জাহাজে যেতে চাও, না এরোপ্লেনে
জাহাজে যেতে চাও, না এরোপ্লেনে?
কাকাবাবুর কথা শুনেই সন্তুর বুকের মধ্যে ধক করে উঠল। খুব বেশি আনন্দ হলে বুকের মধ্যে এ-রকম টিপটপ করে। ঠিক ভয়ের মতন। মনে হয়, হবে তো? শেষ পর্যন্ত হবে তো?
সবেমাত্র পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ক্লাস নাইন থেকে সন্তু এবার টেনে উঠবে। শেষ পরীক্ষার দিনই কাকাবাবু জিজ্ঞেস করেছিলেন, সন্তু, এখন তো তোমার ছুটি থাকবে, আমার সঙ্গে বেড়াতে যাবে এক জায়গায়?
সন্তু তো সঙ্গে সঙ্গে রাজি। কাকাবাবুর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া মানেই, তো দারুণ ব্যাপার। নতুন কোনও অ্যাডভেঞ্চার হবে নিশ্চয়ই। অন্যরা বেড়াতে গিয়ে শুধু সুন্দর-সুন্দর জিনিস দেখে। আর কাকাবাবু যান বিশেষ কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে।
সন্তু সঙ্গে গেলে কাকাবাবুরও অনেক সুবিধে হয়। কাকাবাবুর বয়েস তিপন্ন চুয়ান্নর মতো, যদিও দেখলে একটুও বুড়ো মনে হয় না। গায়ে বেশ জোর আছে, মুখে প্ৰকাণ্ড গোঁপ, কিন্তু কাকাবাবুর একটা পা চিরকালের মতন নষ্ট হয়ে গেছে। দিল্লিতে পুরাতত্ত্ব বিভাগে তিনি খুব বড় চাকরি করতেন। একবার আফগানিস্তানে পাহাড়ি রাস্তায় তাঁর জিপ গাড়িটা উল্টে খাদে পড়ে যায়। সেবার মরতে-মরতেও বেঁচে উঠলেন, তবে একটা পা আর কিছুতেই ঠিক হল না। ডান পায়ের পাতার হাড়গুলো ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেছে। এখন ক্ৰাচে ভর দিয়ে হাঁটতে পারেন।
সেই দুর্ঘটনার পর চাকরি ছেড়ে দিলেন কাকাবাবু, কিন্তু বাড়িতে চুপ করে বসে থাকতে পারেন না একদম। আবিষ্কারের নেশা ওঁর এখনও রয়ে গেছে। ওঁর ঘরে কত যে পুরনো বই, তার ঠিক নেই। সেইসব বই পড়ে, যে-সব রহস্যের আজও সমাধান হয়নি, তিনি সেগুলোর সন্ধানে বেরিয়ে পড়তে চান। কিন্তু এবারে কোথায় যাওয়া হবে, কিসের সন্ধানে, তা এখনও সন্তু জানে না। কাকাবাবুর এই এক দোষ, আগের থেকে কিছুই বলেন না। বড্ড গম্ভীর লোক।
কাকাবাবু যখন জিজ্ঞেস করলেন জাহাজে না এরোপ্লেনে যাওয়া হবে, তখন সন্তু দারুণ একটা চিন্তার মধ্যে পড়ল। সে কোনওদিন জাহাজেও চাপেনি, প্লেনেও চাপেনি। কোনটা বেশি ভাল? কিছুতেই ঠিক করতে পারে না।
জাহাজে কিংবা প্লেনে যেতে হবে যখন, তখন নিশ্চয়ই খুব দূরের কোনও দেশে যাওয়া হচ্ছে এবার। আফ্রিকা? দক্ষিণ আমেরিকা? আনন্দে সন্তুর একেবারে নাচতে ইচ্ছে করল। তার ইস্কুলের বন্ধুদের মধ্যে কেউ এত দূর বিদেশে যায়নি।
কাকাবাবু, আমরা কোথায় যাব?
সেটা তো গেলেই দেখতে পাবে!
সন্তু জানত, কাকাবাবু এই উত্তরই দেবেন। তবু জিজ্ঞেস না-করে থাকতে পারছিল না। এবার সে বলল, আমরা তাহলে প্লেনেই যাব।
কাকাবাবু বললেন, আচ্ছা, ঠিক আছে।
সন্তুর জাহাজে চড়ারও খুব ইচ্ছে ছিল। তবু প্লেনের কথাই বলল। প্লেনে তাড়াতাড়ি যাওয়া যায়। ফেরার সময় জাহাজে ফিরলেই হবে।
এর পর দুদিন কাকাবাবু আর কিছু বললেন না। তাঁকে খুব ব্যস্ত মনে হল। সকালবেলা বেরিয়ে যান, ফেরেন অনেক রাত্রে। সন্তু বুঝতে পারল, কাকাবাবু সব ব্যবস্থা-ট্যাবস্থা সেরে ফেলছেন। গভর্নমেন্টের লোকেরা কাকাবাবুকে খুব খাতির করেন।
এর মধ্যে একদিন রাস্তায় রিনির সঙ্গে সন্তুর দেখা হল। রিনি সিদ্ধাৰ্থদা, আর স্নিগ্ধাদির সঙ্গে শিগগিরই গোয়া বেড়াতে যাচ্ছে। ওরা বোম্বে পর্যন্ত ট্রেনে যাবে, তারপর সেখান থেকে জাহাজে। কথাটা শুনে সন্তুর একটু খটকা লাগল। গোয়াতেও জাহাজে যাওয়া যায়? তাহলে কাকাবাবুও কি গোয়াতেই যেতে চাইছেন? গোয়াতে গেলে রিনিদের সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে। সেবার যেমন কাশ্মীরে হঠাৎ দেখা হয়ে গিয়েছিল।
রিনি সন্তুকে জিজ্ঞেস করল, তোরা এবার কোথাও যাচ্ছিস না?
সন্তু তো এখনও জায়গাটার নাম ঠিক মতন বলতে পারছে না, তাই বলল, কি জানি, দেখি, ঠিক নেই এখনও!
সেদিন রাত্তির বেলা বাড়ি ফিরে কাকাবাবু আবার সন্তুকে ডাকলেন। জিজ্ঞেস করলেন, সন্তু, তোমার কাছে তোমার নিজের ফটো আছে?
মাসখানেক আগেই সিদ্ধাৰ্থদা তাঁর নতুন ক্যামেরায় সন্তুর অনেকগুলো ছবি তুলে দিয়েছেন। সন্তু দৌড়ে গিয়ে সেই খামটা নিয়ে এল। কাকাবাবু সবকটা ছবি নেড়েচেড়ে দেখলেন। তারপর সেগুলো সরিয়ে দিয়ে বললেন, নাঃ, এগুলোতে চলবে না।
সন্তু অবাক হয়ে গেল। ছবিগুলো খুবই সুন্দর, সবাই প্রশংসা করেছেন।
বাবা-মারও খুব ভাল লেগেছে। কাকাবাবুর পছন্দ হল না?
কাকাবাবু বললেন, দুটো কান দেখা যায়, এমন ছবি চাই। সন্তু আরও অবাক। কান? লোকে মুখের ছবিই তো দেখে, কান দুটো আলাদা করে দেখে নাকি? অজান্তেই সন্তু নিজের কানে হাত দিল।
কাকাবাবু বললেন, আমি একটা চিঠি লিখে দিচ্ছি, কাল সকালেই রাসবিহারী এভিনিউতে যে জুবিলি ফটোগ্রাফার্স আছে, সেখানে গিয়ে ছবি তুলিয়ে আসবে। আর বিকেলেই সেখান থেকে তোমার ছখানা ছবি নিয়ে আসবে। খুব জরুরি!
কাকাবাবু তার ছখানা ছবি নিয়ে কী করবে, সেকথা সন্তু আকাশ পাতাল চিন্তা করেও বুঝতে পারল না। যাই হোক, পরদিন সকালেই সে জুবিলি ফটোগ্রাফার্সে ছবি তুলিয়ে এল। বিকেলেই নিয়ে এল ছখানা ছবি। সবকটা ছবি একই রকম। শুধু মুখের ছবি, দুটো কানই ঠিকঠাক দেখা যাচ্ছে বটে!
সন্তু আর কৌতূহল চেপে রাখতে পারছে না। রাত্তিরবেলা মাকে সে চুপিচুপি জিজ্ঞেস করল, মা, এবার কোথায় বেড়াতে যাওয়া হবে?
মা বললেন, এবার তো দাৰ্জিলিং যাওয়া হচ্ছে!
দাৰ্জিলিং? দাৰ্জিলিং তো পাহাড়ের ওপরে, সেখানে আবার জাহাজে করে যাওয়া যায় নাকি? প্লেনে করে যাওয়া যায় বটে, কিন্তু কাকাবাবু তো জাহাজের কথাও জিজ্ঞেস করেছিলেন? সন্তু একটু হতাশ হয়ে গেল।
মা আবার বললেন, দার্জিলিংয়ে তোর ছোট মামা থাকেন, ছোট মামাকে মনে আছে তো? সেই যে একবার তোকে একটা বাঁশি কিনে দিয়েছিলেন? সে আজ দার্জিলিংয়ে মস্ত বড় বাড়ি পেয়েছে অফিস থেকে, সেই বাড়িতে আমরা সবাই উঠব।
সন্তু বলল, তোমরাও যাচ্ছ নাকি?
মা বললেন, তার মানে? আমরা যাব না তো কে যাবে?
কাকাবাবুও তোমাদের সঙ্গে যাচ্ছেন?
ও সেই কথা বল। ঠাকুরপো আমাদের সঙ্গে যাবেন কেন? উনি তো প্লেনে করে কোথায় যেন যাবেন বলছিলেন। সিঙ্গাপুর না। অসম, কী যেন জায়গা! তোর বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে।
সন্তু হাসল। মা একদম ভূগোল ভুলে গেছেন। সিঙ্গাপুর আর অসম কি কাছাকাছি জায়গা হল নাকি?
আমিও তো কাকাবাবুর সঙ্গে যাচ্ছি।
মা একটু রাগের সঙ্গে বললেন, সে জানি! তুই তো আর আমাদের সঙ্গে যেতে চাস না!
সে-কথা সত্যি। সন্তু খুব ছোটবেলায় মা-বাবার সঙ্গে বেড়াতে যেত, তখন খুব ভাল লাগত। এখন আর ভাল লাগে না। এখন কাকাবাবুর সঙ্গে যাবার জন্যই তার বেশি উৎসাহ।
সোমবার দিন সকালবেলা কাকাবাবু বললেন, সন্তু, খাওয়া হয়ে গেলে তুমি জামা প্যান্ট পরে তৈরি হয়ে নেবে। তুমি আজ আমার সঙ্গে বেরুবে।
সন্তু ভাবল, সেইদিনই বুঝি বেড়াতে যাওয়া হচ্ছে। ব্যস্ত হয়ে বলল, বাক্স-টাক্সি গুছিয়ে নেব?
কাকাবাবু বললেন, না, না, তার দরকার নেই। এমনি তুমি আমার সঙ্গে এক জায়গায় কাজে যাবে।
দুপুরে একটা ট্যাক্সি নিয়ে কাকাবাবু সন্তুকে নিয়ে এলেন ডালহৌসিতে। সিঁড়ি দিয়ে উঠে এলেন একটা অফিস-বাড়ির দোতলায়। ক্রাচ নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে খুব অসুবিধে হয় না। কাকাবাবুর। বেশ সাধারণ লোকের মতোই টক্টক করে উঠে যান। কিন্তু পাহাড়ে উঠতে খুব কষ্ট হয়। কাশ্মীরে যেবার কণিঙ্কের মুণ্ডুর সন্ধানে যাওয়া হয়েছিল, সেবারে তো কাকাবাবু একবার পাহাড় দিয়ে গড়িয়েই পড়ে গিয়েছিলেন। তবে, কখনও কোনও উঁচু পাঁচিল টপকাতে গেলে কাকাবাবু দুহাতের ওপর ভর দিয়ে অনায়াসেই লাফিয়ে পার হয়ে যেতে পারেন। একটা পা নেই বলেই কাকাবাবুর হাত দুটোতে জোর সাঙ্ঘাতিক।
কাকাবাবু একজন অফিসারের ঘরে ঢুকতেই তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে খুব খাতির করে বললেন, আসুন, আসুন, মিঃ রায়চৌধুরী। এইটি কি আপনার ভাইপো নাকি?
