আজ আমি এক গল্প শোনাই তোমায়,
সেই আছে না তিনতলা এক অট্টালিকা বাড়ি
মজুত সেথা জগৎ জোড়া যত
চাকর বাকর হীরা জহরত, টাকা ভরা আলমারি
সুখের খনি উপচে ওঠে সেথা,
গেলাস গেলাস হুইস্কি ফুরায় উথলে তুলে ফেনা
পরকীয়ার পৈশাচিকতা নিঃশব্দে কাঁদায়
শুন্য ইটের পাঁজর হতে শান্তি মেলে ডানা…
শুনতে পাওয়া যায় না সেথা কভু
চলকে ওঠা শিশুর মিষ্টি মধুর কলকলানি,
ইট পাথরের ওই কঙ্কাল,চকমকি তে সেজে
আড়াল করে যে প্রাণপনে যত বর্জ্য-গ্লানি…
দিনের আলো মিলিয়ে গিয়ে এল ঝড়ের রাত.
করল প্রমাণ আভিজাত্যের সুখের পায়রা ঠগ!
নিলাম হল বাড়ি-গাড়ি-আভরণ,
চাবি কোথায়! চাবি কোথায়! মনের ঘা দগদগ।
“নতুন চাবি কিনতে হবে যেমন করে পারি”
অঙ্গীকারে ক্ষিপ্র তারা,নেশায় তারা উন্মাদ.
তীব্র অনল গর্জে ওঠে রোষে
আকাশ-বাতাস ওঠে কেঁপে ভয়াল আর্তনাদ….
অবশেষে বাস্তবের এই রূঢ় প্রখরতা,
বানায় তাদের কঠিন মরূর ক্লান্ত অভিযাত্রী,
ঝুপড়ির ঘরে চলে দিন গুজরান
সোনার চাবি ভুলতে বসে, পূর্ণিমার ওই রাত্রি
আসে যখন অবাক চোখে তারা
খুঁজে যে পায় অন্য সুখের ভাষা।
দুটি হাত-মন-হৃদয় একাকার
জীবন সাথীর চোখের তারা ই হল বাঁচার দিশা।
স্টিলের কেনা বাসন-কোসন এল
মাদুর এল,তৈরী হল খড় বিছানো দাওয়া,
মাতাল করে ছুঁয়ে গেল তাদের,
প্রথম বৃষ্টি, কালবৈশাখী হাওয়া….
হঠাৎ হেসে শুধায় স্বামী,স্ত্রী কে
আদর করে গাল টা দিয়ে টিপে,
এখনও কি হাতড়ে বেড়াও নাকি,
সোনার চাবি প্রখর রোদের তাপে??
লাজুক হেসে লুকিয়ে মাথা বুকে,
বলল,”শুধুই খুঁজি যে পূর্ণিমা”
চাবির আর কি আছে গো দরকার?
ছাড়ো তো আমায়,তাপ্পি দিই গে তোমার ছেঁড়া জামা।
উঠতে গিয়ে হাতে পড়ল টান
“ফাঁকি দিয়ে পাবে কি আর পার?”
স্ত্রী বলে হেসে, “চাবি তো গিয়েছি পেয়ে”
গর্ভে আমার বাড়ছে চারা,খোঁজার কি দরকার?”