Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 77

রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

সুগ্রীব বলেন শুন পবন-কুমার।
সীতার উদ্দেশ কৈলে সাগরের পার।।
তুমি শ্রীরামের ভক্ত জানে সর্ব্বজন।
করে এসো শ্রীরাম লক্ষ্মণে অন্বেষণ।।
তোমারে ভুলায়ে গেল রাবণ-কুমার।
ত্রিভুবনে এ কলঙ্ক রহিল তোমার।।
তব বুদ্ধি ভ্রমেতে শ্রীরামে নিল চোরে।
অন্বেষণ করিতে পাঠাব বল কারে।।
সুগ্রীবের বাক্যেতে মারুতি মহাবল।
লাজে অভিমানে আঁখি করে ছল ছল।।
মারুতি বলেন আমি যাব অন্বেষণে।
স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতাল খুঁজিব ত্রিভুবনে।।
তথাপি না পাই যদি শ্রীরাম লক্ষ্মণ।
করিব জলধি-জলে এ দেহ পাতন।।
এত কহি কান্দে হনু পবন-নন্দন।
কোথা পাব শ্রীরাম লক্ষ্মণ অন্বেষণ।।
এইখানে থাক সবে একত্র হইয়া।
যাবৎ না আসি আমি ত্রৈলোক্য খুঁজিয়া।।
সুগ্রীব-রাজার কাছে লইয়া বিদায়।
সুড়ঙ্গে প্রবেশ করি হনুমান যায়।।
যে পথে লক্ষ্মণ রামে হরেছে রাক্ষসে।
সেই পথে গেল বীর চক্ষুর নিমিষে।।
পাতালেতে গিয়া দেখে সূর্য্যের প্রকাশ।
বিচিত্র নির্ম্মাণ পুরী যেমন কৈলাস।।
প্রথমে দেখিল বলিরাজার বসতি।
পুণ্যতীর্থ গঙ্গা দেখে নামে ভোগবতী।।
মহা তপোবনে দেখে কত মুনি ঋষি।
নাগিনী যক্ষিণী যত পরামরূপসী।।
চতুর্ভুজ দ্বিভুজ অশেষরূপী লোক।
জরা মৃত্যু নাহি তথা নাহি রোগ শোক।।
তিন কোটি পুরুষে কপিল মুনি বৈসে।
পরমাসুন্দরী কত দেখে আশে পাশে।।
বিচিত্র নির্ম্মাণ দেখে কত তীর্থ-স্থান।
সেথা রাম লক্ষ্মণের না পায় সন্ধান।।
সকল পাতালপুরী ভ্রমে একে একে।
মহীরাবণের পুরী দেখিল সম্মুখে।।
ছদ্মবেশ ধরিয়া খুজিঁল সব পুরী।
রাক্ষসের পুরী যেন অমর-নগরী।।
ত্বরিত গমনে গেল পুরীর ভিতর।
পাষাণ রচিত কত দীধি সরোবর।।
অসংখ্য পুরুষ নারী পরম সুন্দর।
বিচিত্র নির্ম্মাণ দেখে সুবর্ণের ঘর।।
বড় বড় বৃক্ষ তথা পর্ব্বত প্রমাণ।
অশ্ব হস্তী রথ দেখে বিচিত্র নির্ম্মাণ।।
মনে মনে চিন্তা করে পবন-কুমার।
এই পুরে আছে রাম লক্ষ্মণ আমার।।
মর্কট রূপেতে রহে বৃক্ষের উপর।
বিচিত্র নির্ম্মাণ ঘাট দেখে সরোবর।।
বহু লোক আসি তথা করে স্নান দান।
বানর দেখিয়া হয় চমৎকার জ্ঞান।।
বৃক্ষতলে থাকি লোক নেহারিয়া দেখে।
এমন বানর যে আইল কোথা থেকে।।
একজন ছিল তথা বৃদ্ধা চিরজীবী।
বানরে দেখিয়া বৃদ্ধা মনে মনে ভাবি।।
বৃদ্ধা বলে শুন সবে আমার বচন।
পূর্ব্বের বৃত্তান্ত-কথা শুন দিয়া মন।।
করিল বিস্তর তপ মহী মহারাজা।
বিস্তর প্রকারে কৈল মহামায়া পূজা।।
করিল বিস্তর পূজা বহু উপবাস।
অমর হইতে রাজার ছিল বড় আশ।।
অমর হইতে দেবী দিলা বর।
দেবী বলে অন্য বর চাহ নিশাচর।।
মহী বলে অতি কিম্বা দেবতা গন্ধর্ব্ব।
যক্ষ রক্ষ কিন্নর পিশাচ আদি সর্ব্ব।।
সংগ্রামেতে কারো হাতে মরণ না হয়।
সেই বর দিল দেবী বুঝিয়ে আশায়।।
মহী বলে প্রকারেতে হলেম অমর।
যত জাতি যোদ্ধা আছে কারো নাহি ডর।।
নর আর বানর এ দুই বাকী আছে।
ভক্ষ্য-জাতি কি করিবে রাক্ষসের কাছে।।
ভগবতী বলে ভয় কারে নাহি আর।
নর-বানরের হাতে সবংশে সংহার।।
অমর নহেন রাজা জানি বিবরণ।
নর কপি এলে হবে রাজার মরণ।।
বন্দী করে আনিয়াছে শিশু দুই নর।
কোথা হইতে উপনীত হইল বানর।।
এই কথা গুপ্তে বুড়ী কহে একজনে।
চারিদিকে দেখে পাছে অন্য কেহ শুনে।।
শুনিয়া হরিষ হৈল পবন-নন্দন।
কোথায় আছেন প্রভু ভাবে মনে মনে।।
হেনকালে নারী সব নগর-নিবাসী।
জল লইবারে আসে কক্ষেতে কলসী।।
এক নারী প্রাচীনা মহীর পুরদাসী।
তাহারে জিজ্ঞাসা করে যতেক রূপসী।।
রাজার বাটীতে কেন বাদ্যভাণ্ড রোল।
কেহ নাচে কেহ গায় নৃত্য কোলাহল।।
মহানন্দে আসিতেছে দ্বিজগণ সব।
রাজার বাটীতে আজি কিসের উৎসব।।
বৃদ্ধা নারী বলে শুন যতেক রূপসী।
রাজার বাটীর কথা কৈতে ভয় বাসি।।
কহিতে নিষেধ আছে কহিবার নয়।
প্রকাশ না কর কথা দণ্ড চারি ছয়।।
জিজ্ঞাসা করিলে যদি সঙ্গোপনে বলি।
মহামায়া-কাছে আজি হবে নরবলি।।
আনিয়াছে দুটিশিশু পরম সুন্দর।
না দেখি এমন রূপ অবনী ভিতর।।
কোন্ অভাগীর পুত্র দেখে ফাটে প্রাণ।
দণ্ড চারি ছয় পরে দিবে বলিদান।।
বন্দী করে রাখিয়াছে সঙ্গোপনে ঘরে।
রাজার বাটীর কথা না কহিও কারে।।
এত বলি জল লয়ে সবে গেল বাসে।
হনুমান শুনিলেন বৃক্ষোপরে বসে।।
মনে মনে ভাবে বীর পাইলাম সন্ধি।
এইখানে শ্রীরাম লক্ষ্মণ আছে বন্দী।।
শরীর পুলক বীর পবন-তনয়।
এখানেতে থাকা আর উপযুক্ত নয়।।
চক্ষুর নিমিষে গেল রাজ-অন্তঃপুরে।
শ্রীরাম লক্ষ্মণ যথা বন্দী আছে ঘরে।।
দোহারা লোহার গড় ভিতর বাহিরে।
চারিদিকে নিশাচর নানা অস্ত্র ধরে।।
চারিদিকে নিশাচর আছে অগণন।
ঘরের ভিতরে আছে শ্রীরাম লক্ষ্মণ।।
মক্ষীরূপে প্রবেশিল ঘরের ভিতরে।
শরীর ধারণ করি দোঁহে নমস্কারে।।
আচম্বিতে মারুতি নোঙায় গিয়া মাথা।
নিদ্রা-ভঙ্গে শ্রীরাম লক্ষ্মণ কন কথা।।
লক্ষ্মণ বলেন শুন পবন-নন্দন।
সুগ্রীব অঙ্গদ কোথা, কোথা বিভীষণ।।
হনুমান বলে প্রভু পাসরিলে চিতে।
মহীরাবণ হরিয়ে এনেছে পাতালেতে।।
শুনিয়া কাতর অতি শ্রীরাম লক্ষ্মণ।
প্রবোধ করিয়া বলে পবন-নন্দন।।
হেনকালে রাজপুরে পড়িল ঘোষণা।
মহামায়া পূজা হবে বাজিল বাজনা।।
বিস্তর ছাগল দিবে মহিষ বিস্তর।
বলিদান দিবে রাজা আর দুই নর।।
নানা সুবাসিতা পুষ্প গন্ধ মনোহর।
সাজাইয়া লয়ে যায় মহামায়া-ঘর।।
শ্রীরাম বলেন শুন পবন-নন্দন।
বিপাকে পড়েছি হেথা হইবে কেমন।।
নাহি সৈন্য সেনাপতি নাহি ধনুঃশর।
কেমনে রাক্ষস-হাতে পাইব নিস্তার।।
যোড়হস্তে কহে হনু শ্রীরামের আগে।
রাক্ষস মারিতে প্রভু কোন্ ভার লাগে।।
ত্রিভুবনে খ্যাত তব শ্রীচরণ দাস।
বৃক্ষ পাথরেতে রিপু করিব বিনাশ।।
রবাণ রাজার বংশ যেখানে যে থাকে।
তোমার প্রসাদেতে মারিব একে একে।।
অনেক ব্রাক্ষণ হিংসে বহু দেব ঋষি।
গোহত্যা প্রভৃতি পাপ কৈল রাশি রাশি।।
দুর্জ্জয় রাক্ষস-বংশ হইবে সংহার।
রাক্ষস বধিতে প্রভু তব অবতার।।
অলক্ষিত মায়া তব কোন্ জন জানে।
মরণ ইচ্ছিয়া তোমা আনিল এখানে।।
মহীর গৃহেতে আছে জগতের মাতা।
প্রীতিবাক্যে কব গিয়া গুটিকত কথা।।
তাহে যদি মহীর করিতে চান হিত।
সাগরে ডুবাব লয়ে মন্দির সহিত।।
মনোনীত বুঝে আসি মহেশ-জায়ার।
রাম বলেন কতক্ষণে আসিবে আবার।।
মারুতি বলেন এক তিল ছাড়া নই।
কি বলেন কাত্যায়নী কথা দুই কই।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress