Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : আদিকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 28

রামায়ণ : আদিকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

পক্ষী সম্বোধিয়া রাজা রাখি বাসা ঘরে।
আপনি গেলেন পরে ইন্দ্রের নগরে।।
স্বর্গেতে যাইয়া রাজা দেবের সমাজে।
কোথা ইন্দ্র বলিয়া ডাকেন দেবরাজে।।
তর্জ্জন করেন দশরথ মহারাজ।
রণং দেহি রণং দেহি কোথা সুররাজ।।
দেবেরা বলেন, রাজা ক্রোধ কি কারণ।
তব সঙ্গে বাসব না করিবেন রণ।।
ভূপতি বলেন, মম রাজ্যে নাই বৃষ্টি।
অনাবৃষ্টি হেতু মোর নষ্ট হৈল সৃষ্টি।।
মম রাজ্যে বৃষ্টি নাহি হয় কোন্ কাজে।
অনাবৃষ্টি হেতু যত প্রজাগণ মজে।।
চৌদ্দবর্ষ অনাবৃষ্টি নাহি হয় ধন।
প্রজাগণ দুঃখে মরে করে অপমান।।
সুবৃষ্টি করিয়া সৃষ্টি রাখুন সম্প্রতি।
নতুবা জিনিয়া লব এ অমরাবতী।।
এতেক শুনিয়া যান যত দেবগণ।
ইন্দ্রকে কহেন তাঁরা সব বিবরণ।।
বাসব বলেন, রাজা এল কি কারণে।
মনুষ্য হইয়া নিন্দে শঙ্কা নাহি মনে।।
দেবেরা বলেন ইন্দ্র ত্যজ অহঙ্কার।
রাজার যুদ্ধেতে কারো নাহিক নিস্তার।।
শব্দভেদী বাণ রাজা শব্দমাত্র হানে।
তার সনে যুদ্ধ করে মরিবে আপনে।।
যাবৎ মনেতে রাজা নাহি পায় তাপ।
রাজার সহিত কর মধুর আলাপ।।
দেবতার বাক্য ইন্দ্র নাহি করে আন।
পাদ্য অর্ঘ্য দিয়া তাঁর করেন সম্মান।।
কহিলেন দশরথ করি সম্বোধন।
মম রাজ্যে অনাবৃষ্টি হয় কি কারণ।।
বাসব বলেন রাজা শুন এক চিত্তে।
পড়িল শনির দৃষ্টি রোহিণী নক্ষত্রে।।
ছাড়াইতে পার যদি রোহিণীতে দৃষ্টি।
হইবে তোমার দেশে তবে মহাবৃষ্টি।।
চলিলেন দশরথ ইন্দ্রের বচনে।
রথ চালাইয়া যান শনির সদনে।।
শনি কোথা বলি রাজা ডাকিলেন তায়।
বাহির হইয়া শনি সম্মুখে দাঁড়ায়।।
দৃষ্টিমাত্র শনির ছিড়িল রথ দড়া।
আকাশ হইতে পড়ে তার অষ্ট ঘোড়া।।
ছিঁড়িল রথের দড়া নাহি পায় স্থল।
পাকে পাকে পড়ে রথ করে টলমল।।
চক্রবৎ ফিরে রথ গগন উপরে।
হেন জন নাহি যে রাজারে রক্ষা করে।।
জটায়ু নামেতে পক্ষী উড়ে অন্তরীক্ষে।
আকাশে থাকিয়া পক্ষী রথখান দেখে।।
ভূমিতে পড়িবে রাজা না পাইয়া স্থল।
রাজার হইবে চূর্ণ শরীর সকল।।
হেনকালে করি যদি রাজার উদ্ধার।
ঘুষিতে থাকিবে যশ আমার অপার।।
দশরথ মহারাজ ধর্ম্ম-অধিষ্ঠান।
হেন রাজা ত্যজে প্রাণ মম বিদ্যমান।।
কাতর হইবে রাজা পড়িলে ভূমিতে।
ইহা ভাবি পক্ষিরাজ দুই পাখা পাতে।।
পাখা পাতি রহিল জটায়ু মহাবীর।
হইলেন তাহার উপরে রাজা স্থির।।
স্থির হৈয়া দশরথ রথে যোড়ে ঘোড়া।
ধ্বজা আর পতাকা বান্ধেন যোড়া যোড়া।।
সারথি ঘোড়ার গায় মারিলেক ছাট।
আরবার চলে ঘোড়া আকাশের বাট।।
রাজা বলিলেন, রথ রাখ এইখানে।
রাখিল আমার প্রাণ এই কোন্ জনে।।
রঘু পিতামহ, কিবা সেই অজ পিতা।
এমন বিপদে কেবা আমার রক্ষিতা।।
তুলিলেন পক্ষিরাজে রথের উপরে।
মধুর সম্ভাষে রাজা জিজ্ঞাসেন তারে।।
আছাড় খাইয়া পড়িতাম ভূমিতলে।
করিলা আমারে রক্ষা তুমি হেনকালে।।
কোন্ দেশে থাক তুমি কাহার নন্দন।
পরিচয় দেহ মোরে তুমি কোন্ জন।।
পক্ষিরাজ বলিলেন, আমি পক্ষীজাতি।
মম জ্যেষ্ঠ ভাই পক্ষী ভূপতি সম্পাতি।।
জটায়ু আমার নাম গরুড় নন্দন।
অন্তরীক্ষে ভ্রমি আমি উপর গগন।।
আছাড় খাইয়া পড় দেখিয়া রাজন।
পাখা পাতি রাখিলাম তোমার জীবন।।
দশরথ বলিলেন, তুমি মোর মিত্র।
প্রাণদান দিলা মম কি কব চরিত্র।।
তারপর রথ কাষ্ঠ খসাইয়া আনি।
জ্বালিলেন ঘৃতসহ নৃপতি আগুনি।।
উভয়ে মিত্রতা করে অগ্নি করি সাক্ষী।
হইল রাজার মিত্র সে জটায়ু পক্ষী।।
জটায়ু পক্ষীর কথা শুনে যেই জন।
সর্ব্বত্র তাহারে রাখে দেব নারায়ণ।।
বিদায় করিয়া পক্ষী গেল সেই দেশে।
আদিকাণ্ড গাইল পণ্ডিত কৃত্তিবাসে।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress