বজ্রের প্রচণ্ড শব্দে এখন কাঁপি না আর। মনে হয়
কাছে-দূরে কিছু ভাঙছে, ভাঙুক; জানালার পাশে ফুটে রয়
শরৎ হেমন্ত জুড়ে শিউলির গাছ, কখনো সুগন্ধ পাই,
ব্যাকুল হই না; ভোরে ঘুম ভেঙে গেলে একবার হয়তো তাকাই।
জল দেখে মনে মনে সাঁতার কাটি না; সন্ধ্যাতারা দেখে
দাঁড়াই না, একবার তাকিয়ে আলোর টুকরোটি পিছে রেখে
এগোই সম্মুখে। গৃহ যে আকুল করে তেমনও নয়;
ফিরতে হবে, একটুকু আগে বা পরে, তাই ফিরতেই হয়।
নতুন বইয়ে আর সুগন্ধ পাই না, হাতে নিয়ে সেই পাগলের মতো
পড়তে বসি না, একদিন দেখি চারপাশে ধুলো আছে যতো
জ’মে আছে, দেখে হাসি। আন্তরিক এক বন্ধু অচিকিৎস্য অসুখে
সিঙ্গাপুরে মারা গেছে, পত্রিকায় পড়ি, তবু খুব শোকে
কাতর হই না; অথচ কুকুর ছানার শোকে কতো রাত
কেটেছে অনিদ্র কষ্টে, বিস্বাদ লেগেছে চারদিক– মাছ, ভাত,
দুধ। গুচ্ছ গুচ্ছ গোলাপ ফোটে না আজ আর বাগানে ও বুকে;
এমনকি নদী, চাঁদ, ঘাসফুল, তারার আকাশ, দিঘি, দিগন্ত, শুকতারা
এখন দেখি না আর তাকিয়ে তোমার অতি পরিচিত মুখে।