Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সেদিন ভরা সাঁঝে || Suchandra Basu

সেদিন ভরা সাঁঝে || Suchandra Basu

“মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে চলে সে দিন ভরা সাঁঝে,
যেতে যেতে দুয়ার হতে কী ভেবে ফিরালে মুখ খানি-
কী কথা ছিল যে মনে।।
তুমি সে কি হেসে গেলে আঁখিকোনে
আমি বসে বসে ভাবি নিয়ে কম্পিত হৃদয় খানি,
তুমি আছ দূর ভুবনে।।”

সত্যি আজ ভীষণ অনুতাপ হয় ভেবে এই যে,আমি যদি সেদিন জোর করে হাসপাতালে না ভর্তি করে আসতাম তবে হয়তো আজও বাবাকে আমরা সবাই কাছে পেতাম। কিন্তু কিছু তো করার ছিল না।তিন চারদিন প্রায় না খেয়েই কাটিয়ে দিয়েছিল। অথচ ওষুধের পাহাড়। সেগুলো সেবন করতে তো কিছু তার আগে খেতে হবে। কোনরকম দুচামচ খেয়ে আর খেতে পারতো না।সে খাওয়া নিয়ে এক অশান্তি। অথচ বারবার বলতো একবার ডায়ালিসিস করে দেখা যাক।শরীরটা সায় দিচ্ছে না।বাঁচতে বড় ইচ্ছে হয়।একটু শুয়ে আবার দুই হাঁটু মাথা এক করে খাটে বসে থাকত।কখনো শুয়ে টিভিতে পুরনো হিন্দি সিনেমা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ত।স্মার্ট ফোন চালনা করতে পারত না বলে চব্বিশ ঘন্টা টিভি চ্যানেল ঘুরিয়ে এটা সেটা দেখতো।শেষে তাও দেখতে ভাল লাগত না।শুধু বলতো এতো তাড়াতাড়ি চলে যাব।একেই বলে মায়া।খেতে পারছে না।শুয়ে ঘুমাতে পারছে না। তবু বলতো বেশি না দুই এক বছর যদি কোন রকম বাঁচতে পারি।কত লোক তো ডায়ালিসিস করে বেঁচে আছে।এক পা আগায় তো দুই পা পিছিয়ে যায়।বাবার ইচ্ছায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল।ডাক্তারের সাথে বাবা নিজেই পরামর্শ করেছিল। ঠিক হল ডায়ালিসিস করা হবে।আমরা শুধু বডি গার্ডের মত পাশে থাকতাম।বাবার কথা মতই ডায়ালিসিস চ্যানেল করার দিন নির্দ্দিষ্ট করা হয়। এক সপ্তাহ পরে যেদিন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে ঠিক সেদিন বাবা বেঁকে বসল। এদিকে হাসপাতালে কিছু টাকা পয়সা জমা দেওয়া হয়ে গেছে। সকাল থেকে কি যে হল বুঝলাম না।গাড়িও সময় মত এসে হাজির। বাবা বলছিল আজ আর আমি যাব না।কাল ঠিক চলে যাব।আমাদের মাথা গরম হয়ে যায়।ঝাঁঝি মেরে বলি আজ ডাক্তার আসবে আর কাল তুমি যাবে? কাল তো ওই ডাক্তার অন্য জায়গায় যাবে।কি ভাবল চুপ করে বসে।তারপর বুঝিয়ে হাসপাতালে আমি জোর করে নিয়ে গেলাম।সন্ধ্যায় দেখে এলাম ভাল আছে। পরের দিন সকালে গেছিলাম দেখা করতে।কিন্তু ওদের নিয়ম অনুযায়ী দেখা করতে দেয়নি। পরের দিন ছিল বিকেলে চ্যানেল করার কথা। দুপুরে ফোন করে বলল বাবা ভাল আছে।বিকেলে ফোন করে জানাল বাবার অবস্থা খারাপ। নাড়ী পাওয়া যাচ্ছে না।আপনারা দেরী না করে চলে আসুন। তাই তো আজও আমি অনুতপ্ত। বারবার মনে হয় বাবা তো হাসপাতালে যেতে চায়নি।আমিই জোর করে নিয়ে গেছিলাম যদি সুস্থ হয়ে ফেরে।না পারিনি আমি ফিরিয়ে আনতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *