ঠিক যে-রকম চাঁদ আমি ক্লাস ফোরে আঁকতাম ফটফটে আকাশে
অবিকল সে রকম একটা ডোঙার মতন চাঁদ দেখা যাচ্ছে জানলা দিয়ে
ভরা বর্ষায় এমন চাঁদ মোটেই ভালো নয়, তাতে খরা আসে
সে সব এখন জানি
হোটেলের ঘরে একলা, ইচ্ছে করলে টি ভিও দেখা যায়
এই একালের ঊর্বশীদের নাভি দেখানো নাচ, সঙ্গে বিপুল বাজনা
সামান্য আঙুল তুললেই অন্য দৃশ্য, মাটি চুষে চুষে খাচ্ছে একটি গেঁয়ো পরিবার
আবার পরের মুহূর্তেই চলে যাওয়া যায় নিউইয়র্কে কিংবা আফ্রিকার জঙ্গলে
খাবারের অর্ডার দিতে হবে, হট অ্যান্ড সাওয়ার সুপ? ক্রিসপি নুডলস
সামনে খাতা খোলা। মন চাইছে কিছু লেখালিখি করা যেতে পারে
রাত মাত্র পৌনে দশটা
আজকাল ঘড়িতে কোনো শব্দ হয় না, তবু কোথাও সময়ের প্রবাহ ধ্বনি
আমার হাতে হুইস্কির গ্লাস
একা, অত্যন্ত চমৎকার ভাবে একা। চরম বিলাসিতার মতন একা
টেলিফোন ঝনঝন করে উঠল, আমি ধরব না, আমি এখন কারুর কেউ না
চেনাশুনো বৃত্তের কেউ নয়
অচেনার হাতছানিও জানতে চাই না
এই পানীয়র গ্লাস, চেয়ারে আলগা হয়ে বসে থাকা, জানলার বাইরে
ছেলেবেলার চাঁদ
টি ভি বন্ধ, অপরূপ স্তব্ধতার মধ্যে শুধু ওঁ হারমোনি
মহাকালের এমনই একটা বিন্দু যার আয়তন কল্পনাতেও ধরা যায় না
তার মধ্যেও প্রেম বিরহের খেলা, হঠাৎ হঠাৎ বুক মোচড়ানো স্মৃতি
বন্ধ দরজা, তবু সেখানে একটি নারী দেখা দিয়েই
মিলিয়ে যাচ্ছে অলীকের মতন
আঃ কী যে ভালো লাগছে
সমস্ত জীবনের যত কিছু যা পাওয়া, যাবতীয় ব্যর্থতা
এই গেলাসে মিলিয়ে একটু একটু চুমুক দিচ্ছি
কলমটা গড়িয়ে পড়ল, যাক না হারামজাদা, নিরুদ্দেশের দিকে