কাকাবাবু বললেন, হ্যাঁ। এর নাম সুনন্দ রায়চৌধুরী। এ আমার সঙ্গে যাবে।
সন্তু কাকাবাবুর পাশের চেয়ারে বসল। তারপর অফিসারটি তাকে কিছু কাগজপত্র সই করতে দিলেন। খানিকটা বাদে তিনি সুন্দর করে বাঁধানো দুটি নীল রঙের ছোট্ট, শক্ত বই কাকাবাবুকে দিয়ে বললেন, এই নিন, মিঃ রায়চৌধুরী! আচ্ছা, আমার শুভেচ্ছা রইল।
অফিসারটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে কাকাবাবু সন্তুকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন বাইরে। সন্তু এতক্ষণে বুঝতে পেরেছে, এটা পাসপোর্ট অফিস। পাসপোর্ট কথাটা আগে শুনেছে সন্তু, কিন্তু জিনিসটা কখনও চোখে দেখেনি।
কাকাবাবু সেই ছোট নীল বইয়ের একটা সন্তুকে দিয়ে বললেন, এই নাও, এটা তোমার পাসপোর্ট, খুব সাবধানে রাখবে নিজের কাছে।
সন্তু বইটা খুলে দেখল। প্রত্যেক পাতায় বেশ বড় অশোকচক্রের ছাপ মারা। প্রথম দিকেই বাঁ দিকের পাতায় সন্তুর ছবি আটকানো। সেই দুকান সমেত মুখের ছবি।
বাইরে এসে একটা ট্যাক্সি ধরতে হবে। এই সময় খালি ট্যাক্সি পাওয়া শক্ত। কোনও ট্যাক্সিই থামছে না। ক্ৰাচ নিয়ে কাকাবাবু বাসেও উঠতে পুরুবেন না। মহা মুশকিল। অনেকক্ষণ বাদে একটা ট্যাক্সি পাসপোর্ট অফিসের সামনেই থামল, তা থেকে কয়েকজন লোক নামছে। সন্তু সেই ট্যাক্সিটা ধরবার জন্য যেই দৌড়ে গেল, অমনি একজন লোকের সঙ্গে তার খুব জোরে ধাক্কা লাগল। সন্তু ঘুরে পড়েই যাচ্ছিল, সামনে নিল কোনওক্রমে, কিন্তু পাসপোর্ট বইখানা ছিটকে গেল তার হাত থেকে।
সন্তু সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে লোকটাকে দেখল। লোকটা বিদেশি। সন্তু স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে যে, লোকটা তাকে ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়েছে। সাহেবরা তো সাধারণত এরকম অভদ্র হয় না। সন্তু লোকটিকে কিছু বলার সুযোগ পেল না, তার আগেই সে খালি ট্যাক্সিটাতে উঠে বসল। লোকটা তাহলে ট্যাক্সিটা নেবার জন্যই এরকম ধাক্কা মেরে দৌড়ে গেল!
