনি।ফোন করলে ধরছে না। অনেক পরে দেবযানী কলেজে ফোন করে স্যার আমরা পরীক্ষা দিতে আসছি।
কলেজ থেকে বলে আমরা বলতে কি বলতে চাইছ! বাইরের পরীক্ষককে অনেক বলে সবার শেষে সৌমেন – দেবযানী পরীক্ষা দেয়।সবার মুখ থমথম,
ওরাতো বিপরীত মেরুর মানুষ।
ওদের কি হয়েছে! সৌমেন পরীক্ষার পর জানায় সৌমেন রাস্তা দিয়ে অন্যমনস্ক ভাবে হাঁটছিল। হঠাৎ ট্রাম লাইনে ট্রামের ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে মাথায় লেগে অজ্ঞান।জ্ঞান ফিরতে দেখে সৌমেন, দেবযানীর সাথে এক কেবিনে।ডাক্তারকে দেবযানী বলছে স্যার তাড়াতাড়ি সৌমেনকে সুস্থ করে দিন। দেবযানী নিজের পরীক্ষার কথা না ভেবে সৌমেনের পরীক্ষার কথা ডাক্তারকে বলে।
সুস্থ করে কলেজে জানিয়ে সৌমেনকে পরীক্ষা দিতে নিয়ে আসে।সত্যি দুটি ভিন্ন চরিত্রের দুটি মন এক হৃদয় হয়ে যায় এক আকস্মিক দুর্ঘটনাতে।এরপর থেকে ওরা কি করে যে এক হয়ে গেল।কেউ কারর বিরুদ্ধাচরণ করে না।কেমন শান্তভাব। দুজনে এম-এস-সিতে কলেজে ভর্তি হয়।আড়ালে আবডালে ওদের এক সাথে দেখা যায়। সবাই বলে ওদের প্রেমরোগ হয়েছে।রোগ সারাতে বিয়ে করে। তাদের কন্যা রাজশ্রী বর্তমানে নবম শ্রেণীর ছাত্রী।তার চোখে তার বাবা – মা আদর্শ পুরুষ-নারী।
এক অনুষ্ঠানে তাদের সাথে হঠাৎ দেখা ।যারা একে অপরকে দেখে
হা- রে- রে করে আক্রমণ করত।তারা রাজযোটক দম্পতি।