না-লেখা কবিতাটির একটি শব্দ হারিয়ে গেল আজ বিকেলবেলা
যেমন ভাবে মহাকাশে নিরুদ্দেশে যায় অন্তরীক্ষের নাবিক
কিংবা একটা ঘাসফুলকে না ছুঁয়েই উড়ে যায় প্রজাপতি
কিংবা একটা ঢেউ তীরের কাছে পৌঁছোবার আগেই ভেঙে যায়
সেই মুহূর্তে সেই শব্দটিই আমার জীনসর্বস্ব, তাকে না পেলে
আমি কোথায় যাব?
রাস্তায় এত মানুষের ভিড়, কেউ বুঝবে না আমার কী খোয়া গেছে
একটি শব্দ, একটি মাত্র শব্দ, চার অক্ষরের
হে বৃষ্টিভেজা মাদক বিকেল, তুমি কেন তাকে হরণ করলে?
তখন আমি সেই বিকেলের নামে মামলা দায়ের করি
দেবী সরস্বতীর আদালতে
হংসেশ্বরী হয়ে তিনি বীণা হাতে নিয়ে বসে আছেন।
রাজভবনের পেছনের পটভূমিকায়
অনবরত ট্রামের কর্কশ আওয়াজ ও বাসের বিশ্রী ধোঁয়া তিনি মুছে দিলেন
হাতের এক ইঙ্গিতে
পূরবী রাগিণীর সুরে তিনি হাসলেন
নিজেকে সুন্দর রাখার চেষ্টায় তিনি এতই ব্যস্ত যে শুনলেন না
কোনো আর্জি
বিকেলটিকে বেমালুম খালাস করে দিয়ে তিনি বললেন, সমুদ্রে যাও
আমাকে বললেন, তুমিই তো আসল আসামী, নাও দণ্ডাজ্ঞা
চার অক্ষরের বদলে তোমাকে সেই তিন অক্ষরের
শব্দটি বসাতে হবে, মনে আছে?
হঠাৎ বজ্রের গম্ভীর গর্জন, বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি আর
আসন্ন অন্ধকার শূন্য করে দেয় জন পদবী
আমি একলা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকি, কৈশোরের ছবি ভেঙে যায়
সেই তিন অক্ষর? কোন্ তিন? মধ্যে যুক্ত বর্ণ আছে কি?
ছন্দ ভেঙেও বসানো যায়?
না-লেখা কবিতাটি একটি জোনাকি হয়ে উড়তে থাকে
আবছায়াময় কেল্লার মাঠে