পাসপোর্ট বইখানা ছিটকে গিয়ে পড়েছে ফুটপাতের ধারে। আর একটু হলেই পাশের জলকাদার মধ্যে পড়ত। সন্তু দৌড়ে গিয়ে সেটা নেবার আগেই আর-একটা ময়লা-পোশাক-পরা ভিখিরির মতন ছেলে ছোঁ। মেরে তুলে নিল সেটা। তারপর পালাবার চেষ্টা করল। কিন্তু পারল না। এর মধ্যেই কাকাবাবু এগিয়ে এসে একটা ক্রাচ তুলে খুব জোরে মারলেন ছেলেটার হাতে। ছেলেটা উঃ করে চেঁচিয়ে উঠে পাসপোর্টটা ফেলে দিল। কিন্তু আর দাঁড়াল না, দৌড়ে মিশে গেল ভিড়ের মধ্যে। এদিকে সেই বিদেশি সাহেবটিকে নিয়ে ট্যাক্সিটাও ছেড়ে গেছে।
ব্যাপারটা এমনই হঠাৎ হল যে, সবটা বুঝতেই খানিকটা সময় লাগল সন্তুর। সাহেবটা তাকে ধাক্কা মারল আর ঠিক সেই সময়েই ভিখিরি ছেলেটা তার পাসপোর্টটা চুরি করবার চেষ্টা করল—এর মধ্যে কি কোনও যোগ আছে? না দুটো আলাদা-আলাদা ব্যাপার? ভিখিরি ছেলেটার পাসপোর্ট চুরি করে কী লাভ?
কাকাবাবু গম্ভীরভাবে বললেন, তোমাকে বললাম না, পাসপোর্টটা খুব সাবধানে রাখতে?
মা যেমন ভাবে ছেলেকে আদর করে, কিংবা ফোঁড়া হলে আমরা যে-রকম ভাবে তার ওপর হাত বুলোই, সন্তু ঠিক সেইরকমভাবে পাসপোর্টটা তুলে নিয়ে সেটার ওপর হাত বুলোতে লাগল। ভাগ্যিস জলকাদায় পড়েনি, এমন সুন্দর জিনিসটা তা হলে নষ্ট হয়ে যেত।
আর একটা ট্যাক্সি পেতে বেশি দেরি হল না। তাতে উঠে বসে সন্তু একটু আগের ঘটনাটা ভাবতে লাগিল। ব্যাপারটা শেষ পর্যন্ত মনে হল এমনিই একটা হঠাৎ-ঘটে-যাওয়া ঘটনা। যদিও এর আসল মানে সন্তু বুঝতে পেরেছিল বেশ কয়েকদিন পরে।
যাই হোক, পাসপোর্টটা পাবার পর সন্তুর আর সন্দেহ রইল না যে, সে এবার বিদেশেই যাচ্ছে। গোয়া কিংবা দার্জিলিং যেতে তো পাসপোর্ট লাগে না! কবে যাওয়া হবে তার ঠিক হয়নি এখনও, কিন্তু সন্তু এর মধ্যেই বাক্স-টাক্সি গুছিয়ে একেবারে তৈরি। কিন্তু সব গুছোনো ওলোট-প্যালেট করতে হল। আবার। শুক্রবার দিন রাত্তিরে, কাকাবাবু বললেন, সন্তু, কাল ভোরে আমরা যাচ্ছিা! ছাঁটার সময় প্লেন। সাড়ে চারটের সময়ই ঘুম থেকে উঠে পড়তে হবে। জিনিসপত্র এখনই গুছিয়ে রাখো।
সন্তু আনন্দে একেবারে লাফিয়ে উঠল। বলল, আমার সব গুছোনো ঠিকঠাক করাই আছে।
কাকাবাবু বললেন, দেখি, বাক্স নিয়ে এসো?
বাক্স খুলে দেখে কাকাবাবু বললেন, একী, এত কোট-সোয়েটার নিয়েছ। কেন? গরম জামা-টামা লাগবে না! বেশি করে গেঞ্জি নাও!
বিদেশে যাবে, অথচ গরম জামা লাগবে না, এ আবার কী? তাহলে কি আরব-পারস্যের মতন কোনও মরুভূমির দেশে যাওয়া হচ্ছে? সেগুলোও বিদেশ অবশ্য!