আমি খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বস্তু ভালোবাসি।
ভোরের আকাশ, পদ্ম, ধবধবে পাঞ্জাবি, খাদহীন সোনা,
শাড়ির উজ্জ্বল পাড়, অনভিজ্ঞ অমল কিশোরী আমার পছন্দ।
কিন্তু আমি যা-ই ছুঁই, তা-ই ঘিনঘিনে নোংরা হয়ে যায়
দেখে নাড়িভুড়ি উগড়ে ফেলার মতো বমি আসে।
ছেলেবেলায় সদ্য-ছাঁই-মাজা একটা ঝকঝকে পেতলের
প্লেট দেখে আমার ছোঁয়ার খুব ইচ্ছে হয়,
কিন্তু আমি ছুঁতে-না-ছুঁতেই সে-উজ্জ্বল পেতল
পচা ইঁদুরের মতো নোংরা হয়ে যায়।
আপা, তখনো অমল জ্যোৎস্না, জ্যোৎস্নার মতোই শাড়ি
পরেছিলো একবার; দেখে আমার ছোঁয়ার খুব
লোভ হয়; আর অমনি মরা রক্তে ভিজে ওঠে সেই
জ্যোৎস্না-শাদা শাড়ি।
ভোরের আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছিলাম একবার
সে থেকে আকাশ কুষ্ঠরোগীর মুখের মতোই কুৎসিত।
ইস্কুলে, ১৯৬২-তে, নবম শ্রেণীর শালোয়ার-পরা স্বপ্ন
আমাকে দিয়েছিলো টকটকে লাল একটি গোলাপ;
আমি ধরতেই গোলাপের পাপড়ি থেকে পুঁজ ঝরতে থাকে
তারপর থেকে আর পৃথিবীতে গোলাপ ফোটে নি।
এখন আমার মুখোমুখি তুমি মেয়ে
বিশশতকের দ্বিতীয়াংশের সবচে পবিত্র পদ্ম-শুভ্র নিষ্কলঙ্কতা
এতো কাছাকাছি মেলছে দীর্ঘ শত-দল; ভীষণ কষ্ট পাচ্ছি
তোমাকে কি আমি ছুঁয়ে ফেলবো–ছুঁয়ে ফেলবো
ছুঁয়ে ফেলবো?