Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 66

রামায়ণ : লঙ্কাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

কোপেতে রাবণ চাহে লক্ষ্মণের পানে।
ময়-দানবের শেল পড়ে গেল মনে।।
রাবণ কহিছে চক্ষু করিয়া পাকল।
দেখিব মানুষ বেটা ধরে কত বল।।
বিভীষণে বাঁচাইলি করে বীরপণা।
মারি শেল রাখ্ দেখি বাঁচায়ে আপনা।।
তোর বাণে বিভীষণ পেলে প্রতিকার।
মারি শেল তোরে, দেখি কে রাখে এবার।।
এখনি মরিবি ভণ্ড লক্ষ্মণ তপস্বী।
মৃত্যুকালে মনে কর জানকী রূপসী।।
মা বাপেরে মনে কর বন্ধু যত জন।
মৈলে কার সঙ্গে আর নাহি দরশন।।
রাম সুগ্রীবের ঠাঁই মাগহ মেলানি।
দিয়াছে অনেক যুক্তি করে কাণাকাণি।।
গর্জ্জিয়া রাবণ রাজা শেলপাট ঝাঁকে।
প্রাণ উড়ে দেবগণে শক্তিশেল দেখে।।
যক্ষ রক্ষ কাঁপে আর গন্ধর্ব্ব কিন্নর।
কাঁপে অষ্টলোকপাল দেব পুরন্দর।।
শমনের ভগ্নী শেল শক্তি নাম ধরে।
যারে মারে শক্তিশেল, সেই জন মরে।।
একজনে মারিলে না মরে অন্য জন।
যারে শেল মারে তার অবশ্য মরণ।।
সূর্য্যের কিরণ যেন শেলপাট যায়।
ভাবিয়া ত রঘুনাথ না পান উপায়।।
চিন্তা করে রঘুনাথ ভায়ের কুশল।
শেলেরে করেন স্তুতি চক্ষে পড়ে জল।।
দেবমূর্ত্তি শেল তুমি দেব-অধিষ্ঠান।
এবার লক্ষ্মণে তুমি দেহ প্রাণদান।।
ফিরে যাও শেলপাট রাবণের হাতে।
ভাই দান মাগি আমি তোমার সাক্ষাতে।।
আপনি শমন মূর্ত্তিমান শেলমুখে।
লক্ষ্মণে ছাড়িয়া শেল পড় মোর বুকে।।
নিজে মৃত্যু অধিষ্ঠান শেলের উপর।
ডাকিয়া রামেরে তবে করিছে উত্তর।।
আমারে করিছ কেন এতেক স্তবন।
লক্ষ্মণে ছাড়িয়া নাহি মারি অন্য জন।।
থাকি আমি যার কাছে তার আজ্ঞাকারী।
যার কাছে থাকি আমি তার হিত করি।।
শ্রীরামে কাতর দেখে শেল নাহি থাকে।
মহাবেগে পড়ে শেল লক্ষ্মণের বুকে।।
পড়িল লক্ষ্মণ বীর রঘুবংশ-চূড়া।
প্রবেশে সকল শেল বাহিরেতে গোড়া।।
ভূমেতে পতিত বীর না নাড়েন পাশ।
শেল বিন্ধি লক্ষ্মণের ঘন বহে শ্বাস।।
লক্ষ্মণে এড়িয়া সব পলায় বানর।
দেখিয়াত রঘুনাথ হইলা ফাঁফর।।
লক্ষ্মণে রাখিবেন না রাখিবে আপনা।
তিন ঠাঁই শ্রীরামের পড়িল ভাবনা।।
বাহির করিতে শেল টানয়ে বানরে।
আপনি সুগ্রীব টানে শেল নাহি নড়ে।।
সুগ্রীব টানিছে শেল কপিগণ চাহে।
এত টান দেয় শেল বেরবার নহে।।
শরভ কুমুদ নল বীর আদি বীর।
শেল ধরে টানে তবু না হয় বাহির।।
বানরের মধ্যে হনুমানেরে বাখানি।
সে হনু ধরিয়া শেল করে টানাটানি।।
সাহস করিয়া কেহ নাহি মারে টান।
পাছে টানে লক্ষ্মণের বাহিরায় প্রাণ।।
টানিতে বানরগণ না করে সাহস।
যার টানে মরিবেন তারি অপযশ।।
দিলেন ধনুক বাণ সুগ্রীবের হাতে।
শেল ধরে টানিলেন প্রভু রঘুনাথে।।
ব্শ্বিম্ভর মূর্ত্তি ধরি শেলে দিলা টান।
উপাড়িয়া শেলটাট কৈলা খান খান।।
লক্ষ্মণে বেড়িয়া রহে যত কপিগণ।
কোপেতে রাবণ করে বাণ বরিষণ।।
ভঙ্গ দিয়া পলায় বানর যত বীর।
প্রবোধ বচনে রাম করিলেন স্থির।।
লক্ষ্মণে জিনিলা বলে না ভাবিহ মনে।
মারিয়া পাড়িব তোরে আজিকার রণে।।
যার লাগি বান্ধিলাম অলঙ্ঘ্য সাগরে।
যার লাগি এত দুঃখ পেয়েছি অন্তরে।।
যার লাগি তো সবায় দিনু দুঃখভরা।
মারিয়া পাড়িব আজি পরনারী-চোরা।।
পাইলাম যত দুঃখ সীতার হরণে।
মারিয়া ঘুচাব দুঃখ আজিকার রণে।।
পর্ব্বত উপরে বৈসে দেখ সবে সুখে।
মারিব রাবণে আজি কার বাপে রাখে।।
রঘুনাথ-বাক্যে করি সাহসেতে ভর।
লক্ষ্মণেরে রক্ষা করে যতেক বানর।।
ভাই-শোকে যুঝে রাম বিক্রমে অপার।
শ্রীরাম রাবণে যুদ্ধ বাজিল বিস্তর।।
বাছিয়া বাছিয়া রাম প্রহারেন বাণ।
রাক্ষস-কটক কেটে কৈলা খান খান।।
শ্রীরামের বাণে রাজা করে ধড়ফড়।
সহিতে না পারে রাজা উঠে দিল রড়।।
সারথিরে আজ্ঞা দিল রাজা দশানন।
লঙ্কাতে চালাহ রথ ত্বরিত গমন।।
লঙ্কাতে পলায়ে গেল রাজা লঙ্কেশ্বর।
পশ্চাতে বানর ধায়, বলে ধর ধর।।
রঘুনাথ-বাক্য কভু খণ্ডন না যায়।
সেই দিন মারিতেন রাবণ রাজায়।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress